এইচএসসি ব্যবসায় উদ্যোগ দশম অধ্যায় নিয়ন্ত্রণ সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর

অধ্যায়-১০: নিয়ন্ত্রণ

গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর

মমমপ্রশ্ন১ ফাইজা গার্মেন্টস এক লক্ষ একক পোশাক তিন মাসের মধ্যে সরবরাহের অর্ডার পায়। প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী মি. ইলিয়াস উক্ত অর্ডার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রতিনিয়ত কারখানার কাজ তদারকি করতে লাগলেন। তিনি কর্মীদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিতে থাকলেন। পরিকল্পনার সাথে বাস্তব কাজের বিচ্যুতি থাকলে সংশোধনের ব্যবস্থা নেন। ফলে নির্ধারিত সময়েই লক্ষ্যার্জন হয়। [ঢা. বো. ১৭]
অ ক. চঊজঞ কী? ১
অ খ. ইঊচ বিশ্লেষণ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ কেন? ২
অ গ. উদ্দীপকের লক্ষ্যমাত্রা মেয়াদ ভিত্তিতে কোন ধরনের পরিকল্পনা? ব্যাখ্যা করো। ৩
অ ঘ. ‘ফাইজা গার্মেন্টসে যথাযথ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে লক্ষ্যার্জন সম্ভব হয়েছে’Ñ উদ্দীপকের আলোকে এর যথার্থতা বিশ্লেষণ করো। ৪
১ নং প্রশ্নের উত্তর ই
মক যে পদ্ধতিতে প্রতিষ্ঠানের কোন কাজ কখন শুরু হবে এবং কখন শেষ হবে তা নির্ধারণ করার পর একটি চার্টের মাধ্যমে কাজগুলোকে সংযুক্ত করা হয়, সেই পদ্ধতিকে চৎড়মৎধস ঊাধষঁধঃরড়হ ধহফ জবারবি ঞবপযহরয়ঁব (চঊজঞ) বলা হয়।
মখ যে বিন্দুতে প্রতিষ্ঠানের মোট আয় ও মোট ব্যয় সমান হয় তাকে ইৎবধশ ঊাবহ চড়রহঃ (ইঊচ) বা ভারসাম্য বিন্দু বলে।
ইঊচ-এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের বিক্রয়ের পরিমাণ কোন পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারলে লোকসান হবে না, তা জানা যায়। এর বাইরেও প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় কী পরিমাণ হলে মুনাফার পরিমাণ কত হবে, সে সম্পর্কে আগাম ধারণা লাভ করা যায়। এর ফলে আদর্শমান নির্ধারণ সহজ হয় এবং প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা কার্যকর হয়। তাই ইঊচ বিশ্লেষণ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ।
মগ উদ্দীপকের লক্ষ্যমাত্রা মেয়াদভিত্তিতে স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনার অন্তর্গত।
এক বছর বা তার চেয়ে কম সময়ের জন্য স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। এ পরিকল্পনা সাধারণত সাপ্তাহিক, মাসিক, ত্রৈমাসিক (তিন মাস) বা এক বছরের জন্য হয়ে থাকে। প্রতিষ্ঠানের বিভাগীয় ও উপবিভাগীয় পর্যায়ে এরূপ পরিকল্পনা করা হয়।
উদ্দীপকে ফাইজা গার্মেন্টস এক লক্ষ একক পোশাক উৎপাদনের অর্ডার পায়। এ পোশাক তাদেরকে তিন মাসের মধ্যে সরবরাহ করতে হবে। অর্থাৎ, পোশাক সরবরাহের জন্য তাদের সময় এক বছরেরও কম; যা স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনার বৈশিষ্ট্যের সাথে সংগতিপূর্ণ। সুতরাং, ফাইজা গার্মেন্টসের লক্ষ্যমাত্রা মেয়াদি ভিত্তিতে স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনা।
মঘ ‘ফাইজা গার্মেন্টসে যথাযথ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে লক্ষ্যার্জন সম্ভব হয়েছে’Ñ উদ্দীপকের আলোকে বক্তব্যটি যৌক্তিক।
নিয়ন্ত্রণ একটি ধারাবাহিক ব্যবস্থাপকীয় প্রক্রিয়া। এখানে পরিকল্পনা অনুযায়ী সম্পাদিত কার্য মূল্যায়ন, আদর্শমানের সাথে তুলনাকরণ, ত্র“টি-বিচ্যুতি নির্ণয় ও সংশোধনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
উদ্দীপকে ফাইজা গার্মেন্টসের প্রাপ্ত অর্ডার যথাসময়ে সরবরাহের জন্য প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী প্রতিনিয়ত কারখানার কাজ তদারকি করেন। ভুল-ত্র“টি হলে কর্মীদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন এবং সংশোধনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেন। এ কাজগুলো ব্যবস্থাপনার নিয়ন্ত্রণের কাজের সাথে সম্পৃক্ত।
নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপকীয় কার্যাবলির সর্বশেষ ধাপ। যা আদর্শমান নির্ধারণ দিয়ে শুরু হয়ে সংশোধনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে শেষ হয়। এটি ব্যবহারের মাধ্যমে একটি প্রতিষ্ঠান সহজেই সফলতা অর্জন করতে পারে। উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানের নির্বাহীও নিয়ন্ত্রণের এ পদক্ষেপগুলো ব্যবহার করে সফল হয়েছেন। তাই বলা যায়, ‘ফাইজা গার্মেন্টসে’ যথাযথ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই লক্ষ্যার্জন সম্ভব হয়েছে।

মমমপ্রশ্ন২ কোমল পানীয় প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ‘পিপাসা’ ২০১৬ সালের জন্য দশ লাখ লিটার উৎপাদন ও বিক্রয় লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে। বছর শেষে দেখা যায়, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে উৎপাদন ষাট হাজার লিটার বেশি হয়েছে কিন্তু বিক্রয় হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে পঞ্চাশ হাজার লিটার কম। ফলে এক লাখ দশ হাজার লিটার অবিক্রীত থেকে যায়। মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ অতিক্রম করায় প্রতিষ্ঠানটি বিপুল ক্ষতির সম্মুখীন হয়। [রা. বো. ১৭]
অ ক. চঊজঞ-এর পূর্ণরূপ কী? ১
অ খ. নিয়ন্ত্রণকে ‘কালান্তিক কাজ’ বলা হয় কেন? ২
অ গ. নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়ার কোন পদক্ষেপটি উপেক্ষিত হওয়ায় বিক্রয় ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম-বেশি হয়েছে? ব্যাখ্যা করো। ৩
অ ঘ. ‘নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়ার পদক্ষেপসমূহ যথাযথভাবে অনুসৃত হলে প্রতিষ্ঠানটি বিপুল ক্ষতির সম্মুখীন হতো নাÑ তুমি কি একমত? যুক্তি দাও। ৪
২ নং প্রশ্নের উত্তর অ
মক চঊজঞ-এর পূর্ণরূপ হলো চৎড়মৎধস ঊাধষঁধঃরড়হ ধহফ জবারবি ঞবপযহরয়ঁব।
মখ কালান্তিক কাজ হলো যে কাজ কোনো নির্দিষ্ট সময় পরপর করা হয়।
নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ সম্পাদিত হচ্ছে কি না, তা দেখা ও প্রয়োজনীয় সংশোধনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এ কাজগুলো দিন, সপ্তাহ, মাস বা বছর শেষে হতে পারে। অর্থাৎ নির্দিষ্ট সময় শেষেই কার্যফল পরিমাপ, তুলনা, বিচ্যুতি নির্ণয় ও সংশোধনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ প্রভৃতি কাজ সম্পাদিত হয়। তাই নিয়ন্ত্রণকে কালান্তিক কাজ বলা হয়।
মগ নিয়ন্ত্রণ প্রকিয়ার আদর্শমান উপেক্ষিত হওয়ায় বিক্রয় ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম-বেশি হয়েছে।
আদর্শমান বলতে একটা কাজ কতটুকু গুণ, মান, পরিমাণ, ব্যয় আয় বা সময়সাপেক্ষ হলে সঠিকভাবে সম্পাদিত হয়েছে বলা হবে তা নির্ণয়কে বোঝায়। আদর্শমান নির্ধারণ এক ধরনের পরিকল্পনা, যা নিয়ন্ত্রণের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।
উদ্দীপকে কোমল পানীয় প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ‘পিপাসা’ ২০১৬ সালের জন্য দশ লাখ লিটার উৎপাদন ও বিক্রয় লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে। কিন্তু বছর শেষে দেখা যায়, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে উৎপাদন ষাট হাজার লিটার বেশি হয়েছে এবং বিক্রয় হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে পঞ্চাশ হাজার লিটার কম। সুতরাং, প্রতিষ্ঠানে সঠিকভাবে আদর্শমান নির্ধারিত না হওয়ায় বিক্রয় ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম-বেশি হয়েছে।
মঘ নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়া যথাযথভাবে অনুসৃত হলে প্রতিষ্ঠানটি বিপুল ক্ষতির সম্মুখীন হতো নাÑএ বিষয়ে আমি একমত।
নিয়ন্ত্রণ এমন একটি ধারাবাহিক ব্যবস্থাপকীয় প্রক্রিয়া, যা পরিকল্পনা অনুযায়ী সম্পাদিত কার্য মূল্যায়ন, আদর্শমানের সাথে তুলনাকরণ, ত্র“টি-বিচ্যুতি নির্ণয় ও সংশোধনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
উদ্দীপকে কোমল পানীয় প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ‘পিপাসা’ ২০১৬ সালের জন্য দশ লাখ লিটার উৎপাদন ও বিক্রয় লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করে। কিন্তু নির্ধারিত সময় শেষে দেখা যায়, এক লাখ দশ হাজার লিটার অবিক্রীত থেকে যায়।
নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়া শুরু হয় আদর্শমান নির্ধারণ দিয়ে এবং শেষ হয় সংশোধনমূলক ব্যবস্থার মাধ্যমে। কোমল পানীয় প্রতিষ্ঠানটি নিয়ন্ত্রণের আদর্শমানের সাথে কার্যফলের তুলনা পর্যন্ত পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করেছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানে কেন বিচ্যুতি হয়েছে তার কারণ নির্ধারণ করেনি। এর প্রয়োজনীয় সংশোধনমূলক ব্যবস্থাও গ্রহণ করেনি। যার কারণে প্রতিষ্ঠানটি বিপুল ক্ষতির সম্মুখীন হয়। তাই বলা যায়, প্রতিষ্ঠানটি যদি নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়ার পদক্ষেপসমূহ যথাযথভাবে অনুসরণ করতো তবে বিপুল ক্ষতির সম্মুখীন হতো না।

মমমপ্রশ্ন৩ জনাব মামুন তার শিল্প প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন বিভাগের মাসিক টার্গেট ১,০০০ একক নির্ধারণ করে প্রতিদিন শ্রমিক-কর্মীদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন। নির্দিষ্ট সময় শেষে দেখা গেল উৎপাদনের পরিমাণ ১০০ একক কম হয়েছে। কাক্সিক্ষত ফল লাভের জন্য তিনি অধীনস্থ শ্রমিকদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি সুপারভাইজারদের অন্য বিভাগে বদলি করেন এবং উক্ত পদে দক্ষ সুপারভাইজারকে পদায়ন করেন। [দি. বো. ১৭]
অ ক. নিয়ন্ত্রণ কী? ১
অ খ. নিয়ন্ত্রণকে কেন পরবর্তী পরিকল্পনার ভিত্তি বলা হয়? ২
অ গ. উদ্দীপকে বর্ণিত জনাব মামুন নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়ার কোন ধাপের সাহায্যে উৎপাদনের মাত্রা কম হওয়ার কারণ চিহ্নিত করেছিলেন? ব্যাখ্যা করো। ৩
অ ঘ. উদ্দীপকে উলি­খিত জনাব মামুনের কাক্সিক্ষত ফল লাভের জন্য গৃহীত ব্যবস্থার যৌক্তিকতা মূল্যায়ন করো। ৪
৩ নং প্রশ্নের উত্তর অ
মক পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানের সকল কার্যক্রম সঠিকভাবে সম্পন্ন হচ্ছে কি না, তা যাচাই করা এবং কোনো প্রকার গরমিল পাওয়া গেলে তা সংশোধন করার উপায়কে নিয়ন্ত্রণ বলে।
মখ নিয়ন্ত্রণ হলো পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ সম্পাদিত হচ্ছে কি না তা দেখা, বিচ্যুতি নির্ণয় এবং প্রয়োজনে সংশোধনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ।
নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান পরিকল্পনার ত্র“টি-বিচ্যুতির কারণ জানতে পারে। এসব ত্র“টি কীভাবে সমাধান করা যায়, তারও উপায় বের করা সম্ভব হয়। ফলে পরবর্তী বছর বা সময়ের পরিকল্পনা পূর্ববর্তী বিষয়সমূহের বিবেচনার আলোকে নির্ধারিত হয়। এভাবে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠানের পরবর্তী পরিকল্পনার ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।
মগ উদ্দীপকের জনাব মামুন নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়ার আদর্শমানের সাথে কার্যফলের তুলনা করে উৎপাদন মাত্রা কম হওয়ার কারণ চিহ্নিত করেছিলেন।
নিয়ন্ত্রণের মুখ্য উদ্দেশ্য হলো প্রতিষ্ঠানের ত্র“টি-বিচ্যুতি নিরূপণ করে প্রয়োজনীয় সংশোধনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা। এ বিচ্যুতি নিরূপণে আদর্শমানকে ভিত্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
উদ্দীপকে জনাব মামুন তার শিল্প প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন বিভাগের মাসিক টার্গেট ১,০০০ একক নির্ধারণ করেন। কিন্তু নির্দিষ্ট সময় শেষে দেখা যায় প্রতিষ্ঠানে উৎপাদন হয়েছে (১০০০ – ১০০) = ৯০০ একক। অর্থাৎ আদর্শমান থেকে উৎপাদনের পরিমাণ ১০০ একক কম হয়েছে। সুতরাং, জনাব মামুন নির্দিষ্ট সময় শেষে আদর্শমানের সাথে কার্যফলের তুলনা করে উৎপাদনের মাত্রা কম হওয়ার কারণ চিহ্নিত করেন।
মঘ উদ্দীপকের জনাব মামুন প্রতিষ্ঠানের কাক্সিক্ষত ফল লাভের জন্য কর্মীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা এবং দক্ষ সুপারভাইজার নিয়োগ দিয়েছেন।
প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মীর কার্যদক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি হাতে-কলমে শিক্ষাদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এটি কর্মী উন্নয়নের একটা আনুষ্ঠানিক উপায়। আর দক্ষতা হলো কম সময় ও ব্যয়ে অধিক উৎপাদনের ক্ষমতা।
উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানে দেখা যায়, নির্দিষ্ট সময় শেষে কাক্সিক্ষত ফল লাভ করতে পারেনি। এতে উৎপাদন ব্যবস্থাপক জনাব মামুন কাক্সিক্ষত ফল লাভের জন্য অধীনস্থ শ্রমিকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। এবং উক্ত পদে দক্ষ সুপারভাইজার নিয়োগ করেন।
প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মীর কার্যদক্ষতার পাশাপাশি মনোবলও বৃদ্ধি পায়। এতে কর্মী তার কাছ সম্পর্কে জানতে পারে এবং তা নৈপুণ্যের সাথে সম্পাদন করে। অপরদিকে একজন দক্ষ সুপারভাইজার কম ব্যয়ে ও সময়ের মধ্যে কর্মীদের কাছ থেকে কাজ আদায় করতে পারে। সুতরাং, উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানের ঘাটতি দূর করার জন্য জনাব মামুন যে পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করেছেন তা যৌক্তিক।

মমমপ্রশ্ন৪ জনাব পাভেল বছরের শুরুতে সারা বছরের সম্ভাব্য বিক্রয়, বিক্রয়মূল্য, এমনকি খরচ কত হতে পারে তা সবার সাথে পরামর্শ করে ঠিক করে নেন। পক্ষান্তরে মি. ইলিয়াস তার প্রতিষ্ঠানে মাঝে মাঝে আয়-ব্যয়ের মূল্যায়ন করে সংশোধনী আনেন। বছর শেষে বাস্তবের সাথে হিসাব পরিকল্পনা মিলান এবং বিক্রয়, মোট মুনাফা ও নিট মুনাফার অনুপাত বিশ্লেষণ করেন। এর ফলে পূর্ব থেকে হিসাব পরিকল্পনা থাকায় নিয়ন্ত্রণ কাজ সহজ হয়। [কু. বো. ১৭]
অ ক. সমচ্ছেদ বিন্দু কী? ১
অ খ. নিয়ন্ত্রণ একটি অবিরাম প্রক্রিয়াÑ ব্যাখ্যা করো। ২
অ গ. জনাব পাভেল প্রতিষ্ঠানে কী ধরনের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছেন? ব্যাখ্যা করো। ৩
অ ঘ. কর্মক্ষেত্রে আর্থিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় জনাব ইলিয়াসের প্রতিষ্ঠানে নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি অধিক ফলদায়কÑ বিশ্লেষণ করো। ৪
৪ নং প্রশ্নের উত্তর অ
মক যে বিন্দুতে প্রতিষ্ঠানের মোট আয় ও মোট ব্যয় সমান হয় তাকে সমচ্ছেদ বিন্দু বলে।
মখ নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়ার একটি বৈশিষ্ট্য হলো নিরবচ্ছিন্নতা (ঈড়হঃরহঁরঃু)।
পরিবর্তনশীল পরিবেশ, পরিস্থিতি, সাংগঠনিক কোনো পরিবর্তন, উদ্দেশ্যে পরিবর্তন প্রভৃতি কারণে বারবার পরিকল্পনার মধ্যে পরিবর্তন আনতে হয়। এর সাথে সাথে নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়ার মধ্যেও পরিবর্তন আনতে হয়। তাই সুষ্ঠু নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার জন্য নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়া অবিরাম ও নিরবচ্ছিন্ন হওয়া আবশ্যক।
মগ উদ্দীপকের জনাব পাভেল তার প্রতিষ্ঠানে নিয়ন্ত্রণের বাজেট কৌশলটি প্রতিষ্ঠা করেন।
পরিকল্পনাকে সংখ্যায় প্রকাশ হলো বাজেট। এটি বর্তমানকালে নিয়ন্ত্রণের অন্যতম একটি কৌশল হিসেবে গণ্য। সরকারি বিভিন্ন মন্ত্রণালয় আর্থিক বছরের বাজেট প্রস্তুত করে এবং তার আলোকে কার্য পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আরোপ করে।
উদ্দীপকে জনাব পাভেল বছরের শুরুতেই সারা বছরের সম্ভাব্য বিক্রয় কত হতে পারে এবং এর বিক্রয়মূল্য কত হবে তা নির্ধারণ করেন। এছাড়াও তিনি প্রতিষ্ঠানের খরচ কত হতে পারে তা সবার সাথে পরামর্শ করে ঠিক করেন। অর্থাৎ, জনাব পাভেল বছরের শুরুতেই তার প্রতিষ্ঠানের বাজেট তৈরি করে ফেলেন। তাই বলা যায, জনাব পাভেল তার প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণের বাজেট কৌশলটি ব্যবহার করেন।
মঘ কর্মক্ষেত্রে আর্থিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় জনাব ইলিয়াস তার প্রতিষ্ঠানে নিয়ন্ত্রণের আর্থিক হিসাব বিবরণী বিশ্লেষণ পদ্ধতিটি ব্যবহার করেন।
আর্থিক হিসাব বিবরণীর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানে নির্দিষ্ট সময় শেষে আয় বিবরণী, নগদ প্রবাহ বিবরণী, উদ্বৃত্তপত্র ইত্যাদি প্রস্তুত করা হয়। নিয়ন্ত্রণের কৌশল হিসেবে এ সকল হিসাব বিবরণীর বিশ্লেষণই হলো আর্থিক হিসাব বিবরণী বিশ্লেষণ। এরূপ বিশ্লেষণ প্রতিষ্ঠানের কাজ নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিবেচিত হয়।
উদ্দীপকে মি. ইলিয়াস মাঝেমধ্যেই তার প্রতিষ্ঠানের আয়-ব্যয় মূল্যায়ন করেন এবং এতে সংশোধনী আনেন। বছর শেষে তিনি বাস্তবের সাথে হিসাব পরিকল্পনা মিলান এবং বিক্রয় মোট মুনাফা ও নিট মুনাফার অনুপাত বিশ্লেষণ করেন।
আর্থিক বিবরণী থেকে প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন আয় ও ব্যয়, খরচ, লাভ-ক্ষতি, মোট মুনাফা, নিট মুনাফা, সম্পত্তি ও দায় ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে জানা যায়। বিগত বছরের আর্থিক বিবরণীর আলোকে বর্তমান বছরের সম্ভাব্য আয়-ব্যয়ের পূর্বানুমানপূর্বক যথাসম্ভব ব্যয় কমিয়ে ও আয় বাড়িয়ে মুনাফা বৃদ্ধির চেষ্টা চালানো হয়। এভাবে মি. ইলিয়াস বিগত বছরের আয় বিবরণীসমূহ বর্তমান বছরের আয়-ব্যয় নিয়ন্ত্রণের কৌশল হিসেবে ব্যবহার করেন। তিনি যেহেতু আর্থিক বিবরণী প্রস্তুত করেন তাই বলা যায়, এর মাধ্যমে তিনি কার্যক্ষেত্রে আর্থিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করতে পারবেন।

মমমপ্রশ্ন৫ জনাব জহির একজন ক্ষুদ্র শিল্পমালিক। বছরের শুরুতেই তিনি সবার সাথে পরামর্শ করে সারা বছরে সম্ভাব্য উৎপাদন ও বিক্রয় কত একক হতে পারে, বিক্রয়মূল্য কত হবে, খরচ কী কী হতে পারে, তার ওপর ভিত্তি করে সম্ভাব্য আয়-ব্যয়ের একটা হিসাব দাঁড় করান। চার মাস পর পর তিনি আয়-ব্যয় হিসাব অনুযায়ী সবকিছু হচ্ছে কি না তা মূল্যায়ন করেন এবং প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনেন। আগে থেকে হিসাব পরিকল্পনা থাকায় কেউ বেশি খরচ করতে পারে না। [চ. বো. ১৭]
অ ক. আদর্শমান কী? ১
অ খ. সমচ্ছেদ বিন্দু বিশ্লেষণ বলতে কী বোঝায়? ২
অ গ. উদ্দীপকের জনাব জহির তার প্রতিষ্ঠানে কোন ধরনের নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা অনুসরণ করেন? ব্যাখ্যা করো। ৩
অ ঘ. জনাব জহির কর্তৃক গৃহীত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার কার্যকারিতা উদ্দীপকের আলোকে মূল্যায়ন করো। ৪
৫ নং প্রশ্নের উত্তর অ
মক আদর্শমান হলো এমন এক মানদণ্ড, যার আলোকে প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি কাজকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
আদর্শমানের একক (ঁহরঃ) সংখ্যা, সময়, আর্থিক মূল্য প্রভৃতি হতে পারে।
মখ যে বিন্দুতে প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় আয় ও মোট ব্যয় সমান হয় তাকে ব্রেক-ইভেন পয়েন্ট কিংবা সমচ্ছেদ বিন্দু বলে।
বিক্রয় পরিমাণ যদি এ বিন্দুর নিচে যায়, তবে ক্ষতি এবং বিন্দুর উপরে গেলে মুনাফা অর্জিত হয়। তাই এ বিন্দুর উপরে বিক্রয়ের পরিমাণ যত বাড়ে প্রতিষ্ঠানের মুনাফার পরিমাণও ততই বাড়ে।
মগ উদ্দীপকের জনাব জহির তার প্রতিষ্ঠানে বাজেটীয় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা অনুসরণ করেন।
বাজেটীয় নিয়ন্ত্রণে পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানের আয়-ব্যয় নিশ্চিত করে কার্যকর নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের সম্পাদিত কার্যকে সংখ্যায় প্রকাশ ও মূল্যায়ন করা হয়।
উদ্দীপকে জনাব জহির বছরের শুরুতেই সবার সাথে পরামর্শ করে সারা বছরে সম্ভাব্য উৎপাদন ও বিক্রয় কত একক হতে পারে, বিক্রয়মূল্য কত হবে, খরচ কী হতে পারে এভাবে সম্ভাব্য আয়-ব্যয়ের একটি হিসাব দাঁড় করান। চার মাস পর আয়-ব্যয় হিসাব অনুযায়ী হচ্ছে কি না তা মূল্যায়ন করে তিনি কার্যক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনেন। এরূপ নিয়ন্ত্রণ কৌশল বাজেটীয় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার স্বরূপ। সুতরাং, জনাব জহির তার প্রতিষ্ঠানে বাজেটীয় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা অনুসরণ করেন।
মঘ উদ্দীপকের জনাব জহির কর্তৃক গৃহীত বাজেটীয় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় প্রাতিষ্ঠানিক উদ্দেশ্য অর্জন সহজ হয়।
প্রতিষ্ঠানের কার্যকর ও সফল নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার ওপরই প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জন নির্ভর করে। বাজেটীয় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জনে সহায়তা করে।
উদ্দীপকে জনাব জহির তার প্রতিষ্ঠানের কার্যকর নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে বাজেটীয় নিয়ন্ত্রণ কৌশল গ্রহণ করেছেন। এতে প্রত্যেক বিভাগের কাজের আদর্শমান ঠিক থাকায় সহজে সমন্বয়সাধন সম্ভব হয়েছে। এছাড়াও আগে থেকে হিসাব পরিকল্পনা থাকায় কেউ বেশি খরচ করতে পারেন না। এতে প্রতিষ্ঠানের মিতব্যয়িতা অর্জনে সুবিধা হয়।
জনাব জহিরের এরূপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় কম খরচে উন্নতমানের পণ্য উৎপাদন সম্ভব হয়, যা কর্মীদের সামর্থ্য ও সময়ের সদ্ব্যবহারের মাধ্যমে মুনাফা অর্জনে সক্ষম হতে পারে। অধিকন্তু কাজের সম্ভাব্য সময় ও ব্যয় পূর্বনির্ধারিত থাকে বলে অপচয় রোধ করা সম্ভব হয়। তাই বলা যায়, বাজেটীয় নিয়ন্ত্রণে পরিকল্পনা অনুযায়ী কার্য সম্পাদিত হচ্ছে কি না তা বিশ্লেষণ করে প্রয়োজনীয় সংশোধনী ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে জহিরের প্রতিষ্ঠান সফলতা অর্জন করতে পারবে।

মমমপ্রশ্ন৬ হাসিন বেকারি লি.-এর কর্তৃপক্ষ তার শ্রমিকদের দৈনিক ৮ ঘণ্টা কর্মসময়ের মধ্যে ৭,০০০ পিস বিস্কুট উৎপাদনের নির্দেশ দেয়। মাস শেষে দেখা যায় ১,৮০,০০০ পিস বিস্কুট উৎপাদন হয়েছে। উক্ত প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক কারণ অনুসন্ধান করে দেখলেন বিদ্যুৎ ব্যবস্থার ঘাটতির কারণে এমনটি হয়েছে। জেনারেটরের ব্যবস্থা করে দেয়ার ফলে পরবর্তী মাস থেকে আশানুরূপ উৎপাদন সম্ভব হয়।
[সি. বো. ১৭]
অ ক. ব্রেক-ইভেন বিন্দু কী? ১
অ খ. আদর্শমান বলতে কী বোঝায়? ২
অ গ. উক্ত প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনের আদর্শমান নির্ণয় করো। ৩
অ ঘ. তুমি কি মনে করো নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়ার পদক্ষেপসমূহ সঠিকভাবে অনুসৃত হওয়ায় কাক্সিক্ষত লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে? উদ্দীপকের আলোকে যুক্তিসহ বিশ্লেষণ করো। ৪
৬ নং প্রশ্নের উত্তর অ
ক যে বিন্দুতে প্রতিষ্ঠানের মোট আয় ও মোট ব্যয় সমান হয় তাকে ব্রেক-ইভেন পয়েন্ট বা সমচ্ছেদ বিন্দু বলে।
খ আদর্শমান (ঝঃধহফধৎফ) হলো এমন এক মানদণ্ড, যার আলোকে প্রকৃত কর্মফল পরিমাপ করা হয়।
প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা আদর্শমানের ওপর ভিত্তি করে কার্যসম্পাদন করেন। নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়ায় আদর্শমানের সাথে প্রকৃত কার্যফলের তুলনা করে বিচ্যুতি (উবারধঃরড়হ) নিরূপণ করা হয়। অতঃপর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে ভুল-ত্রুটি সংশোধন করা হয়। এজন্য নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়ায় আদর্শমান নির্ধারণ করা প্রয়োজন।
গ উদ্দীপকে হাসিন বেকারি লি.-এর বিস্কুট উৎপাদনের আদর্শমান হলো ২,১০,০০০ পিস বিস্কুট উৎপাদন করা।
আদর্শমান বলতে একটি কাজ কতটুকু গুণ, মান, পরিমাণ, ব্যয় আয় বা সময়সাপেক্ষ হলে সঠিকভাবে সম্পাদিত হয়েছে বলা হবে, তা নির্ণয়কে বোঝায়।
উদ্দীপকে হাসিন বেকারি লি.-এর কর্তৃপক্ষ তার শ্রমিকদের দৈনিক ৮ ঘণ্টা কর্মসময়ের মধ্যে ৭,০০০ পিস বিস্কুট উৎপাদনের নির্দেশ দেয়। তাহলে প্রতিদিন ৭০০০ পিস বিস্কুট উৎপাদিত হলে মাসিক অর্থাৎ ৩০ দিনে উৎপাদন হবে (৭,০০০  ৩০) = ২,১০,০০০ পিস বিস্কুট।
সুতরাং, উক্ত প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনের আদর্শমান ২,১০,০০০ একক।
ঘ আমি মনে করি, উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানে নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়ার পদক্ষেপসমূহ সঠিকভাবে অনুসৃত হওয়ায় কাক্সিক্ষত লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে।
প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপসমূহ (যথা: আদর্শমান নির্ধারণ, প্রকৃত কার্যফল পরিমাপ, প্রকৃত কার্যফলের সাথে আদর্শমানের তুলনা, বিচ্যুতি নির্ণয় ও সংশোধনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ প্রভৃতি) যথাযথভাবে পালন করতে হয়।
উদ্দীপকে হাসিন বেকারি লি.-এর কর্তৃপক্ষ তার শ্রমিকদের দৈনিক ৮ ঘণ্টা কর্মসময়ের মধ্যে ৭,০০০ পিস বিস্কুট উৎপাদনের নির্দেশ দেয়। যা নিয়ন্ত্রণের প্রথম পদক্ষেপ আদর্শমান নির্ধারণের সাথে সম্পৃক্ত। মাসশেষে দেখা গেল ১,৮০,০০০ পিস বিস্কুট উৎপাদিত হয়েছে, যা প্রকৃত কার্যফল পরিমাপের সাথে সম্পৃক্ত।
আদর্শমান অনুযায়ী বিস্কুট উৎপাদন না হওয়ায় প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক বিচ্যুতির কারণ বের করলেন। এটি নির্ণয়ের পর সর্বশেষ যে কাজটি করেছেন সেটি সংশোধনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সাথে সম্পৃক্ত। সংশোধনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়ার সর্বশেষ ধাপ। সুতরাং বলা যায়, উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানটি নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপসমূহ যথাযথভাবে অনুসরণ করে প্রতিষ্ঠানের কাক্সিক্ষত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।

মমমপ্রশ্ন৭ জনাব সিয়াম একটি কেবলস কোম্পানির ব্যবস্থাপক। তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৬ মাস মেয়াদি ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ শেষে কাজে যোগদান করেন। পূর্বের গৃহীত যুগোপযোগী পরিকল্পনা অনুযায়ী বিদ্যমান কর্মীদের মধ্যে তিনি দায়িত্ব ও কর্তব্য নির্ধারণ করেন এবং বণ্টন করেন। অন্যদিকে তিনি আধুনিক, উপযুক্ত, মিতব্যয়ী ও বাস্তবসম্মত নিয়ন্ত্রণ কৌশল গ্রহণ করেন এবং শ্রমিকদের মধ্যে ব্যাখ্যা করেন। কিন্তু শ্রমিকরা বিষয়টি ভালোভাবে না নেওয়ায় নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম ব্যাহত হয়। ফলে প্রতিষ্ঠান ক্ষতির সম্মুখীন হয়। [য. বো. ১৭]
অ ক. নিয়ন্ত্রণ কী? ১
অ খ. ব্যবস্থাপনায় নিয়ন্ত্রণ কেন প্রয়োজন? বুঝিয়ে লেখো। ২
অ গ. জনাব সিয়ামের প্রথম কাজটি কোন ধরনের? ব্যাখ্যা করো। ৩
অ ঘ. নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমটি সফল করতে জনাব সিয়াম কী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেন? তা ব্যাখ্যা করো। ৪
৭ নং প্রশ্নের উত্তর অ
ক পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানের সকল কার্যক্রম সঠিকভাবে সম্পন্ন হচ্ছে কি না, তা যাচাই করা এবং কোনো প্রকার গরমিল পাওয়া গেলে তা সংশোধন করার উপায়কে নিয়ন্ত্রণ বলে।
খ নিয়ন্ত্রণ হলো প্রতিষ্ঠানের পূর্বনির্ধারিত আদর্শমানের সাথে প্রকৃত কার্যফলের তুলনা, বিচ্যুতি নির্ণয় এবং সংশোধনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ।
ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়া পরিকল্পনার মাধ্যমে শুরু হয়ে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে শেষ হয়। প্রণীত পরিকল্পনা অনুযায়ী যথাযথ কাজ সম্পাদিত হচ্ছে কি না তা যাচাইয়ের প্রয়োজন পড়ে। কারণ অনেক সময় পরিকল্পনায় ত্র“টি-বিচ্যুতি নির্ণয়, সংশোধনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণও প্রয়োজন হয়। এসব কাজই নিয়ন্ত্রণের আওতাভুক্ত। এজন্যই ব্যবস্থাপনায় নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত প্রয়োজন।
গ উদ্দীপকের জনাব সিয়ামের প্রথম কাজটি হলো সংগঠিতকরণ।
সংগঠিতকরণ বলতে প্রতিষ্ঠানের কার্যাবলি চিহ্নিত করে প্রকৃতি অনুযায়ী বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত করে এক বা একাধিক ব্যক্তি এবং উপায়-উপাদানের মধ্যে ফলপ্রসূ ও সহযোগিতামূলক সম্পর্ক সৃষ্টি করার প্রক্রিয়াকে বোঝায়।
উদ্দীপকের জনাব সিয়াম পূর্বের গৃহীত যুগোপযোগী পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানের কাজগুলো বিভক্ত করেন। অতঃপর বিদ্যমান কর্মীদের মধ্যে তিনি দায়িত্ব ও কর্তব্য নির্ধারণ এবং বণ্টন করেন। দায়িত্ব ও কর্তব্য নির্ধারণ করার পর কর্মীদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক নির্ধারণ করে দেন। এসব কাজ সংগঠিতকরণের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। সুতরাং, জনাব সিয়ামের প্রথম কাজটির ধরন হলো সংগঠিতকরণ।
ঘ উদ্দীপকের নিয়ন্ত্রণ কাজটি সফল করতে জনাব সিয়াম সংশোধনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন।
নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা কার্যকর করার জন্য বিচ্যুতির কারণ নির্ধারণ করে তা সংশোধনের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হয়।
উদ্দীপকের জনাব সিয়াম আধুনিক, উপযুক্ত, মিতব্যয়ী ও বাস্তবসম্মত নিয়ন্ত্রণ কৌশল গ্রহণ করেন এবং শ্রমিকদের মধ্যে ব্যাখ্যা করেন। কিন্তু শ্রমিকগণ বিয়ষটি ভালোভাবে না নেওয়ায় নিয়ন্ত্রণ ব্যাহত হয়। ফলে প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়।
জনাব সিয়াম সমস্যা চিহ্নিত করে সে অনুযায়ী সংশোধনী ব্যবস্থা নিতে পারেন। প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের দ্বারা কার্যসম্পাদনে তিনি কেন ব্যর্থ হচ্ছেন সেই কারণ তিনি চিহ্নিত করতে পারেন। পরবর্তীতে তাদের জন্য কার্যকর হবে এমন ব্যবস্থা নিলে সঠিক সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করতে সক্ষম হবেন। এভাবে প্রতিষ্ঠানের কাজের ত্র“টি-বিচ্যুতি নির্ণয় করে বিভিন্ন ধরনের সংশোধনমূলক ব্যবস্থা বা কৌশল পরিবর্তন করে জনাব সিয়াম নিয়ন্ত্রণ কাজটি সফল করতে পারেন।

মমমপ্রশ্ন৮ জনাব নাবিল বছরের শুরুতেই সবার সাথে পরামর্শ করে সারা বছরের সম্ভাব্য বিক্রয় কত একক হতে পারে, তার বিক্রয়মূল্য কত হবে, খরচ কী কী হতে পারেÑ এভাবে সম্ভাব্য আয়-ব্যয়ের একটা হিসাব দাঁড় করান। ছয় মাস পরে তিনি একবার তার আয় ও ব্যয় হিসাব অনুযায়ী হচ্ছে কি না মূল্যায়ন করে কার্যক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনেন। বছর শেষে তিনি বাস্তবের সাথে হিসাব পরিকল্পনা মিলান। পূর্বে থেকে হিসাব পরিকল্পনা থাকায় নিয়ন্ত্রণের সুবিধা হয়। [ব. বো. ১৭]
অ ক. সমচ্ছেদ বিন্দু কী? ১
অ খ. অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা বলতে কী বোঝায়? ২
অ গ. জনাব নাবিল বছরের শুরুতে কী ধরনের নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন? তা বর্ণনা করো। ৩
অ ঘ. জনাব নাবিলের নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি কার্যক্ষেত্রে আর্থিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় ভ‚মিকা রেখেছেÑ তুমি কি এ মত সমর্থন করো? যুক্তি দাও। ৪
৮ নং প্রশ্নের উত্তর অ
ক যে বিন্দুতে প্রতিষ্ঠানের মোট আয় ও মোট ব্যয় সমান হয় তাকে সমচ্ছেদ বিন্দু বলে।
খ অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা হলো যখন প্রতিষ্ঠান নিজস্ব উদ্যোগে প্রতিষ্ঠানের হিসাবপত্রাদি নিরীক্ষা, ত্র“টি নির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আরোপ করে।
প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে কর্মীরা অনেক সময় আর্থিক অনিয়ম, দুর্নীতিতে জড়িত পড়েন। এর ফলে প্রতিষ্ঠান আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এজন্য প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ অভ্যন্তরীণ কার্যাবলি স্বচ্ছতার সাথে পরিচালনার জন্য নিরীক্ষা বিভাগ গঠন করে। এ ব্যবস্থাই নিয়ন্ত্রণের অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষার কৌশল।
গ উদ্দীপকের জনাব নাবিল বছরের শুরুতে যে ধরনের নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন তা হলো বাজেট।
পরিকল্পনার সংখ্যাÍক প্রকাশই হলো বাজেট। বাজেটের আলোকে পরিকল্পনা গ্রহণ করলে কাজ সহজেই সম্পাদন করা যায়। এতে সর্বস্তরে জবাবদিহিতা নিশ্চিত হয়।
উদ্দীপকের জনাব নাবিল বছরের শুরুতেই সবার সাথে পরামর্শ করে সারা বছরের সম্ভাব্য বিক্রয় কত একক হতে পারে, তার বিক্রয়মূল্য কত হবে, খুচরা বিক্রি হতে পারে এভাবে সম্ভাব্য আয়-ব্যয়ের হিসাব করেন। এখানে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাগুলো সংখ্যায় প্রকাশ করা হয়েছে, যা বাজেটের বৈশিষ্ট্যের অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং, জনাব নাবিলের বছরের শুরুতে প্রণয়নকৃত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাটি বাজেট।
ঘ উদ্দীপকে জনাব নাবিলের নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি কার্যক্ষেত্রে আর্থিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় ভ‚মিকা রেখেছেÑআমি এটি সমর্থন করি।
নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে প্রতিষ্ঠানের আয় বিবরণী, নগদ প্রবাহ বিবরণী, উদ্বৃত্তপত্র ইত্যাদি প্রস্তুত করা হয়। এরূপ বিবরণীসমূহই হলো আর্থিক হিসাব বিবরণী। নিয়ন্ত্রণ কৌশল হিসেবে এসব হিসাব বিবরণীর বিশ্লেষণকে আর্থিক হিসাব বিবরণী বিশ্লেষণ হিসেবে গণ্য করা হয়।
উদ্দীপকে জনাব নাবিল বছরের শুরুতেই সবার সাথে পরামর্শ করে সারা বছরের সম্ভাব্য বিক্রয় কত একক হতে পারে, তার বিক্রয় মূল্য কত হবে, খরচ কী কী হতে পারেÑ এভাবে সম্ভাব্য আয়-ব্যয়ের একটা হিসাব দাঁড় করান। বছরের শুরুতেই প্রণয়নকৃত এ ব্যবস্থা তার পরবর্তী সময়ের কার্যমূল্যায়নে সহায়তা করবে।
পরবর্তীতে ছয় মাস পরে তিনি একবার তার আয় ও ব্যয় হিসাব অনুযায়ী হচ্ছে কি না মূল্যায়ন করে কার্যক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনেন। বছর শেষে তিনি বাস্তবের সাথে হিসাব পরিকল্পনা মিলান। এতে কার্যে কোনো ত্র“টি-বিচ্যুতি বা হিসাবে গরমিল থাকলে সাথে সাথে সংশোধনের ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়। পূর্ব থেকে হিসাব পরিকল্পনা থাকায় তার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে সুবিধা হয়। তাই বলা যায়, জনাব নাবিলের নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি কার্যক্ষেত্রে আর্থিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় ভ‚মিকা রেখেছেÑএ মত সমর্থনযোগ্য।

মমমপ্রশ্ন৯ ‘স্টার’ কোম্পানি পণ্য উৎপাদন ও বিক্রয় করে। ‘স্টার’ ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রতি একক পণ্য ৩০ টাকা হারে ৪,৫০,০০০ টাকার পণ্য বিক্রয় করে। বিক্রীত পণ্য উৎপাদনের জন্য ৫০,০০০ টাকায় কারখানা বিল্ডিং ভাড়া এবং ১,৬৬,০০০ টাকা কর্মকর্তাদের বেতন প্রদান করা হয়। এ দুটি খরচ উৎপাদনের হ্রাস-বৃদ্ধির সাথে পরিবর্তিত হয় না। পক্ষান্তরে প্রতি একক পণ্য উৎপাদনে ১০ টাকার কাঁচামাল এবং ২ টাকার মজুরি খরচ দরকার হয়। [ঢা. বো. ১৬]
অ ক. নির্দেশনার ঐক্য কী? ১
অ খ. নিয়ন্ত্রণে ব্যতিক্রমের নীতি বলতে কী বোঝায়? ২
অ গ. ‘স্টার’ কোম্পানি কত একক পণ্য উৎপাদন ও বিক্রয় করলে তাদের বিক্রয় আয় এবং মোট ব্যয় সমান হবে তা নির্ণয় করো। ৩
অ ঘ. উদ্দীপকে উলি­খিত দুই ধরনের খরচের মধ্যে পার্থক্য মূল্যায়ন করো। ৪
৯ নং প্রশ্নের উত্তর অ
ক আগের নির্দেশনার সাথে মিল রেখে পরবর্তী নির্দেশনা প্রদানকেই নির্দেশনার ঐক্য নীতি বলে।
খ নিয়ন্ত্রণে অন্যান্য নীতির পাশাপাশি ব্যতিক্রমের নীতিও থাকা আবশ্যক।
কার্যক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নির্বাহী কর্তৃক নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়, এমন ক্ষেত্রগুলোকে চিহ্নিত করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃক বিশেষ কর্মব্যবস্থা গ্রহণ করাকে নিয়ন্ত্রণের ব্যতিক্রম নীতি বলে। সামগ্রিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বড় ধরনের বিচ্যুতির সৃষ্টি হলে সেগুলোকে চিহ্নিত করে সেখানে বিশেষ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
গ উদ্দীপকের স্টার কোম্পানি কত একক পণ্য উৎপাদন ও বিক্রয় করলে তাদের বিক্রয় আয় এবং মোট ব্যয় সমান হবে তা জানতে ব্রেক ইভেন বিন্দু বা সমচ্ছেদ বিন্দু নির্ণয় করতে হবে।
আমরা জানি,
ইঊচ (টহরঃ) = ঋঈ (টহরঃ)ঝঠ(টহরঃ) – ঠঈ (টহরঃ)
এখানে,
ইঊচ = ব্রেক ইভেন বিন্দু
ঋঈ = স্থায়ী খরচ
ঝঠ = বিক্রয়মূল্য
ঠঈ = পরিবর্তনশীল ব্যয়
স্টার কোম্পানির ক্ষেত্রে,
ঋঈ বা স্থায়ী ব্যয় = (৫০,০০০ + ১,৬৬,০০০) = ২,১৬,০০০ টাকা।
ঝঠ বা বিক্রয়মূল্য = ৩০ টাকা
ঠঈ বা পরিবর্তনশীল ব্যয় = (১০ + ২) = ১২ টাকা।
সুতরাং, ইঊচ = ২১৬০০০৩০  ১২ = ১২,০০০ একক।
 স্টার কোম্পানি ১২,০০০ একক পণ্য উৎপাদন ও বিক্রয় করলে বিক্রয় আয় এবং মোট ব্যয় সমান হবে।
ঘ উদ্দীপকের স্টার কোম্পানির ক্ষেত্রে স্থায়ী খরচ ও পরিবর্তনশীল খরচ সংঘটিত হয়েছে।
কোনো কিছু উৎপাদন, সৃষ্টি বা পেতে যে অর্থ বিনিয়োগ করতে হয় তাই খরচ বা ব্যয়। একটি পণ্য উৎপাদনে স্থায়ী ও পরিবর্তনশীল ব্যয় জড়িত।
উদ্দীপকে স্টার কোম্পানির ক্ষেত্রে কারখানার বিল্ডিং ভাড়া এবং কর্মকর্তাদের বেতন একটি স্থায়ী ব্যয়। কারণ এ ব্যয়ের পরিবর্তন হয় না। পণ্য উৎপাদন হোক বা না হোক কোম্পানিকে এ ব্যয় বহন করতেই হবে। প্রতি একক পণ্য উৎপাদনের সাথে এটি জড়িত নয়।
স্টার কোম্পানির ক্ষেত্রে কাঁচামাল এবং মজুরি খরচ হলো পরিবর্তনশীল ব্যয়। কেননা প্রতি একক পণ্য উৎপাদনে এই ব্যয় পরিবর্তিত হয়। কম একক পণ্য উৎপাদন করলে এ ব্যয় কম এবং বেশি উৎপাদন করলে ব্যয় বেশি হয়।
স্থায়ী ব্যয় প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন এককের সাথে জড়িত নয়। এটি কম বা বেশি হয় না। মোট উৎপাদিত একক দিয়ে স্থায়ী ব্যয়কে ভাগ করা হয়। অন্যদিকে প্রতি একক উৎপাদনের সাথে পরিবর্তনশীল ব্যয় পরিবর্তিত হয়। তাই বলা যায়, স্থায়ী ব্যয় অপরিবর্তনশীল কিন্তু পরিবর্তনশীল ব্যয় নিয়মিতই পরিবর্তিত হয়।

মমমপ্রশ্ন১০ ঢণত লিমিটেড ২০১৫ সালে ১,০০,০০০ একক পণ্য উৎপাদন করে। ২০১৬ সালে তারা ১০% উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে। কিন্তু ২০১৬ সালের মার্চ মাস শেষে দেখা যায় প্রতিষ্ঠানটি মাত্র ২৫,০০০ একক পণ্য উৎপাদন করতে পেরেছে। তাই প্রতিষ্ঠানটি তাদের বর্তমান উৎপাদন কার্যক্রম মূল্যায়ন ও প্রয়োজনীয় সংশোধনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের চিন্তাভাবনা করছে। [ঢা. বো. ১৬]
অ ক. বাজেটীয় নিয়ন্ত্রণ কী? ১
অ খ. নিয়ন্ত্রণের আদর্শমান নির্ধারণ বলতে কী বোঝায়? ব্যাখ্যা করো। ২
অ গ. ১০% উৎপাদন বৃদ্ধির পরিকল্পনা কোন ধরনের লক্ষ্য? ব্যাখ্যা করো। ৩
অ ঘ. উদ্দীপকের আলোকে গৃহীত সংশোধনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ এবং লক্ষ্য নির্ধারণের মধ্যকার সম্পর্ক ব্যবস্থাপনার কাজের দৃষ্টিতে মূল্যায়ন করো। ৪
১০ নং প্রশ্নের উত্তর অ
ক বাজেটের সাথে অর্জিত ফলাফলের তুলনা করে ত্র“টি-বিচ্যুতি নির্ণয় এবং সংশোধনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ কার্যসম্পাদন প্রক্রিয়াকে বাজেটীয় নিয়ন্ত্রণ বলা হয়।
খ আদর্শমান নির্ধারণ নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়ার প্রথম পদক্ষেপ।
আদর্শমান সাধারণত পরিকল্পনা তৈরির সময়ই নির্ধারিত হয়ে যায়। আদর্শমান হলো এমন এক মানদণ্ড বা বিন্দু, যার আলোকে প্রকৃত কর্মফল পরিমাপ করা হয়। নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়ায় নির্বাহীকে প্রথমেই প্রতিটি কার্যের ও বিভাগের উদ্দেশ্যের আলোকে সামগ্রিক কার্যাবলির আদর্শমান নির্ধারণ করা হয়।
গ উদ্দীপকের ঢণত লিমিটেডের ১০% উৎপাদন বৃদ্ধির পরিকল্পনা একটি বাজেট।
পরিকল্পনাকে যখন সংখ্যায় প্রকাশ করা হয় তখন সেটি হয় বাজেট। পরিকল্পনা বাজেটে প্রকাশ করলে লক্ষ্যার্জন সহজ হয়।
উদ্দীপকের ঢণত লিমিটেড ২০১৫ সালে ১,০০,০০০ একক পণ্য উৎপাদন করে। ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠানটি ১০% উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে। এখানে ১০% বৃদ্ধি অর্থাৎ ১,০০,০০০ এর ১০% বা ১০,০০০ একক পণ্য বেশি উৎপাদন করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্থাৎ ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠানটি ১,১০,০০০ একক পণ্য উৎপাদন করবে। প্রতিষ্ঠানটি তাদের পরিকল্পনাটিকে সংখ্যায় প্রকাশ করেছে। এভাবে পরিকল্পনাকে সংখ্যায় প্রকাশ করা হলো বাজেট। সুতরাং, ১০,০০০ একক পণ্য বেশি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিঃসন্দেহে বাজেটের অন্তর্গত।
ঘ উদ্দীপকের ঢণত লিমিটেড বাজেটীয় নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সংশোধনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, যেটি লক্ষ্য নির্ধারণের সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত।
বাজেটের আলোকে যে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নেওয়া হয় তাই বাজেটীয় নিয়ন্ত্রণ। বাজেটীয় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠানের বিচ্যুতি হ্রাসে সহায়তা করে।
উদ্দীপকের ঢণত লিমিটেড ২০১৬ সালে ১০% উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে বাজেট প্রণয়ন করে। কিন্তু মার্চ মাস শেষে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি মাত্র ২৫,০০০ একক পণ্য উৎপাদন করতে পেরেছে। কিন্তু এ সময় ১,১০,০০০  ১২  ৩ = ২৭,৫০০ একক পণ্য উৎপাদন হবার কথা। অর্থাৎ লক্ষ্য বা বাজেট অনুযায়ী কাজ হয়নি। এ অবস্থায় নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হয়।
উদ্দীপকে প্রথমে ব্যবস্থাপনার বাজেট পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। এরপর লক্ষ্য অনুযায়ী কাজ হচ্ছে কি না তা যাচাই-বাছাই করে ভুল-ত্র“টি উদঘাটিত করে সংশোধনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এ সংশোধনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে লক্ষ্য বাস্তবায়ন করা সহজ হয়। এ ধরনের লক্ষ্য নির্ধারণ ও সংশোধনমূলক ব্যবস্থার মাধ্যমেই ব্যবস্থাপনা কাজ সম্পাদন হয়। সুতরাং, লক্ষ্য এবং সংশোধনমূলক ব্যবস্থা একটি অপরটির সাথে জড়িত।

মমমপ্রশ্ন১১ কর্ণফুলি এনার্জি প্লাস বাল্ব উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালক মি. ণ প্রতিষ্ঠানের সাপ্তাহিক উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেন ২০০ একক। সপ্তাহ শেষে তিনি কার্যফল পরিমাপ করে দেখেন উৎপাদনের পরিমাণ ১৫০ একক। তিনি লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ার কারণ সম্পর্কে উৎপাদন ব্যবস্থাপককে এক সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেন। [রা. বো. ১৬]
অ ক. নিয়ন্ত্রণের প্রথম পদক্ষেপ কী? ১
অ খ. বাজেটীয় নিয়ন্ত্রণ বলতে কী বোঝায়? ব্যাখ্যা করো। ২
অ গ. উদ্দীপকে বর্ণিত বিচ্যুতির পরিমাণ কত একক? ব্যাখ্যা করো। ৩
অ ঘ. উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানটির আদর্শমান অর্জিত না হওয়ার কারণ শনাক্ত ও বিশ্লেষণ করো। ৪
১১ নং প্রশ্নের উত্তর অ
ক নিয়ন্ত্রণের প্রথম পদক্ষেপ আদর্শমান নির্ধারণ।
খ প্রতিষ্ঠানের পরিকল্পনাকে সংখ্যায় প্রকাশ করাকে বাজেট বলে। এ বাজেটের আলোকে প্রতিষ্ঠানে যে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আরোপ করা হয় তাকে বাজেটীয় নিয়ন্ত্রণ বলে।
বাজেটে আদর্শমান, বিচ্যুতি নির্ণয়, কার্যফল তুলনা, সংশোধনমূলক ব্যবস্থা প্রভৃতি কার্য সম্পাদিত হয়। ফলে প্রতিষ্ঠানের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সহজ হয়। এছাড়া কাজের মধ্যে সমন্বয়ও আসে। এ ব্যবস্থায় সহজে লক্ষ্য অর্জন নিশ্চিত হয়। তাই বাজেটীয় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ।
গ উদ্দীপকে বিচ্যুতির পরিমাণ ৫০ একক।
আদর্শমানের সাথে প্রকৃত কার্যফল তুলনা করে বিচ্যুতির পরিমাণ জানা যায়। এক্ষেত্রে আদর্শমানকে ভিত্তি হিসাবে ধরা হয়। এরূপ তুলনার ক্ষেত্রে সংখ্যাÍক বিচ্যুতি নিরূপণের চেষ্টা করা হয়।
উদ্দীপকে কর্ণফুলি এনার্জি প্লাস বাল্ব উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালক মি. ণ। তিনি প্রতিষ্ঠানের সাপ্তাহিক উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেন ২০০ একক। অর্থাৎ তিনি আদর্শমান নির্ধারণ করেন ২০০ একক। সপ্তাহ শেষে তিনি কার্যফল পরিমাপ করে দেখেন উৎপাদনের পরিমাণ ১৫০ একক। এক্ষেত্রে নিæোক্ত সমীকরণের মাধ্যমে বিচ্যুতি নিরূপণ করা যায়।
কার্যবিচ্যুতি = প্রকৃত কার্যফল  আদর্শমান
= ১৫০ একক  ২০০ একক
তাই বলা যায়, কর্ণফুলী এনার্জি প্লাস বাল্বের নেতিবাচক বিচ্যুতির পরিমাণ ৫০ একক।
ঘ উদ্দীপকে প্রতিষ্ঠানটি আদর্শমান সঠিকভাবে প্রতিষ্ঠা না করায় বা যথাযথ পরিকল্পনার অভাবে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে।
পরিকল্পনা বা আদর্শমান হলো কোনো কাজ পূর্ব থেকে ঠিক করা যথা: কাজ কতটুকু গুণ, মান ও সময়সাপেক্ষ, তা সঠিকভাবে নির্ধারণকে বোঝায়। নিয়ন্ত্রণকে ফল প্রদান করার জন্য আদর্শমান নির্ধারণ করা হয়। প্রতিষ্ঠানে যে বাজেট প্রণয়ন করা হয় তা-ও আয়-ব্যয়ের আদর্শমান হিসেবে গণ্য হয়।
উদ্দীপকে কর্ণফুলি এনার্জি প্লাস বাল্ব উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানটি সাপ্তাহিক উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে ২০০ একক। কিন্তু সপ্তাহ শেষে এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয় ১৫০ একক। এক্ষেত্রে উৎপাদন ব্যবস্থাপক চিন্তিত হন।
এখানে কর্ণফুলি প্রতিষ্ঠানটি সঠিক পরিকল্পনা বা আদর্শমান নির্ধারণ করতে ব্যর্থ হয়। যার ফলে উৎপাদন কম হয়। যদি কর্ণফুলি লি. প্রতিষ্ঠানের জনবল ও কার্যক্ষমতার পরিসর বিবেচনা করে আদর্শমান নির্ধারণ করত, তাহলে প্রতিষ্ঠানটির লক্ষ্য অর্জন হতো। তাই বলা যায়, কর্ণফুলি এনার্জি প্লাস প্রতিষ্ঠানে সঠিক আদর্শমান নির্ধারণের অভাবে উৎপাদন লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়েছে।

Leave a Reply