এইচএসসি ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং তৃতীয় অধ্যায় বাণিজ্যিক ব্যাংক সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর

অধ্যায়-৩: বাণিজ্যিক ব্যাংক

গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর

মমমপ্রশ্ন১ সাজীন ও তাজিন সদ্য এমবিএ পাস করেছেন। দু’জনেরই লক্ষ্য ভালো কোনো ব্যাংকে চাকরি করা। সেই লক্ষ্যে সাজীন খুলনার একটি ব্যাংকে সিনিয়র এক্সিকিউটিভ পদে যোগদান করেন, যেটি শুধু দেশের শিল্পোন্নয়নে কাজ করে। অপরদিকে, তাজিনও একটি নামকরা ব্যাংকে যোগদান করেন। ব্যাংকটি একটি কেন্দ্রীয় অফিস দ্বারা পরিচালিত হয়। ব্যাংকটির মূল কাজ আমানত সংগ্রহ, ব্যবসা-বাণিজ্যে ঋণ দান ও আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে নানারকম সহায়তা করা। [ঢা. বো. ১৭]
অ ক. ব্যাংক কাকে বলে? ১
অ খ. ব্যাংক কীভাবে বিনিময়ের মাধ্যম সৃষ্টি করে? ব্যাখ্যা করো। ২
অ গ. উদ্দীপকে উলি­খিত সাজীনের ব্যাংকটি কোন ধরনের ঋণ প্রদান করে? আলোচনা করো। ৩
অ ঘ. তাজিনের ব্যাংকটি সাজিনের ব্যাংক অপেক্ষা কেন আলাদা প্রকৃতির? বিশ্লেষণ করো। ৪
১ নং প্রশ্নের উত্তর অ
ক ব্যাংক হলো এমন একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান যা আমানত হিসেবে অর্থ সংগ্রহ করে, ঋণ দেয় ও ব্যাংক সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ সম্পাদন করে।
খ ব্যাংক মূলত অর্থ ও অর্থের মূল্যে পরিমাপযোগ্য দলিল দ্বারা বিনিময়ের মাধ্যম সৃষ্টি করে।
চেক, ক্রেডিট কার্ড, ব্যাংক ড্রাফট, পে-অর্ডার ইত্যাদি হলো ব্যাংক সৃষ্ট বিনিময় মাধ্যম। এই সব দলিল ও উপকরণ দ্বারা সহজে অর্থ লেনদেন করা যায়। উপরিউক্ত দলিল ও উপকরণের প্রচলন ঘটিয়ে বাণিজ্যিক ব্যাংক বিনিময়ের মাধ্যম সৃষ্টি করে থাকে।
গ উদ্দীপকের সাজীন যে ব্যাংকে কর্মরত আছেন তা একটি শিল্প ব্যাংক, যা স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি ঋণ প্রদান করে থাকে।
দেশের শিল্প খাতের উন্নয়নের লক্ষ্যে মূলত শিল্প ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়। এই ব্যাংকের মূল কাজ হলো শিল্প উদ্যোক্তাদেরকে প্রয়োজনীয় দীর্ঘমেয়াদি ও স্বল্পমেয়াদি ঋণ প্রদান করা।
উদ্দীপকে সাজীন এমবিএ পাস করে একটি ব্যাংকে সিনিয়র এক্সিটিউটিভ পদে যোগদান করেন। তবে তার ব্যাংকটি শুধু দেশের শিল্প উন্নয়নে কাজ করে। অর্থাৎ সাজীনের ব্যাংকটি বিশেষায়িত ব্যাংকের আওতাভুক্ত শিল্প ব্যাংক। এই ধরনের ব্যাংক শিল্প খাতের উন্নয়নে উদ্যোক্তাদেরকে প্রয়োজনীয় মূলধন হিসেবে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ প্রদান করে। এছাড়াও শিল্প খাতের উন্নয়নে ধারাবাহিক গতিশীলতা ধরে রাখতে ব্যাংকটি স্বল্পমেয়াদেও ঋণ প্রদান করে থাকে।
ঘ উদ্দীপকের ব্যাংকের কার্যভিত্তিক বৈশিষ্ট্যের ভিন্নতায় তাজিন যে ব্যাংকে কর্মরত তা একটি বাণিজ্যিক ব্যাংক। এই ব্যাংকটি সাজীনের ব্যাংকের বৈশিষ্ট্য অপেক্ষা ভিন্ন।
বাণিজ্যিক ব্যাংকের মূল কাজ হলো জনগনের কাছ থেকে অর্থ বিভিন্ন হিসাব (চলতি, সঞ্চয়ী ও স্থায়ী)-এর মাধ্যমে আমানত হিসেবে সংগ্রহ করা। এছাড়াও ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রয়োজনীয় অর্থের যোগানে এই ব্যাংক ঋণদানসহ বৈদেশিক বাণিজ্যেও সহায়ক ভ‚মিকা রাখে।
উদ্দীপকে সাজীন একটি শিল্প ব্যাংকে কর্মরত। উক্ত ব্যাংকের কাজ হলো কেবল শিল্প খাতের উন্নয়ন নিশ্চিত করা। অর্থাৎ সাজীনের ব্যাংকটি কার্যাবলির ভিত্তিতে একটি শিল্প ব্যাংক। অন্যদিকে, তাজিনের ব্যাংকটি একটি কেন্দ্রীয় অফিসের দ্বারা পরিচালিত হয়। উক্ত ব্যাংকটির প্রধান কাজ হলো আমানত সংগ্রহ ও ঋণদান করা। অর্থাৎ ব্যাংকটির কার্যাবলির বৈশিষ্ট্যসমূহ বাণিজ্যিক ব্যাংকের কাজের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।
উদ্দীপকের সাজীন ও তাজিনের ব্যাংক দুটি কেবল কার্যাবলির ভিন্নতার জন্য পৃথক। এক্ষেত্রে সাজীনের ব্যাংকটি দেশের শিল্প খাতকে সমৃদ্ধ করার কাজে নিয়োজিত থাকলেও তাজিনের ব্যাংক জনসাধারণের আর্থিক নিরাপত্তা ও ব্যক্তিগত উন্নয়কে নিশ্চিত করে। উপরিউক্ত আলোচনা সাপেক্ষে বলা যায়, ব্যাংক দুটির মধ্যকার কাজের ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়েছে।
মমমপ্রশ্ন২ মধুমতি ব্যাংক ঢাকার আগারগাঁও শাখার মাধ্যমে দীর্ঘদিন যাবৎ তার ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। আগারগাঁও এর পাশেই ‘রূপায়ণ গার্ডেন সিটি’ নামে একটি নতুন আবাসিক এলাকা গড়ে উঠেছে। সেখানে নতুন স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল এবং শপিং মলও গড়ে উঠেছে। এলাকাবাসীর সুবিধার কথা বিবেচনা করে মধুমতি ব্যাংক ‘রূপায়ণ গার্ডেন সিটি’র পাশেই একটি শাখা স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়।
[রা. বো. ১৭]
অ ক. বাণিজ্যিক ব্যাংকের সংজ্ঞা দাও। ১
অ খ. ‘বাণিজ্যিক ব্যাংক ঋণ আমানত সৃষ্টি করে’Ñ ব্যাখ্যা করো। ২
অ গ. উদ্দীপকে উলি­খিত মধুমতি ব্যাংক সাংগঠনিক কাঠামোর ভিত্তিতে কোন ধরনের ব্যাংক তা আলোচনা করো। ৩
অ ঘ. মধুমতি ব্যাংকের নতুন শাখা স্থাপনের যৌক্তিকতা বিশ্লেষণ করো। ৪
২ নং প্রশ্নের উত্তর অ
ক বাণিজ্যিক ব্যাংক হলো একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান যা জনগণের কাছ থেকে অল্প সুদে আমানত সংগ্রহ করে এবং অপেক্ষাকৃত অধিক সুদে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দেয় ।
খ ঋণগ্রহীতাকে দেয়া অর্থ থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংক ঋণ আমানত সৃষ্টি করে।
ব্যাংক যখন কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে ঋণ মঞ্জুর করে, তখন সরাসরি নগদ অর্থ প্রদান করেনা। ঋণ গ্রহীতাকে ব্যাংকে একটি আমানত হিসাব খুলতে হয়। ব্যাংক উক্ত হিসাবে ঋণের অর্থ প্রদান করে। এই অর্থ ব্যাংকের কাছে ঋণ আমানত হিসেবে বিবেচিত হয়। চেকের মাধ্যমে এই হিসাব থেকে ঋণগ্রহীতা অর্থ উত্তোলন করতে পারেন। এভাবে প্রদত্ত ঋণ থেকে ব্যাংকগুলো আমানত সৃষ্টি করতে পারে।
উদাহরণ : মনে করি, ব্যাংকের তহবিল থেকে রহিমকে ১০,০০০ টাকা ঋণ মঞ্জুর করা হলো। এ টাকা ব্যাংক নগদে প্রদান না করে রহিমের ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর করবে। এখন উক্ত আমানত থেকে বিধিবদ্ধ তারল্য অর্থাৎ পর্যাপ্ত নগদ জমা রেখে, বাকি অর্থ অন্য কোন গ্রাহককে ঋণ হিসাবে প্রদান করা যায়। যদি উক্ত অর্থের ২০% নগদ হিসেবে ব্যাংক তহবিলে জমা রাখতে হয়, তবে বাকি {১০,০০০  (১০,০০০  ২০%)} = ৮,০০০ টাকা নতুন ঋণ হিসেবে দেয়া যেতে পারে।
গ উদ্দীপকে উলি­খিত মধুমতি ব্যাংক সাংগঠনিক কাঠামোর ভিত্তিতে একটি শাখা ব্যাংক।
শাখা ব্যাংক বলতে এমন ব্যাংককে বোঝায় যা অনেকগুলো শাখার মাধ্যমে ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু রাখে। এসব ব্যাংকের কার্যক্রম মূলত একটি প্রধান কার্যালয়ের তত্ত¡াবধানে পরিচালিত হয়ে থাকে।
উদ্দীপকে মধুমতি ব্যাংক ঢাকার আগারগাঁও শাখার মাধ্যমে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে আগারগাঁও এর পাশে নতুন আবাসিক এলাকা “রূপায়ণ গার্ডেন সিটি” গড়ে উঠেছে। এলাকাবাসীর কথা বিবেচনা করে মধুমতি ব্যাংক রূপায়ন গার্ডেন সিটির পাশে নতুন শাখা স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়। মূলত শাখা ব্যাংকই একাধিক শাখার মাধ্যমে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে। মধুমতি ব্যাংক একটি প্রধান কার্যালয়ের তত্ত¡াবধানে এবং একাধিক শাখার মাধ্যমে বাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এসব বিষয় বিবেচনা করে বলা যায়, সাংগঠনিক কাঠামোর ভিত্তিতে মধুমতি ব্যাংক হলো একটি শাখা ব্যাংক।
ঘ উদ্দীপকে মধুমতি ব্যাংকের নতুন শাখা স্থাপনের সিদ্ধান্তটি যৌক্তিক।
শাখা ব্যাংকিং ব্যবস্থায় কেন্দ্রীয় অফিসের অধীনে অনেকগুলো শাখা অফিস ব্যাংকিং কার্যাবলি পরিচালনা করে। এই ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে ব্রিটিশ ব্যাংকিং পদ্ধতিও বলা হয়ে থাকে।
উদ্দীপকে মধুমতি ব্যাংক আগারগাঁও শাখার মাধ্যমে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সম্প্রতি নতুন আবাসিক এলাকা ‘রূপায়ন গার্ডেন সিটি’র পাশেও ব্যাংকটি শাখা স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়।
মধুমতি ব্যাংক নতুন শাখা সৃষ্টির মাধ্যমে নতুন গ্রাহক সৃষ্টি করতে পারবে। কারন, নতুন আবাসিক এলাকার অনেকেই ব্যাংকে হিসাব খুলে আমানত রাখবে এবং ঋণ নিবে। এতে ব্যাংকের আর্থিক মূলধন গঠিত হবে। আবার, অন্যদিকে জনগণও ঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করতে পারবেন। এক্ষেত্রে ব্যাংকও ঋণের বিপরীতে সুদ পাবে, যা ব্যাংকের মুনাফা বৃদ্ধি করবে। তাই বলা যায় যে, মধুমতি ব্যাংকের নতুন শাখা স্থাপনের সিদ্ধান্তটি সঠিক এবং যৌক্তিক হয়েছে।

মমমপ্রশ্ন৩ মি. তালুকদার রূপসা ব্যাংক, রাজশাহী শাখার ব্যবস্থাপক। তিনি ব্যাংকের উন্নয়নের জন্য সদা তৎপর। ব্যাংকের টাকা ঋণ নিয়ে কেউ যদি তা পরিশোধে ব্যর্থ হয়, এ ভয়ে তিনি ঋণ প্রদানে গড়িমসি করেন। ফলে ঋণ গ্রহীতারা ঋণ নিতে নিরুৎসাহিত হন। এতে ব্যাংকের সার্বিক অবস্থা দিন দিন খারাপের দিকে চলে যায়। [দি. বো. ১৭]
অ ক. বিশেষায়িত ব্যাংক কী? ১
অ খ. ব্যাংক হার নীতি বলতে কী বোঝ? ২
অ গ. মি. তালুকদারের ধারণার সাথে তুমি কি একমত? তোমার মতের সপক্ষে যুক্তি দাও। ৩
অ ঘ. ব্যাংকের সার্বিক অবস্থা খারাপের দিকে যাওয়ার কারণ কী? ৪
৩ নং প্রশ্নের উত্তর অ
ক যে সকল ব্যাংক গ্রাহকদের প্রয়োজন ও অর্থনীতির বিশেষ কোনো দিক যেমন কৃষি,শিলপ প্রভৃতি নিয়ে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করে তাকে বিশেষায়িত ব্যাংক বলে।
খ ব্যাংক হারের হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঋণ নিয়ন্ত্রণ করার কৌশলকে ব্যাংক হার নীতি বলে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশের মুদ্রাস্ফীতি প্রতিরোধে ব্যাংক হার বৃদ্ধি করে। অনুরূপভাবে মুদ্রা সংকোচনের প্রয়োজনে ব্যাংক হার হ্রাস করে। ব্যাংক হার বৃদ্ধি পেলে বাজারে ঋণের পরিমাণ হ্রাস পায়। অন্যদিকে এ হার হ্রাস পেলে বাজারে ঋণের পরিমাণ বাড়ে। এভাবেই এ নীতির মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণ নিয়ন্ত্রণ করে দেশের অর্থনীতির ভারসাম্য রক্ষা করে।
গ উদ্দীপকে মি. তালুকদারের ধারণা ব্যাংকের টাকা ঋণ হিসেবে প্রদানে তা ব্যাংকের জন্য সমস্যাগ্রস্ত ঋণের সৃষ্টি করবে। আর এ ধরনের ধারণার সাথে আমি একমত নই।
ঋণদান ও বিনিয়োগ নীতির আওতায় বাণিজ্যিক ব্যাংক বিনিয়োগকৃত অর্থ ফেরত পাওয়ার বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনের পাশাপাশি সর্বোচ্চ মুনাফা অর্জনের প্রয়াস চালায়।
উদ্দীপকে মি. তালুকদার রূপসা ব্যাংক, রাজশাহী শাখার ব্যবস্থাপক। তিনি ব্যাংকের উন্নয়নে সদা তৎপর। তাই প্রদত্ত ঋণের অর্থ ফেরত প্রাপ্তিতে ঝুঁকি থাকায় তিনি ঋণ প্রদানে গড়িমসি করেন। অর্থাৎ তিনি আমানতকৃত অর্থ ঋণদানের মাধ্যমে বিনিয়োগ করতে নিরুৎসাহী। যার ফলে ব্যাংকের সম্ভাব্য মুনাফা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এক্ষেত্রে মি. তালুকদার উপযুক্ত খাতে ঋণ প্রদানে যথাযথ ঋণ বিশ্লেষণ প্রক্রিয়া ব্যবহার করতে পারেন।
সমস্যাগ্রস্ত ঋণ : যে সকল ঋণের অর্থ বা তার সুদ সময়মতো আদায় করা সম্ভব হয় না তাদেরকে সমস্যাগ্রস্ত ঋণ বলা হয়। ব্যাংক কর্তৃক প্রদত্ত এ সমস্ত ঋণ ব্যাংকের ভাষায় সমস্যাগ্রস্ত বা দুর্দশাগ্রস্ত ঋণ হিসেবে পরিচিত।
ঘ উদ্দীপকে উলে­খ্য পরিস্থিতিতে ঋণ প্রদান না করায় ব্যাংকের সম্ভাব্য বিনিয়োগ বাধাগ্রস্থ হচ্ছে, যা ব্যাংকের সার্বিক অবস্থাকে খারাপের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
বাণিজ্যিক ব্যাংক ঋণদান ও বিনিয়োগ নীতি অনুসরণের মাধ্যমে কাক্সিক্ষত মুনাফা অর্জন করে থাকে। যার মাধ্যমে ব্যাংক সংগৃহীত আমানত বিনিয়োগ করে মুনাফা অর্জনের প্রয়াস চালায়।
উদ্দীপকে মি. তালুকদার রূপসা ব্যাংকের, রাজশাহী শাখার ব্যবস্থাপক। ব্যাংকের সার্বিক উন্নয়নে তিনি সদা তৎপর। ব্যাংকের টাকা ঋণ নিয়ে যদি ঋণগ্রহীতা তা পরিশোধ না করেন এ ভয়ে তিনি ঋণ প্রদানে নিরুৎসাহী। যার ফলে ব্যাংকের সার্বিক অবস্থা দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে।
ঋণদানের মাধ্যমে ব্যাংক সংগৃহীত অর্থ বিনিয়োগ করে থাকে। এ বিনিয়োগকৃত অর্থ হতে ব্যাংক মুনাফার সৃষ্টি করে। ব্যাংকের এ ঋণদান প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হলে মুনাফাও অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। যা রূপসা ব্যাংক, রাজশাহী শাখার ক্ষেত্রে লক্ষণীয়।

মমমপ্রশ্ন৪ সুরমা ব্যাংক দেশের একটি স্বনামধন্য বাণিজ্যিক ব্যাংক। দেশে-বিদেশে এই ব্যাংকের অনেক শাখা রয়েছে। দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাথে এর সুসম্পর্ক রয়েছে। গ্রাহকের সাথে সুসম্পর্কের জন্য এর গ্রাহকের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে অন্য ব্যাংকের তুলনায় অনেক বেশি। সুরমা ব্যাংকের এই উন্নতির পিছনে তার ব্যাংকের মূলনীতিগুলো বেশ গুরুত্ব বহন করে। [কু. বো. ১৭]
অ ক. বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রধান উদ্দেশ্য কী? ১
অ খ. বাণিজ্যিক ব্যাংককে অর্থ বাজারের মধ্যমনি বলা হয় কেন? বুঝিয়ে লিখ। ২
অ গ. ব্যাংক ও মক্কেলের মধ্যে কী ধরনের সম্পর্ক বিদ্যমান উদ্দীপকের আলোকে ব্যাখ্যা করো। ৩
অ ঘ. সুরমা ব্যাংকের উন্নতির পিছনে যে নীতিমালা কাজ করছে তা আলোচনা করো। ৪
৪ নং প্রশ্নের উত্তর অ
ক বাণিজ্যিক ব্যাংকের মূল উদ্দেশ্য হলো মুনাফা অর্জন করা।
খ বাণিজ্যিক ব্যাংককে অর্থ বাজারের মধ্যমণি বলা হয়।
অর্থ বাজারে এ ব্যাংক স্বল্পমেয়াদি অর্থায়নের উৎস হিসেবে বিবেচিত হয়। উদাহরণস্বরূপ ঋণগ্রহণ, চেক, বিনিময় বিল এবং প্রত্যয়পত্র ইত্যাদি দলিলের মাধ্যমে যে কেউ স্বল্পমেয়াদি ঋণের চাহিদা পূরণ করতে পারে। এ সকল কাজ সম্পাদনে বাণিজ্যিক ব্যাংক মুখ্য ভ‚মিকা পালন করে থাকে। আর এ কারণেই বাণিজ্যিক ব্যাংককে অর্থ বাজারের মধ্যমণি বলা হয়।
গ ব্যাংক ও মক্কেলের মধ্যে পাওনাদার, দেনাদার, প্রতিনিধি, অছি ও তত্ত¡াবধায়ক ইত্যাদি সম্পর্ক বিদ্যমান।
মক্কেল বলতে ব্যাংক হিসাব পরিচালনাকারী ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গকে বোঝায়। ব্যাংক ব্যবসায়ে সফলতার জন্য ব্যাংক ও মক্কেলের মধ্যে উত্তম সম্পর্ক বজায় রাখা আবশ্যক।
উদ্দীপকে সুরমা ব্যাংক একটি বাণিজ্যিক ব্যাংক। গ্রাহকের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখার জন্য এর গ্রাহক সংখ্যা বেড়েই চলছে। এখানে সুরমা ব্যাংক মক্কেলের সাথে উত্তম সম্পর্ক রাখার উদ্দেশ্যে মক্কেলের সম্পদের তত্ত¡াবধায়ক হিসেবে কাজ করে থাকে। আবার ব্যাংকটি মক্কেলের অছি হিসেবেও মূল্যবান অলংকার, দলিলপত্র সংরক্ষণ করে। সাধারণভাবে প্রায় সকল মক্কেলের সাথেই ব্যাংকটির পাওনাদার- দেনাদার সম্পর্ক রয়েছে। আমানতকারীদের সাথেও এ সম্পর্ক বিদ্যমান। অর্থাৎ আমানতকারী পাওনাদার এবং সুরমা ব্যাংক দেনাদার। আবার ঋণগ্রহীতাদের সাথে ব্যাংকের দেনাদার পাওনাদার সম্পর্ক রয়েছে। সুরমা ব্যাংকের সাথে মক্কেলের বিদ্যমান সম্পর্কের মধ্যে উপরোক্ত সম্পর্কগুলোই উলে­খযোগ্য।
ঘ উদ্দীপকে সুরমা ব্যাংকের উন্নতির পিছনে তারল্যের নীতি, সেবার নীতি, সঞ্চয় সংগ্রহের নীতি, আধুনিকায়নের নীতি, সুনামের নীতি ইত্যাদি মূলনীতিগুলো উলে­খযোগ্য।
মূলনীতি বলতে কোন কাজ করার মৌল বা সাধারণ নির্দেশিকাকে বোঝায়। বাণিজ্যিক ব্যাংক কাঙ্খিত সাফল্য অর্জনের জন্যই অনেকগুলো মূলনীতি মেনে চলে।
উদ্দীপকে সুরমা ব্যাংক একটি স্বনামধন্য বাণিজ্যিক ব্যাংক। দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাথে এই ব্যাংকের যথেষ্ট সুসম্পর্ক রয়েছে। আবার গ্রাহকের সাথেও ব্যাংকটির সর্বোত্তম সম্পর্ক বিদ্যমান। সুরমা ব্যাংকের গ্রাহকের সংখ্যা অন্যান্য ব্যাংক থেকে অনেক বেশি। মূলত ব্যাংকের মূলনীতিসমূহ মেনে চলার কারণেই সুরমা ব্যাংক এতটা সফল।
সর্বোচ্চ গ্রাহক সেবার মাধ্যমে ব্যাংকটি সেবার নীতি অনুসরণ করেছে। তারল্যের নীতি সঠিকভাবে মেনে চলার কারণেও বাজারে এর যথেষ্ট সুনাম ছিল। আর এ কারণেই অন্যান্য ব্যাংকের গ্রাহকরাও এই ব্যাংকের প্রতি বেশি আকৃষ্ট হয়েছে। এছাড়া ব্যাংকটি দেশে-বিদেশে অনেক শাখা খুলেছে মূলত সঞ্চয় সংগ্রহের উদ্দেশ্যেই। অর্থাৎ এখানে ব্যাংকটি সঞ্চয় সংগ্রহের মূলনীতি অনুসরণ করেছে। এ সকল মূলনীতি অনুসরণের কারণেই সুরমা ব্যাংকটি সাফল্য অর্জনে সক্ষম হয়েছে।

মমমপ্রশ্ন৫ ‘কর্ণফুলী ব্যাংক লি.’ মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে আমানত গ্রহণ ও ঋণদানের পাশাপাশি একটি বিশেষ শাখার মাধ্যমে প্রত্যয়পত্র ইস্যু, বিনিময় বিল বাট্টাকরণ প্রভৃতি কার্যক্রম সম্পাদন করে থাকে। এছাড়া ব্যাংকটি আমানতকারীদের জমাকৃত অর্থ চাহিবামাত্র ফেরত দেয়ার লক্ষ্যে মোট আমানতের একটি নির্দিষ্ট অংশ সবসময় নগদে সংরক্ষণ করে থাকে। [চ. বো. ১৭]
অ ক. ব্যাংক ড্রাফট কী? ১
অ খ. বাণিজ্যিক ব্যাংক কীভাবে ঋণ আমানত সৃষ্টি করে? ২
অ গ. উদ্দীপকের ‘কর্ণফুলী ব্যাংক লি.’ কার্যাবলির ধরন বিবেচনায় কোন ধরনের ব্যাংক? ব্যাখ্যা করো। ৩
অ ঘ. উদ্দীপকে উলি­খিত ‘কর্ণফুলী ব্যাংক লি.’ কর্তৃক মোট আমানতের একটি নির্দিষ্ট অংশ সবসময় নগদে সংরক্ষণ করার নীতিটি কি গ্রাহকদের আস্থা অর্জনে সক্ষম বলে তুমি মনে করো? তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও। ৪
৫ নং প্রশ্নের উত্তর অ
ক চাহিবামাত্র প্রাপককে অর্থ পরিশোধের জন্য ব্যাংকের এক শাখা কর্তৃক অন্য শাখা বা প্রতিনিধি ব্যাংককে যে লিখিত নির্দেশ দেয়া হয় তাকে ব্যাংক ড্রাফট বলে।
ব্যাংক ড্রাফট : একস্থান হতে অন্যস্থানে নিরাপদে কম খরচে যেকোনো অঙ্কের অর্থ স্থানান্তরের জন্য ব্যাংকের আজ্ঞাপত্র বা ব্যাংক ড্রাফট ব্যবহৃত হয়। ব্যাংকের আজ্ঞাপত্রকে চেক হিসেবে গণ্য করা যায় না। এতে চাহিবামাত্র নির্দেশ থাকে বলে তাকে চাহিবামাত্র দেয় আজ্ঞাপত্রও বলা হয়।
খ যে পদ্ধতি অবলম্বন করে বাণিজ্যিক ব্যাংক সরাসরি নগদে ঋণ না দিয়ে তা ঋণগ্রহীতার আমানত হিসাবে ঋণের অর্থ স্থানান্তর করে উক্ত আমানত থেকে যে নতুন ঋণের সৃষ্টি করে তাকে ঋণ আমানত সৃষ্টি বলে।
ব্যাংক যখন কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে ঋণ প্রদান করে তখন সরাসরি নগদ অর্থ ঋণ হিসেবে প্রদান না করে ঋণ গ্রহীতাকে তার নামে একটি আমানত হিসাব খোলার জন্য বলে এবং তাতে ঋণের অর্থ প্রদান করে। চেকের মাধ্যমে এই হিসাব থেকে ঋণগ্রহীতা অর্থ উত্তোলন করে। এভাবে প্রদত্ত ঋণ থেকে আমানতের সৃষ্টি হয়।
উদাহরণ : মনে করি, ব্যাংকের তহবিল থেকে রহিমকে ১০,০০০ টাকা ঋণ মঞ্জুর করা হলো। এ টাকা ব্যাংক নগদে প্রদান না করে রহিমের ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর করে। এখন উক্ত আমানত থেকে বিধিবদ্ধ তারল্য অর্থাৎ পর্যাপ্ত নগদ জমা রেখে, মনে করি উক্ত অর্থের ২০% নগদ হিসেবে ব্যাংক তহবিলে জমা রেখে বাকি {১০,০০০  (১০,০০০  ২০%)} = ৮,০০০ টাকা অন্য কোন গ্রাহককে ঋণ হিসাবে প্রদান করে। এভাবেই ব্যাংক মঞ্জুরকৃত ঋণ থেকে পুনরায় আমানত সৃষ্টি করে।
গ উদ্দীপকে কার্যাবলির ধরণ বিবেচনায় কর্ণফুলী ব্যাংক লি. হলো একটি বাণিজ্যিক ব্যাংক।
বাণিজ্যিক ব্যাংক বলতে মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে পরিচালিত ব্যাংকেই বোঝায়। এ ধরনের ব্যাংকসমূহ স্বল্পসুদে জনগণের কাছ থেকে আমানত হিসেবে অর্থ সংগ্রহ করে। আবার, অধিক সুদে এ অর্থ অন্যদের ঋণ দেয়।
উদ্দীপকে কর্ণফুলী ব্যাংক লি. মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে আমানত গ্রহণ ও ঋণদান কার্যক্রম পরিচালনা করে। ব্যাংকটি বিশেষ শাখার মাধ্যমে প্রত্যয়পত্র ইস্যু, বিনিময় বিল বাট্টাকরণ প্রভৃতি কার্যক্রম সম্পাদন করে থাকে। এ ধরনের কাজ সম্পাদনের মাধ্যমে ব্যাংকটি সুনাম অর্জন করছে। এখানে কর্ণফুলী ব্যাংক লি. মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে গঠিত ও পরিচালিত হচ্ছে। তাই এটি একটি বাণিজ্যিক ব্যাংক। কেননা, বাণিজ্যিক ব্যাংকই কেবল মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যে আমানত সংগ্রহ ও ঋণ প্রদান করে থাকে। আবার, এ ব্যাংকটির প্রত্যয়পত্র ইস্যু, বিনিময় বিল কার্যক্রমও বাণিজ্যিক ব্যাংকের কার্যাবলির অন্তর্ভুক্ত। ব্যাংকটির এ সকল কার্যক্রম পর্যালোচনা করে বলা যায়, কর্ণফুলী ব্যাংক লি. একটি বাণিজ্যিক ব্যাংক।
ঘ উদ্দীপকে কর্ণফুলী ব্যাংক কর্তৃক মোট আমানতের একটি নির্দিষ্ট অংশ সবসময় নগদে সংরক্ষণ করার নীতিটি অর্থাৎ তারল্যের নীতিটি গ্রাহকের আস্থা অর্জনে সক্ষম।
বাণিজ্যিক ব্যাংকের অন্যতম একটি নীতি হলো তারল্যের নীতি। এ নীতির দ্বারা চাহিবামাত্র গ্রাহকের অর্থ পরিশোধের সামর্থ্যকে বোঝানো হয়।
উদ্দীপকে কর্ণফুলী ব্যাংক লি. একটি বাণিজ্যিক ব্যাংক। ব্যাংকটি আমানতকারীদের জমাকৃত অর্থ চাহিবামাত্র ফেরত দেয়ার লক্ষ্যে মোট আমানতের একটি নির্দিষ্ট অংশ সবসময় নগদে সংরক্ষণ করে থাকে।
কর্ণফুলী ব্যাংক লি. এভাবে আমানতের একটি নির্দিষ্ট অংশ সংরক্ষণ করার মাধ্যমে তারল্যের নীতিটি অনুসরণ করছে। এর ফলে ব্যাংক চাহিবামাত্র গ্রাহকের অর্থ পরিশোধ করতে পারবে। এতে ব্যাংকের প্রতি গ্রাহকের আস্থা ও বিশ্বাস বৃদ্ধি পাবে। আবার, এ নীতি অনুসরণের মাধ্যমে কাম্য পরিমাণ নগদ অর্থ সংরক্ষিত হয়, যা ব্যাংকের বিনিয়োগ ও ঋণদান ক্ষমতা হ্রাস করে না। অর্থাৎ এ নীতি অনুসরণের ফলে ব্যাংকের মুনাফার পরিমাণও কমবে না। এভাবে সর্বোচ্চ মুনাফা ও চাহিবামাত্র গ্রাহকের অর্থ পরিশোধ করার মাধ্যমে ব্যাংকের অধিক গ্রাহক সন্তুষ্টি অর্জন সম্ভব হবে। সুতরাং, এ নীতি অনুসরণের মাধ্যমে গ্রাহকের আস্থা অর্জনে ব্যাংকটি অবশ্যই সফল হবে বলে আমি মনে করি।

মমমপ্রশ্ন৬ ‘গোমতি ব্যাংক লি.’ একটি বাণিজ্যিক ব্যাংক। সম্প্রতি ব্যাংকটি বিভিন্ন কারণে গ্রাহকদের চাহিদা মাফিক যথাসময়ে অর্থ পরিশোধ করতে পারছিল না। ব্যাংকটি আধুনিক ব্যাংকিং কৌশলও সঠিকভাবে প্রয়োগ করতে পারছিল না। প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে ব্যাংকটি ৫০ ভাগ শেয়ার ‘ইছামতি ব্যাংক লি.’ কে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে যাতে ব্যাংকটি আধুনিক ব্যাংকে রূপান্তরিত হতে পারে। [সি. বো. ১৭]
অ ক. ব্যাংকের পূর্বসূরী কারা? ১
অ খ. ব্যাসেল-২ কোন কোন ক্ষেত্রে প্রয়োগ হয়? ২
অ গ. গ্রাহকদের যথাসময়ে অর্থ দিতে না পারায় ‘গোমতি ব্যাংক লি.’ এর ব্যাংকের কোন নীতি লঙ্ঘিত হয়েছে? ৩
অ ঘ. ‘ইছামতি ব্যাংক লি.’ কে শেয়ার হস্তান্তর ‘গোমতি ব্যাংক লি.’ এর জন্য কতটুকু যৌক্তিকÑ মতামত দাও। ৪
৬ নং প্রশ্নের উত্তর অ
ক স্বর্ণকার, মহাজন ও ব্যবসায়ী শ্রেণিকে ব্যাংক ব্যবস্থার পূর্বসরি হিসেবে গণ্য করা হয়।
খ ব্যাংকের ন্যূনতম মূলধন পর্যাপ্ততা নিশ্চিতকরণ, তদারকী পর্যালোচনা ও বাজার শৃঙ্খলা বজায়ে ব্যাসেল-২ প্রয়োগ করা হয়।
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঝুঁকির পরিমাপ ও মূলধন বিভাজনের জন্য সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য বিধি-বিধান তৈরি ও তা উপস্থাপনের লক্ষ্যে ব্যাসেল-২ কমিটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। এটিকে আন্তর্জাতিক স্মারক হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
গ উদ্দীপকে গোমতি ব্যাংক লি. গ্রাহকদের আমানতকৃত অর্থ যথাসময়ে ফেরত দিতে না পরায় ব্যাংকটি তারল্য নীতির লঙ্ঘন করেছে।
চাহিবামাত্র নগদে গ্রাহকের অর্থ পরিশোধ ক্ষমতাই হলো তারল্য। আর গ্রাহকদের চেকের অর্থ চাহিবামাত্র পরিশোধের সামর্থ্য ধরে রাখার জন্য কাম্য পরিমাণ তরল সম্পত্তি সংরক্ষণের কৌশলই বাণিজ্যিক ব্যাংকের ভাষায় তারল্য নীতি।
উদ্দীপকে গোমতি ব্যাংক লি. একটি বাণিজ্যিক ব্যাংক। সম্প্রতি ব্যাংকটি বিভিন্ন কারণে গ্রাহকদের চাহিদা মাফিক যথাসময়ে অর্থ পরিশোধ করতে পারছিল না। বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রকৃতি অনুযায়ী ব্যাংক তার আমানত কর্মীদের চাহিবামাত্র অর্থ পরিশোধ করতে বাধ্য এবং না করতে পারলে ব্যাংকের সুনাম কমে যায়। গোমতি ব্যাংক লি. এই কাজটিই করতে ব্যর্থ হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই কাম্য পরিমাণ তরল সম্পত্তি সংরক্ষণের অভাবে এরূপ ঘটেছে যা সার্বিকভাবেই ব্যাংকটির তারল্য নীতির লঙ্ঘনকে স্পষ্ট করেছে।
ঘ উদ্দীপকে গোমতি ব্যাংক লি. এর পঞ্চাশ ভাগ যা ইছামতি ব্যাংক লি. কে হস্তান্তর অযৌক্তিক।
শেয়ার হস্তান্তরের মাধ্যমে ব্যাংকটি গ্র“প ব্যাংকিং এর আওতাভুক্ত হবে। গ্র“প ব্যাংকিং ব্যবস্থায় কতিপয় ব্যাংক একটি শক্তিশালী ব্যাংকের অধীনে একত্রিত হয়ে পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হয়। এক্ষেত্রে অধীনস্ত ব্যাংকগুলো শক্তিশালী ব্যাংকের প্রদত্ত নীতিমালা অনুসরণ করে।
উদ্দীপকে গোমতি ব্যাংক লি. একটি বাণিজ্যিক ব্যাংক। সম্প্রতি ব্যাংকটি তারল্যের অভাবে গ্রাহকদের চাহিদামাফিক অর্থ পরিশোধে ব্যর্থ হয়েছিল। যার ফলে ব্যাংকটির সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে। তাই প্রতিযোগিতায় টিকতে গোমতি ব্যাংক লি. তার পঞ্চাশ শতাংশ শেয়ার ইছামতি ব্যাংকের নিকট হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
উক্ত পরিস্থিতিতে গোমতি ব্যাংক গ্র“প ব্যাংকিং-এ অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। তবে এ ধরনের ব্যাংকিং ব্যবস্থায় গোমতি ব্যাংকটি ইছামতি ব্যাংকের নীতিমালা অনুসরণে বাধ্য হবে। যার ফলে গোমতি ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা ইছামতি ব্যাংকের নিকট হস্তান্তরিত হবে। অর্থাৎ গোমতি ব্যাংকটি নিজস্ব স্বাধীন অস্তিত্ব হারাবে। সুতরাং শেয়ার হস্তান্তর করা গোমতি ব্যাংকের উচিত হবে না।

মমমপ্রশ্ন৭ জনাব রহমান ‘কনকা লি’-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি তার ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য ‘শাপলা ব্যাংক লি.’-এর কাছে ২০ লক্ষ টাকা ঋণ চাইলে ব্যাংক তা মঞ্জুর করে এবং ‘কনকা লি’-কে ঋণের অর্থ জমার জন্য একটি হিসাব খুলতে বলে। ‘কনকা লি.’ চেকের মাধ্যমে ‘শাপলা ব্যাংক লি.’ থেকে ঋণের অর্থ উত্তোলন করে। অন্যদিকে জনাব মহসিন ‘বলাকা ব্যাংক লি’-এ ১০ লক্ষ টাকা জমা করেন। পরবর্তীতে ‘বলাকা ব্যাংক লি’. জনাব মহসিন এর জমাকৃত টাকা থেকে ২০% জমা রেখে অবশিষ্ট টাকা জনাব সেলিমকে ঋণ হিসাবে প্রদান করে। [য. বো. ১৭]
অ ক. বাণিজ্যিক ব্যাংকের তহবিলের মূল উৎস কোনটি? ১
অ খ. গ্রাহককে জানতে বিশেষ বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত ফরম কোনটি? ব্যাখ্যা করো। ২
অ গ. ‘বলাকা ব্যাংক লি. কত টাকা ঋণ আমানত সৃষ্টি করতে পারবে? ব্যাখ্যা করো। ৩
অ ঘ. ‘শাপলা ব্যাংক লি.’ এবং ‘বলাকা ব্যাংক লি.’ এর ঋণ আমানত সৃষ্টির কৌশলের মধ্যে তুলনামূলক বিশ্লেষণ করো। ৪
৭ নং প্রশ্নের উত্তর অ
ক বাণিজ্যিক ব্যাংকের তহবিলের মূল উৎস হলো আমানতকারীদের জমাকৃত অর্থ।
খ গ্রাহককে জানতে বিশেষ বৈশিষ্ট্যমন্ডিত ফরম হলো কণঈ (কহড়ি ণড়ঁৎ ঈঁংঃড়সবৎ) ফরম।
ব্যাংকে হিসাব খোলার সময় আবেদন ফরমের সাথে আবেদনকারী সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্যসম্বলিত যে ফরম বাধ্যতামূলকভাবে হিসাবগ্রহীতাকে পূরণ করতে হয় তাই মূলত কণঈ (কহড়ি ণড়ঁৎ ঈঁংঃড়সবৎ) ফরম। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এর সত্যতা যাচাই করে এতে স্বাক্ষর করেন। মূলত ভুয়া গ্রাহক চিহ্নিতকরণ ও অবৈধ লেনদেন বন্ধ করার উদ্দেশ্যে ব্যাংক এই ফরম সংরক্ষণ করে।
গ ‘বলাকা ব্যাংক লি’. এর ঋণ আমানত সৃষ্টির পরিমাণ নির্ণয় :

আমরা জানি,
ঋণ আমানতের পরিমাণ = মূল আমানত  ১নগদ রিজার্ভের অনুপাত
এখানে, মূল আমানত = ১০ লক্ষ টাকা
নগদ রিজার্ভের অনুপাত = ২০% বা ০.২০
 ঋণ আমানতের পরিমাণ = ১০  ১০.২০ লক্ষ টাকা
= ৫০ লক্ষ টাকা
অর্থাৎ, ‘বলাকা ব্যাংক লি’. ১০ লক্ষ টাকা আমানত হতে মোট ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ আমানত সৃষ্টি করতে পারবে।
ঘ উদ্দীপকে শাপলা ব্যাংক ঋণের মাধ্যমে আমানত সৃষ্টি করছে এবং বলাকা ব্যাংক আমানত থেকে ঋণ সৃষ্টি করছে।
বাণিজ্যিক ব্যাংক দুইভাবে ঋণ আমানত সৃষ্টি করে থাকে। প্রথমত, গ্রাহকের জমাকৃত আমানত হতে ব্যাংক ঋণ সৃষ্টি করে। দ্বিতীয়ত, মঞ্জুরকৃত ঋণ হতে ব্যাংক ঋণ আমানত সৃষ্টি করে।
উদ্দীপকে শাপলা ব্যাংক মঞ্জুরকৃত ঋণের অর্থ সরাসরি নগদে প্রদান না করে গ্রাহকের হিসাবে জমা করে। অর্থাৎ ঋণের মাধ্যমে ব্যাংকটি আমানত সৃষ্টি করেছে। অপরদিকে বলাকা ব্যাংক তার গ্রাহক জনাব মহসিনের জমাকৃত অর্থ হতে ২০% জমা রেখে বাকি অর্থ জনাব সেলিমকে ঋণ দেয়। অর্থাৎ বলাকা ব্যাংক আমানতের অর্থ হতে ঋণ সৃষ্টি করছে।
ঋণের মাধ্যমে আমানত সৃষ্টি প্রক্রিয়ায় ব্যাংক গ্রাহককে সরাসরি ঋণ দেয় না। এজন্যই শাপলা ব্যাংক কনকা লি. কে ঋণ দেয়ার পূর্বে তাদেরকে একটি হিসাব খুলতে বলে। এ প্রক্রিয়ায় মঞ্জুরকৃত ঋণের অর্থ হতে নতুন করে আমানত সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে এ আমানত হতেই ব্যাংকটি কনকা লি. কে ঋণের অর্থ উত্তোলনের সুযোগ দেয়। অপরদিকে আমানতকৃত অর্থ হতে ঋণ সৃষ্টি প্রক্রিয়ায় ব্যাংক আমানতকারীর গচ্ছিত অর্থ হতে নির্দিষ্ট পরিমাণ তারল্য সংরক্ষণ করে বাকি অর্থ ঋণ দেয়। এখানে বলাকা ব্যাংক জনাব মহসিন এর জমাকৃত আমানত হতে ২০% তারল্য সংরক্ষণ করে বাকি অর্থ জনাব সেলিমকে ঋণ প্রদান করেছে। সুতরাং, শাপলা ব্যাংক এবং বলাকা ব্যাংক দুটি ভিন্ন প্রক্রিয়ায় ঋণ আমানত সৃষ্টি করেছে।

মমমপ্রশ্ন৮ লোটাশ ব্যাংক জনগণের আমানত সংগ্রহের মাধ্যমে ব্যাংকিং কার্যাবলি পরিচালনা করে। ব্যাংকের গ্রাহক আরিফ মাহমুদ শর্তপূরণ সাপেক্ষে ১০ বছরের জন্য ২০ লক্ষ টাকা ঋণের জন্য আবেদন করলে ব্যাংকটি সাথে সাথে অস্বীকৃতি জানায়। এতে আরিফ মাহমুদ ঐ ব্যাংকের হিসাব বন্ধ করে দিয়ে অন্য ব্যাংকে হিসাব খোলার সিদ্ধান্ত নেন। [ব. বো. ১৭]
অ ক. তারল্য কী? ১
অ খ. ঋণ কীভাবে আমানত সৃষ্টি করে? ২
অ গ. উদ্দীপকে উলি­খিত ব্যাংকটি কী ধরনের? ব্যাখ্যা করো। ৩
অ ঘ. লোটাশ ব্যাংকের ঋণ না দেয়ার সিদ্ধান্তটি বিশ্লেষণ করো। ৪
৮ নং প্রশ্নের উত্তর অ
ক গ্রাহকদের জমাকৃত অর্থ চাহিবামাত্র তাকে ফেরত দানের ক্ষমতাকে ব্যাংকের তারল্য বলা হয়।
খ গ্রাহকদের প্রদত্ত ঋণ হতে ব্যাংক নতুন আমানতের সৃষ্টি করে।
ব্যাংক গ্রাহকদের মঞ্জুরকৃত ঋণের অর্থ সরাসরি নগদে প্রদান না করে আমানত হিসাবের মাধ্যমে প্রদান করে। অর্থাৎ ব্যাংক উক্ত হিসাবে ঋণের অর্থ ক্রেডিট করে, যা ঋণগ্রহীতা চেকের মাধ্যমে উত্তোলন করে। আর এভাবেই প্রদত্ত ঋণ ব্যাংকের জন্য নতুন আমানতের সৃষ্টি করে।
গ উদ্দীপকে উলি­খিত ব্যাংকটি হলো বাণিজ্যিক ব্যাংক।
এ ব্যাংক মূলত মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে পরিচালিত হয়। বাণিজ্যিক ব্যাংক স্বল্প সুদে জনগণের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ করে। পরবর্তীতে অধিক সুদে অন্যান্য ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দেয়।
উদ্দীপকে লোটাশ ব্যাংক জনগণের আমানত সংগ্রহের মাধ্যমে ব্যাংকিং কার্যাবলি পরিচালনা করে। অর্থাৎ লোটাশ ব্যাংকটি স্বল্প সুদে জনগণের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ করে। মূলত স্থায়ী, চলতি ও সঞ্চয়ী হিসাবের মাধ্যমেই ব্যাংকটি এ আমানত সংগ্রহ করে থাকে। পরবর্তীতে ব্যাংকটি অধিক সুদে ঋণগ্রহীতাদেরকে আমানতকৃত অর্থ ঋণ হিসেবে প্রদান করে। এ উভয় সুদের পার্থক্যই হলো লোটাশ ব্যাংকের আয়। আর এ আয় দিয়েই ব্যাংকটি তার আর্থিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এ সকল বৈশিষ্ট্য বিবেচনায় বলা যায়, লোটাশ ব্যাংক একটি বাণিজ্যিক ব্যাংক।
আমানত : ব্যাংকের গ্রাহক তার হিসাবে যে পরিমাণ অর্থ ব্যাংকে জমা রাখে তাকেই আমানত বলে।
ঘ লোটাশ ব্যাংকটি স্বল্পমেয়াদি ঋণের ব্যবসায়ী হওয়ায় ব্যাংকটির দীর্ঘমেয়াদে ঋণ না দেয়ার সিদ্ধান্তটি সঠিক ছিল।
স্বল্পমেয়াদি ঋণের ব্যবসায়ী বলতে বাণিজ্যিক ব্যাংক-কেই বোঝায়। বাণিজ্যিক ব্যাংক পরের অর্থ আমানত হিসেবে সংগ্রহ করে। পরবর্তীতে এ অর্থ অন্যদের ঋণ দিয়ে ব্যবসায় পরিচালনা করে। তাই এ ব্যাংককে সবসময় পর্যাপ্ত নগদ অর্থ সংরক্ষণ করতে হয়। কারণ আমানতকারী চাহিবামাত্র উক্ত অর্থ ফেরত দিতে ব্যাংক বাধ্য থাকে।
উদ্দীপকে আরিফ মাহমুদ লোটাশ ব্যাংকে ১০ বছরের জন্য ২০ লক্ষ টাকা ঋণের আবেদন করেন। লোটাশ ব্যাংক আরিফ মাহমুদকে এ ঋণ প্রদানে অস্বীকৃতি জানায়।
উদ্দীপকের লোটাশ ব্যাংক জনগণের অর্থ আমানত নিয়ে ব্যবসায় করছে। তাই ব্যাংকটিকে সবসময় পর্যাপ্ত তারল্য সংরক্ষণ করতে হয়। কেননা, গ্রাহক যেকোনো সময় তার অর্থ ফেরত চাইতে পারে। ব্যাংকটি এভাবে দীর্ঘমেয়াদি এত অধিক পরিমাণ অর্থ ঋণ দিলে তারল্য সংকট দেখা দিতে পারে। এরূপ সংকট যেন সৃষ্টি না হয় সেজন্যই ব্যাংকটি এ ঋণের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে, যা যৌক্তিক সিদ্ধান্ত ছিল।

মমমপ্রশ্ন৯ মি. আকাশ খুলনায় বসবাস করেন। এখানেই ‘ঢ’ ব্যাংকে তার একটি সঞ্চয়ী হিসাব রয়েছে। হঠাৎ করে বাড়িতে তার সন্তান অসুস্থ হয়ে পড়লে টাকা উত্তোলনের প্রয়োজন হয়। কিন্তু তার হিসাবে যথেষ্ট টাকা থাকা সত্তে¡ও ব্যাংক তাৎক্ষণিকভাবে তার উপস্থাপিত চেকের টাকা পরিশোধে অপারগতা জানায়। এজন্য পরবর্তীতে তিনি আর্থিক সামর্থ্য ভালো এমন ব্যাংকে হিসাব খোলার সিদ্ধান্ত নেন। [ঢা. বো. ১৬]
অ ক. ব্যাংক কী? ১
অ খ. ব্যাংক কীভাবে মূলধন গঠনে সহায়তা করে? ২
অ গ. উদ্দীপকের আলোকে ব্যাংক কেন মি. আকাশকে অর্থ পরিশোধে ব্যর্থ হয়? ব্যাখ্যা করো। ৩
অ ঘ. পরবর্তীতে ব্যাংকে হিসাব খোলার জন্য মি. আকাশ ব্যাংকের কোন নীতিকে প্রাধান্য দিবেন? উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও। ৪
৯ নং প্রশ্নের উত্তর
ক ব্যাংক হলো এমন একটি আর্থিক মধ্যস্থ ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান যা আমানত হিসেবে অর্থ সংগ্রহ করে, ঋণ দেয় ও বিভিন্ন ব্যাংক সংক্রান্ত কাজ সম্পাদন করে।
খ ব্যাংক বিভিন্ন হিসাব খুলে জনগণের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সঞ্চয় সংগ্রহের মাধ্যমে মূলধন গঠনে সহায়তা করে।
সাধারণত ব্যাংকের সব কার্যক্রম কেন্দ্রীয় অফিস কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হলেও দেশের বিভিন্ন স্থানে এর শাখা অফিস থাকে। এসব শাখায় বিভিন্ন হিসাব খোলার সুবিধা প্রদান করে ব্যাংক জনগণের বিক্ষিপ্ত অর্থ সংগ্রহ করে। এভাবেই ব্যাংক মূলধন গঠনে সহায়তা করে থাকে।
গ উদ্দীপকে ব্যাংকের পর্যাপ্ত তারল্য না থাকায় ব্যাংক মি. আকাশকে অর্থ পরিশোধে ব্যর্থ হয়।
গ্রাহকের জমাকৃত অর্থ চাহিবামাত্র ফেরত দেয়ার ক্ষমতাকে ব্যাংকের ভাষায় তারল্য বলে।
উদ্দীপকে ‘ঢ’ ব্যাংকে মি. আকাশের একটি সঞ্চয়ী হিসাব রয়েছে। হঠাৎ পারিবারিক প্রয়োজনে তিনি ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের চেষ্টা করেন। কিন্তু যথাযথভাবে চেক উপস্থাপনের পরও ব্যাংক টাকা পরিশোধে অপারগতা জানায়। যদিও তার হিসাবে পর্যাপ্ত অর্থ জমা ছিল। কেবল ব্যাংকের সচ্ছলতার অভাবে এমনটি ঘটেছে। কেননা, কোন ধরনের ত্র“টিবিহীন চেক প্রস্তুত, উপস্থাপন এবং হিসাবে পর্যাপ্ত অর্থ থাকা সত্তেও ব্যাংক তার গ্রাহককে চাহিবামাত্র অর্থ পরিশোধ করতে পারেনি। যেহেতু ‘ঢ’ ব্যাংকে মি. আকাশ কর্তৃক চাহিবামাত্র অর্থ ফেরত দেয়ার ক্ষমতা নেই সেহেতু এটি তারল্যের অভাবের সঙ্গেই সঙ্গতিপূর্ণ। সুতরাং, পর্যাপ্ত তারল্য না থাকার কারণেই ‘ঢ’ ব্যাংক মি. আকাশকে অর্থ পরিশোধে ব্যর্থ হয়।
ঘ পরবর্তীতে হিসাব খোলার জন্য মি. আকাশ ব্যাংকের তারল্য নীতিকে প্রাধান্য দেবেন।
গ্রাহকদের চেকের অর্থ চাহিবামাত্র ফেরত দেয়ার সামর্থ্য ধরে রাখার কৌশলকে তারল্য নীতি বলে।
উদ্দীপকে মি. আকাশের ব্যক্তিগত প্রয়োজনে জরুরি টাকার প্রয়োজন হলেও ‘ঢ’ ব্যাংক থেকে অর্থ উত্তোলন করতে পারেন নি। ব্যাংকের পর্যাপ্ত তারল্য সংরক্ষণ ছিল না বিধায় ঢ ব্যাংক আকাশকে অর্থ পরিশোধে অপারগতা জানায়।
বাণিজ্যিক ব্যাংক হিসেবে যেকোনো ব্যাংকেরই অন্যতম নীতি হলো তারল্য নীতি। এখানে জনাব আকাশের ব্যাংকটি যদি তারল্যের নীতি অনুসরণ করতো তাহলে জনাব আকাশকে অর্থ উত্তোলনে ব্যর্থ হওয়ার সম্ভাবনা ছিল না। টাকা থাকা সত্তে¡ও তিনি পারিবারিক বিপদ মোকাবিলা করতে হিমশিমে পড়েন। তাই পরবর্তীতে তিনি এমন ব্যাংকেই হিসাব খুলবেন যেখানে এ ধরনের পরিস্থিতি আবার সৃষ্টি না হয়। অর্থাৎ, যে ব্যাংক তারল্য নীতি যথাযথভাবে অনুসরণ করে সে ব্যাংকেই তিনি হিসাব খুলবেন।

মমমপ্রশ্ন১০ জনাব রাকিব সাহেব তার ব্যবসায়িক প্রয়োজনে মি. আরিফের নিকট হতে ব্যাংকের একটি ঋণের দলিলের মাধ্যমে কিছু টাকা ধার করেন। এক্ষেত্রে জনাব রাকিবের পক্ষ থেকে ব্যাংক মি. আরিফকে তার প্রদত্ত ঋণের অর্থ ফেরত পাবার নিশ্চয়তা দেয় এবং পরবর্তীতে জনাব রাকিব হঠাৎ করে জাপান চলে যায় এবং দীর্ঘদিন পরে বাংলাদেশে ফিরে আসে। তবে এ ব্যাপারে মি. আরিফ বিন্দুমাত্র বিচলিত হন নি। [ঢা. বো. ১৬]
অ ক. ভাসমান মুদ্রা কী? ১
অ খ. কখন বিনিময় হার নির্ধারিত হয়? ২
অ গ. কোন ঋণ দলিলের মাধ্যমে জনাব রাকিব অর্থ ধার করেছিলেন? ব্যাখ্যা করো। ৩
অ ঘ. মি. আরিফ তার প্রদত্ত ঋণের অর্থ প্রাপ্তিতে কেন বিচলিত হন নি? উদ্দীপকের আলোকে বিশ্লেষণ করো। ৪
১০ নং প্রশ্নের উত্তর
ক যে ধরনের মুদ্রার মান মুদ্রাবাজারের চাহিদা ও যোগানের ভারসাম্য দ্বারা সৃষ্টি হয় তাকে ভাসমান মুদ্রা বলে।
খ দুটি ভিন্ন দেশের লেনদেন নিষ্পত্তির সময় বিনিময় হার নির্ধারণ করা হয়।
সাধারণত এক দেশের সঙ্গে অন্য দেশের লেনদেন বা বিনিময়কে বৈদেশিক বিনিময় বলে। এরূপ বৈদেশিক বিনিময় সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্যই বিনিময় হার নির্ধারণের প্রয়োজন পড়ে। কেননা, ভিন্ন ভিন্ন দেশের মুদ্রার মান ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। তাই সঠিক মান নির্ধারণের জন্য উভয় দেশের লেনদেন নিষ্পত্তিতে এ হার নির্ধারণ করা হয়।
গ উদ্দীপকে ব্যাংক নিশ্চয়তা সনদের মাধ্যমে জনাব রাকিব অর্থ ধার করেছিলেন।
যে পত্রের মাধ্যমে নিশ্চয়তা দেয়া হয় যে, গ্রাহক নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ পরিশোধে অসমর্থ হলে ব্যাংক তা পরিশোধ করবে তাকে ব্যাংকের নিশ্চয়তা সনদ বলে।
উদ্দীপকে রাকিব সাহেব ব্যাংকের কাছে একটি দলিলের মাধ্যমে আরিফের কাছ থেকে কিছু টাকা ধার নেন। এ দলিলের মাধ্যমে ব্যাংক রাকিবের পক্ষে আরিফকে অর্থ প্রাপ্তির নিশ্চয়তা প্রদান করে। এ ধরনের নিশ্চয়তা এ মর্মে করা হয় যে, রাকিব সাহেব অর্থ পরিশোধে অসমর্থ হলে ব্যাংক তা আরিফকে পরিশোধ করবে। অর্থাৎ উদ্দীপকে উলি­খিত দলিলের বৈশিষ্ট্যগুলো ব্যাংকের নিশ্চয়তা সনদের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। সুতরাং রাকিব ব্যাংকের নিশ্চয়তাপত্রের মাধ্যমে ধার করেছিলেন।
ঘ ব্যাংকের নিশ্চয়তা থাকার কারণেই মি. আরিফ প্রদত্ত ঋণের অর্থ প্রাপ্তিতে বিচলিত হননি।
ব্যাংক নিশ্চয়তা সনদের মাধ্যমে ব্যাংক এই মর্মে নিশ্চয়তা প্রদান করে যে, উক্ত ব্যাংকের গ্রাহক কোনো কারণে ধারকৃত অর্থ পরিশোধে ব্যর্থ হলে ব্যাংক তা পরিশোধ করবে।
উদ্দীপকে জনাব রাকিব ব্যাংকের নিশ্চয়তাপত্রের মাধ্যমে জনাব আরিফের কাছ থেকে কিছু টাকা ধার করেন। জনাব রাকিব হঠাৎ জাপান চলে যান এবং দীর্ঘদিন পর দেশে ফিরলেও মি. আরিফ বিচলিত হননি ব্যাংকের নিশ্চয়তা সনদের কারণে।
ব্যাংকের নিশ্চয়তাপত্রের মাধ্যমে ব্যাংক রাকিবের পক্ষে মি. আরিফকে অর্থ পরিশোধের নিশ্চয়তা প্রদান করে। অর্থাৎ জনাব রাকিব কখনো দেশে না ফিরলেও মি. আরিফের ঋণের অর্থ প্রাপ্তিতে কোনো সমস্যা সৃষ্টি হতো না। কেননা, ব্যাংক মি. আরিফককে এ অর্থ পরিশোধ করতে বাধ্য। সুতরাং ব্যাংকের নিশ্চয়তাপত্র থাকার কারণেই মি. আরিফ বিচলিত হননি।

Share to help others:

Leave a Reply