নবম-দশম ইসলাম দ্বিতীয় অধ্যায় শরিয়তের উৎস

দ্বিতীয় অধ্যায় শরিয়তের উৎস
অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সংক্ষেপে জেনে রাখি

 শরিয়ত : শরিয়ত আরবি শব্দ। এর অর্থ পথ, রাস্তা। এটি জীবনপদ্ধতি, আইন-কানুন, বিধিবিধান অর্থেও ব্যবহৃত হয়। ব্যাপক অর্থে শরিয়ত হলো এমন সুদৃঢ় ও সুস্পষ্ট পথ, যা অনুসরণ করলে মানুষ সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে নিজ গন্তব্যে পৌঁছতে পারে। ইসলামি পরিভাষায় ইসলামি কার্যনীতি বা জীবনপদ্ধতিকে শরিয়ত বলা হয়।
 আল-কুরআন : শরিয়তের সর্বপ্রথম ও সর্বপ্রধান উৎস হলো আল-কুরআন। ইসলামি শরিয়তের সকল বিধিবিধানের মূল উৎসই আল-কুরআন। এর ওপরই ইসলামি শরিয়তের ভিত্তি ও কাঠামো প্রতিষ্ঠিত। আল-কুরআন শরিয়তের অকাট্য ও প্রামাণ্য দলিল।
 মক্কি ও মাদানি সূরা : আল-কুরআন সর্বমোট ৩০টি অংশে বিভক্ত। এ অংশগুলোকে পারা বলা হয়। কুরআন মজিদে রয়েছে ১১৪টি সূরা এবং ৬২৩৬টি মতান্তরে ৬৬৬৬টি আয়াত। অবতরণের সময় বিবেচনায় কুরআন মজিদের সূরাসমূহ ২ ভাগে বিভক্ত। যথা : মক্কি ও মাদানি। সাধারণভাবে বলা যায়, পবিত্র মক্কা নগরীতে আল-কুরআনের যেসব সূরা নাজিল হয়েছে সেগুলো মক্কি সূরা। আর মদিনাতে নাজিল হওয়া সূরাগুলো মাদানি সূরা।
 তিলাওয়াতের গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য : তিলাওয়াত শব্দের অর্থ পাঠ করা, আবৃত্তি করা, পড়া, অনুসরণ করা ইত্যাদি। আল-কুরআন পাঠ করাকে ইসলামি পরিভাষায় কুরআন তিলাওয়াত বলা হয়। হালকাভাবে আল-কুরআন পাঠ করলে চলবে না বরং একে খুবই গুরুত্বের সাথে তিলাওয়াত করতে হবে। এর মর্মার্থ ও তাৎপর্য উপলব্ধি করতে হবে।
 সূরা আশ-শামস : সূরা আশ-শামস মক্কি সূরার অন্তর্গত। এর আয়াত সংখ্যা ১৫টি। এ সূরার প্রথম শব্দ শামস থেকে এর নামকরণ করা হয়েছে আশ-শামস। এটি আল-কুরআনের ৯১তম সূরা।
 সূরা আদ-দুহা : সূরা আদ-দুহা আল-কুরআনের ৯৩তম সূরা। এর আয়াত সংখ্যা ১১, এটি পবিত্র মক্কা নগরীতে নাজিল হয়। সূরাটির প্রথম শব্দ দুহা থেকে এ সূরার নামকরণ করা হয়েছে আদ-দুহা।
 সূরা আল-ইনশিরাহ : সূরা আল-ইনশিরাহ মক্কি সূরাসমূহের অন্যতম। এর আয়াত সংখ্যা মোট ৮। এটি আল-কুরআনের ৯৪তম সূরা। সূরার প্রথম আয়াতে নাশরাহ শব্দের ক্রিয়ামূল বিবেচনায় এ সূরার নাম রাখা হয়েছে আল-ইনশিরাহ।
 সূরা আত-তীন : সূরা আত-তীন আল-কুরআনের ৯৫তম সূরা। এটি মক্কায় অবতীর্ণ এবং আয়াত সংখ্যা ৮। সুরার প্রথম শব্দ তীন থেকে এর নাম আত-তীন হয়েছে।
 শরিয়তের তৃতীয় উৎস আল-ইজমা : শরিয়তের তৃতীয় উৎস হলো ইজমা। ইজমা আরবি শব্দ। এর আভিধানিক অর্থ- একমত হওয়া, ঐক্যবদ্ধ হওয়া, মতৈক্য প্রতিষ্ঠা করা ইত্যাদি। ব্যবহারিক অর্থে কোনো বিষয় বা কথায় ঐকমত্য পোষণ করাকে ইজমা বলে। ইসলামি পরিভাষায়, শরিয়তের কোনো বিষয়ে একই যুগের মুসলিম উম্মতের পুণ্যবান মুজতাহিদগণের (গবেষক) ঐকমত্য পোষণ করাকে ইজমা বলা হয়।
 শরিয়তের চতুর্থ উৎস আল-কিয়াস : শরিয়তের চতুর্থ উৎস হলো কিয়াস। কিয়াস শব্দের অর্থ অনুমান করা, তুলনা করা, পরিমাপ করা ইত্যাদি। ইসলামি পরিভাষায় কুরআন ও সুন্নাহর আইন বা নীতির সাদৃশ্যের ভিত্তিতে বিচার-বুদ্ধি প্রয়োগ করে পরবর্তীতে উদ্ভূত সমস্যার সমাধানকে কিয়াস বলে। অন্য কথায়, কুরআন, সুন্নাহ ও ইজমাতে যে সমস্যার সমাধান পাওয়া যায় না ইসলামি মূলনীতি অনুযায়ী বিচার-বুদ্ধি প্রয়োগ করে সে সমস্যার সমাধান করাই হলো কিয়াস।
 শরিয়তের আহকাম সংক্রান্ত পরিভাষা : শরিয়ত হলো ইসলামি বিধিবিধানের সমন্বিত রূপ। পরিভাষায় শরিয়ত বলতে এমন সুদৃঢ় সোজাপথকে বুঝায় যার দ্বারা তার অবলম্বনকারী ব্যক্তি হিদায়াত ও সামঞ্জস্যপূর্ণ কর্মপন্থা লাভ করতে পারেন। আর আহকাম হলো বিধানাবলি। ইসলামি শরিয়তের আহকাম বা বিধানাবলি সংক্রান্ত পরিভাষাগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নত, মুস্তাহাব
 , মুবাহ, হালাল-হারাম ইত্যাদি।

অনুশীলনীর প্রশ্ন ও উত্তর

 বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর 
১. لَا تَـقْـهَـرْ (লা-তাক্হার) অর্থ কী?
ক ধমক দেবেন না খ নিষেধ করবেন না
গ আশ্রয় দেবেন না  কঠোর হবেন না
২. ওহি লেখক সাহাবিদের সংখ্যা কত ছিল?
ক ২৮  ৪২ গ ৪৭ ঘ ৮৬
৩. মক্কি সূরার বৈশিষ্ট্যে বর্ণনা করা হয়েছেÑ
র. শিরক-কুফরের পরিচয়
রর. মুনাফিকদের ষড়যন্ত্রের কথা
ররর. শরিয়তের সাধারণ নীতিমালা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর  র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড় এবং ৪Ñ৬ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও :
আলম সাহেব গ্রামের একজন গণ্যমান্য ব্যক্তি। তিনি তাঁর ছোট ভাইয়ের মৃত্যুর পর তার সকল সম্পদ দখল করে ছোট ভাইয়ের সন্তানদের বাড়ি থেকে বের করে দেন।
৪. আলম সাহেবের কাজের মাধ্যমে কাদের অধিকার ক্ষুণœ হয়েছে?
ক গরিবদের খ অসহায়দের
 ইয়াতিমদের ঘ বঞ্চিতদের
৫. আলম সাহেবের কাজের মাধ্যমে শরিয়তের কোন উৎসের বিধান লঙ্ঘিত হয়েছে?
 কুরআন খ হাদিস গ ইজমা ঘ কিয়াস
৬. আলম সাহেবের কাজের জন্য তাকে কী বলা যায়?
ক ফাসিক খ কাফির  মুনাফিক ঘ যালিম

 সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন- ১  সূরা আল-ইনশিরাহ ও সূরা আল-মাউন

সাজিব ও সাজিদ ঘনিষ্ঠ বন্ধু। সাজিব প্রায়ই ফজরের সালাত সূর্যোদয়ের পর এবং আসরের সালাত সূর্যাস্তের সময় আদায় করে। সাজিদ এলাকার যুবকদের সত্য কথা বলা ও নিয়মিত সালাত আদায় করার জন্য আহŸান জানালে কতিপয় যুবক তার কথা শুনে কটুক্তি করে। যুবকদের অত্যাচার অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছলে সে শিক্ষকের শরণাপন্ন হয়, শিক্ষক কুরআনের নিম্নোক্ত আয়াতটি পড়ে শোনান

ক. ‘ফারগব’ শব্দের অর্থ কী?
খ. ‘আমি মানুষকে সুন্দরতম আকৃতিতে সৃষ্টি করেছি’Ñ বুঝিয়ে লেখ।
গ. সাজিবের কাজের মাধ্যমে কাদের বিশেষ বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. সাজিদের কার্যক্রম সূরা আল-ইনশিরাহ এর আলোকে বিশ্লেষণ কর।

ক ‘ফারগব’ ( ) শব্দের অর্থÑ অনন্তর মনোনিবেশ করুন।
খ ‘আমি মানুষকে সুন্দরতম আকৃতিতে সৃষ্টি করেছি।’Ñ এটি পবিত্র কুরআনের সূরা আত-তীনের ৪নং আয়াত। মানুষ আল্লাহর সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ ও সুন্দরতম সৃষ্টি আশরাফুল মাখলুকাত । মানুষকে সুন্দর আকৃতি ও চমৎকার গঠনে সৃষ্টি করে আল্লাহ অন্যান্য মাখলুকাত থেকে মানুষকে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। অত্র আয়াতে এটাই বোঝানো হয়েছে।
গ সাজিবের কাজের মাধ্যমে মুনাফিকদের বিশেষ বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনের সূরা আল-মাউনে বলেন, ‘দুর্ভোগ সেই সালাত আদায়কারীদের যারা তাদের সালাত সম্পর্কে উদাসীন। যারা লোক দেখানোর জন্য তা করে। প্রকৃতপক্ষে মুনাফিকরা লোক দেখানোর জন্যই সালাত আদায় করে। সালাত সম্পর্কে তারা উদাসীন। যেমনটি আমরা দেখি উদ্দীপকের সাজিবের চরিত্রে। সে প্রায়ই ফজরের সালাত সূর্যোদয়ের পর এবং আসরের সালাত সূর্যাস্তের সময় আদায় করে। সাজিবের এ ধরনের কর্মকাণ্ডে মুনাফিকদের বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে। কারণ মুনাফিকদের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো তারা ঠিকমতো সালাত আদায় করে না। বরং তারা সালাত সম্পর্কে উদাসীন। শুধু মুসলমানদের দেখানোর জন্যই তারা সালাত আদায় করে। সালাতের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে তারা কোনো খবর রাখে না। অথচ সালাতে অবহেলার জন্য দুনিয়া ও আখিরাতে তাদের জন্য রয়েছে মহাধ্বংস।
ঘ পবিত্র কুরআনের সূরা আল-ইনশিরাহর আলোকে উদ্দীপকের সাজিদের কার্যক্রম বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
সাজিদ একজন ইমানদার ব্যক্তি। সে এলাকার যুবকদের সত্য কথা বলা ও নিয়মিত সালাত আদায় করার আহŸান জানালে কতিপয় যুবক তার কথা শুনে কটূক্তি করে। যুবকদের অসহনীয় অত্যাচারে সাজিদ ব্যথিত হয়। পবিত্র কুরআনের সূরা আল-ইনশিরাহ পাঠ করলে আমরা এ ঘটনার প্রতিচ্ছবি দেখতে পাই। নবুয়ত লাভের পর রাসুলুল­াহ (স) আরবদের মাঝে ইসলাম প্রচার শুরু করলে মক্কার কাফিররা তাঁর বিরোধিতা শুরু করে। তারা নানাভাবে তাঁকে বাধা দিতে চেষ্টা করে। তারা তাঁকে ঠাট্টা-বিদ্রæপ ও উপহাস করতে থাকে। তাঁকে কবি, গনক, যাদুকর, পাগল ইত্যাদি বলে কষ্ট দিতে থাকে। তারা মহানবি (স) ও সাহাবিদের উপর অত্যাচার-নির্যাতন করতে থাকে। আল­াহ তায়ালা এ সময় সূরা আল-ইনশিরাহ অবতীর্ণ করে মহানবি (স)-কে সান্ত¡না প্রদান করে বলেন, ‘নিশ্চয়ই কষ্টের সাথে স্বস্তি রয়েছে।’ তাই বলা যায়, মহানবি (স)-এর দাওয়াতি কাজের সাথে সাজিদের কার্যক্রম সামঞ্জস্যপূর্ণ।
প্রশ্ন- ২  বৃক্ষরোপণ সংক্রান্ত এবং ব্যবসায় সততা সম্পর্কিত হাদিস

নাসির ও জাবির সাহেব দুই বন্ধু। নাসির সাহেব তার বাড়ির চারপাশে অনেক ফলের গাছ লাগিয়েছেন। মানুষেরা সেই গাছের ছায়ায় বসে আরাম করে এবং পাখিরা ফল খায়। নাসির সাহেব প্রতিবেশীদেরও ফল দেন। আর জাবির সাহেবের দোকানে ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রয় হয়। কোনো ভেজাল নেই। তাই অনেক মানুষ রমযান মাসে তার দোকানে বাজার করে।
ক. শরিয়তের তৃতীয় উৎসের নাম কী?
খ. হারাম বর্জনীয় কেন?
গ. নাসির সাহেবের কাজটি কী হিসেবে গণ্য হবে? হাদিসের আলোকে ব্যাখ্যা কর।
ঘ. জাবিরের কাজের ফলাফল ইসলামের আলোকে মূল্যায়ন কর।

ক শরিয়তের তৃতীয় উৎসের নাম হলো ইজমা।
খ হারাম দ্রব্য আমাদের জন্য ক্ষতিকর হওয়ায় তা বর্জনীয়। আল্লাহ তায়ালা আমাদের জন্য যা কিছু অকল্যাণকর তাই হারাম ঘোষণা করেছেন। হারাম খাদ্য গ্রহণের ফলে মানুষ অন্যায়, অশ্লীলতা ও অসৎ চরিত্রের প্রতি আকৃষ্ট হয়। মানবচরিত্রের সৎগুণাবলি নষ্ট হয়ে যায়। মানুষ ইবাদতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। তাই বলা যায়, হারাম দ্রব্য আমাদের দেহ, মন ও মস্তিষ্কের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর হওয়ায় তা বর্জনীয়।
গ নাসির সাহেবের কাজটি সদকা হিসেবে গণ্য হবে। কেননা বুখারি ও মুসলিমে বর্ণিত হাদিসে মহানবি (স) বলেছেন, “কোনো মুসলমান যদি বৃক্ষরোপণ করে কিংবা কোনো ফসল আবাদ করে, এরপর তা থেকে কোনো পাখি, মানুষ বা চতুষ্পদ জন্তু কিছু ভক্ষণ করে তবে তা তার জন্য সদকা হিসেবে গণ্য হবে।” উদ্দীপকের নাসির সাহেব তার বাড়ির চারপাশে অনেক ফলের গাছ লাগিয়েছেন। মানুষেরা সেই গাছের ছায়ায় বসে আরাম করে এবং পাখিরা ফল খায়। নাসির সাহেব প্রতিবেশীদেরও ফল দেন। আমরা জানি, বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে পার্থিব লাভের পাশাপাশি পরকালীন কল্যাণও লাভ করা যায়। কেননা পশুপাখি, জীবজন্তু ও কীটপতঙ্গ বৃক্ষের ফল খেয়ে থাকে। ঐ ফল সদকা করে দিলে যে সওয়াব হতো, পশুপাখি বা মানুষের খাওয়ার ফলে আল­াহ তায়ালা বৃক্ষরোপণকারীর আমলনামায় সে পরিমাণ সাওয়াব লিখে দেবেন। ফলে তিনি নিজের অজান্তেই অনেক সওয়াবের অধিকারী হবেন। সুতরাং বলা যায়, বৃক্ষরোপণ পুণ্যের কাজ। মহানবির (স) ভাষ্যমতে, নাসির সাহেবের বৃক্ষরোপণের কাজটি সদকা হিসেবে গণ্য হবে।
ঘ জাবির সাহেব একজন সৎ ব্যবসায়ী। নিচে তাঁর কাজের ফলাফল ইসলামের আলোকে মূল্যায়ন করা হয়েছে।
ব্যবসায়-বাণিজ্য একটি পবিত্র পেশা। আমাদের প্রিয়নবি (স)ও ব্যবসা করেছেন। সৎ ও বিশ্বস্ত ব্যবসায়ী দুনিয়া ও আখিরাতে অত্যন্ত সম্মান ও মর্যাদার অধিকারী হবেন। উদ্দীপকের জাবির একজন সৎ ব্যবসায়ী। তার দোকানে কোনো ভেজাল নেই, ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রয় হয়। তাই অনেক মানুষ রমযান মাসে তার দোকানে বাজার করে। মহানবি (স) বলেছেন, “বিশ্বস্ত, সত্যবাদী মুসলিম ব্যবসায়ী কিয়ামতের দিন শহিদগণের সঙ্গে থাকবেন।” হাদিসের ভাষ্যমতে, জাবির সাহেব শহিদগণের সাথে জান্নাতে প্রবেশ করবেন। তবে জাবির সাহেবের ন্যায় সকল ব্যবসায়ীদের এক্ষেত্রে দুটি শর্ত পূরণ করতে হবে। প্রথমত, সততা ও সত্যবাদিতার সাথে ব্যবসা পরিচালনা করতে হবে। দ্বিতীয়ত, তাদেরকে বিশ্বস্ত ও আমানতদার হতে হবে। ব্যবসায় প্রতারণা বা মিথ্যা বললে এ মহাপুরস্কার থেকে ব্যবসায়ীরা বঞ্চিত হবে। সুতরাং জাবির সাহেবের মতো আমাদের সকলের উচিত ব্যবসায়ে ইসলামি নীতি-আদর্শের অনুসরণ করা। তাহলেই কিয়ামতের দিন শহিদগণের সঙ্গী হওয়ার মহান মর্যাদা লাভ করা যাবে।
 সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর 
প্রশ্ন \ ১ \ সূরা আত-তীন এর সংক্ষিপ্ত শিক্ষা বর্ণনা কর।
উত্তর : সূরা আত-তীন আল-কুরআনের ৯৫তম সূরা। নিচে এ সূরার শিক্ষা সংক্ষিপ্তাকারে বর্ণনা করা হলো :
১. মানুষ সৃষ্টিজগতের শ্রেষ্ঠ ও সুন্দরতম সৃষ্টি।
২. মানুষের সম্মান ও মর্যাদা সৎকর্মের ওপর নির্ভরশীল। অসৎকর্ম করলে মানুষ মনুষ্যত্বের স্তর থেকে পশুত্বের স্তরে নেমে যায়।
৩. সৎকর্মশীলগণ পরকালে অশেষ ও অফুরন্ত পুরষ্কার লাভ করবেন।
৪. আল­াহ তায়ালা সর্বশ্রেষ্ঠ বিচারক। শেষ বিচারের দিন তিনি সকল মানুষের কৃতকর্মের হিসাব নেবেন।
প্রশ্ন \ ২ \ মুনাফিকের কতিপয় বৈশিষ্ট্য সংক্ষেপে আলোচনা কর।
উত্তর : মুনাফিকের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা প্রসঙ্গে রাসুল (স) বলেন, মুনাফিকের বৈশিষ্ট্য তিনটি। যথা : ১. যখন সে কথা বলে মিথ্যা বলে, ২. যখন সে ওয়াদা করে তা ভঙ্গ করে, ৩. আর যখন কোনো কিছু তার নিকট আমানত রাখা হয় তার খিয়ানত করে। (বুখারি)
অন্য এক হাদিসে আরও একটি বৈশিষ্ট্যের কথা বলা হয়েছে। আর তা হলো, সে যখন অন্যের সঙ্গে তর্ক ও ঝগড়া করে তখন অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করে।
প্রশ্ন \ ৩ \ আধুনিক যুগে কিয়াসের গুরুত্ব সংক্ষেপে বর্ণনা কর।
উত্তর : মানবজীবন ও সমাজ সতত পরিবর্তনশীল। পরিবর্তন ও বিবর্তনের ধারায় জগতে নতুন নতুন সভ্যতা-সংস্কৃতির উন্মেষ ঘটে। ফলে নতুন নতুন জিজ্ঞাসা, সমস্যা ও জটিলতার সৃষ্টি হয়। এসব সমস্যার সমাধান সভ্যতা ও সংস্কৃতির আলোকেই করতে হয়। ইসলাম অত্যন্ত বিজ্ঞানসম্মতভাবে এসব সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম। কেননা, ইসলাম একটি গতিশীল জীবনব্যবস্থা। কুরআন ও হাদিসে শরিয়তের বিষয়গুলো এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, যেন এগুলোর দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে সর্বযুগে সর্বকালে সব সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হয়। আর এ পদ্ধতির নামই কিয়াস। সুতরাং আমরা বলতে পারি, আধুনিক যুগে কিয়াসের গুরুত্ব অপরিসীম। বস্তুত শরিয়তের পূর্ণাঙ্গতার জন্য কিয়াস অপরিহার্য।
 বর্ণনামূলক প্রশ্নোত্তর 
প্রশ্ন \ ১ \ আল-কুরআনের সংরক্ষণ পদ্ধতি লিপিবদ্ধ কর।
উত্তর : মহান আল্লাহ স্বয়ং পবিত্র কুরআনের সংরক্ষণের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। সূরা হিজর-এর ৯নং আয়াতে এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন :
‘আমিই কুরআন অবতীর্ণ করেছি এবং অবশ্য আমিই এর সংরক্ষক।’ যেহেতু মহান আল্লাহ নিজেই আল-কুরআনের সংরক্ষক, তাই আজও কুরআন অবিকৃত অবস্থায় সংরক্ষিত আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।
কুরআন সংরক্ষণ পদ্ধতি : মহাগ্রন্থ আল-কুরআনের সংরক্ষণ দুটি পর্যায়ে ভাগ করা যায়। যথা :
১. নাজিলের পূর্ববর্তী সময়কাল : পবিত্র কুরআন আল্লাহর ইচ্ছায় লাওহে মাহফুজে বা সংরক্ষিত ফলকে লিপিবদ্ধ ছিল। এরপর লাওহে মাহফুজ থেকে সম্পূর্ণ কুরআন প্রথম আসমানে ‘বায়তুল ইযযাহ’ নামক স্থানে নাজিল করা হয় এবং সেখানে সংরক্ষণ করা হয়।
২. নাজিলের পরবর্তী সময়কাল : বায়তুল ইযযাহ থেকে সুদীর্ঘ ২৩ বছরে জিবরাইল (আ)-এর মাধ্যমে মহানবি (স)-এর ওপর প্রয়োজনানুসারে অল্প অল্প করে পবিত্র কুরআন নাজিল হয়।
এ সময় মহানবি (স) সাথে সাথে নাজিলকৃত আয়াত মুখস্থ করে নিতেন। এরপর বারবার তিলাওয়াতের মাধ্যমে তা স্মৃতিতে সংরক্ষণ করতেন। মহানবি (স)-এর সাহাবিগণও আল-কুরআন মুখস্থ করতেন, দিনরাত তিলাওয়াত করতেন, সালাতে পাঠ করতেন এবং পরিবার-পরিজন, স্ত্রী-সন্তান ও বন্ধু-বান্ধবদেরও মুখস্থ করাতেন। এভাবে মুখস্থ করার মাধ্যমে আল-কুরআন সর্বপ্রথম সংরক্ষণ করা হয়। এছাড়া সেসময় লিখিতভাবেও আল-কুরআন সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। আল-কুরআনের কোনো অংশ বা আয়াত নাজিল হলে সাহাবিগণ খেজুর গাছের ডাল, পশুর চামড়া ও হাড়, পাথর, গাছের পাতা ইত্যাদিতে লিখে তা সংরক্ষণ করতেন। হযরত যায়দ ইবনে সাবিতের নেতৃত্বে মোট ৪২ জন সাহাবি কুরআন লেখার এ মহান দায়িত্ব পালন করতেন। এদেরকে কাতিবে ওহি বা ওহি লেখক বলা হয়। এভাবে মহানবি (স) এর সময়ে মুখস্থ ও লেখনীর মাধ্যমে আল-কুরআন পুরোপুরি সংরক্ষণ করা হয়। কিন্তু সেসময় তা একত্রে গ্রন্থাবদ্ধ করা হয়নি। বরং তাঁর তত্ত¡াবধানে লিপিবদ্ধ টুকরোগুলো নানাজনের নিকট সংরক্ষিত ছিল।
পরিশেষে বলা যায়, আল্লাহ তায়ালা স্বয়ং আল-কুরআনের সংরক্ষক। তিনি তাঁর প্রত্যক্ষ তত্ত¡াবধানে এ কিতাব সংরক্ষণ করেন।

কমন উপযোগী জ্ঞান ও অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর

 জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর 
প্রশ্ন \ ১ \ শরিয়ত কী?
উত্তর : শরিয়ত হলো ইসলামি জীবন পদ্ধতি।
প্রশ্ন \ ২ \ শরিয়ত আমাদের কী শিক্ষা দেয়?
উত্তর : শরিয়ত আমাদের ইবাদতের পদ্ধতি ও নিয়ম-কানুন শিক্ষা দেয়।
প্রশ্ন \ ৩ \ ইসলামি শরিয়তের অকাট্য দলিল কোনটি?
উত্তর : ইসলামি শরিয়তের অকাট্য দলিল হলো আল-কুরআন।
প্রশ্ন \ ৪ \ শরিয়তের মূল কাঠামো দণ্ডায়মান কিসের ওপর?
উত্তর : শরিয়তের মূল কাঠামো দণ্ডায়মান আল-কুরআনের ওপর।
প্রশ্ন \ ৫ \ পৃথিবীর নিকটতম আসমানের নাম কী?
উত্তর : পৃথিবীর নিকটতম আসমানের নাম বায়তুল ইযযাহ।
প্রশ্ন \ ৬ \ আল-কুরআন কার মাধ্যমে নাজিল হয়?
উত্তর : আল-কুরআন হযরত জিবরাইল (আ)-এর মাধ্যমে নাজিল হয়।
প্রশ্ন \ ৭ \ সর্বপ্রথম কোন সূরা নাজিল হয়?
উত্তর : সর্বপ্রথম সূরা আলাক নাজিল হয়।
প্রশ্ন \ ৮ \ কুরআন মজিদ কোথায় সংরক্ষিত ছিল?
উত্তর : কুরআন মজিদ লাওহে মাহফুজে সংরক্ষিত ছিল।
প্রশ্ন \ ৯ \ মক্কি সূরা কাকে বলে?
উত্তর : মহানবি (স)-এর মক্কা থেকে মদিনায় হিজরতের পূর্বে নাজিল হওয়া সূরাসমূহকে মক্কি সূরা বলা হয়।
প্রশ্ন \ ১০ \ মাদানি সূরা কাকে বলে?
উত্তর : মহানবি (স)-র মদিনায় হিজরতের পর নাজিল হওয়া সূরাগুলোকে মাদানি সূরা বলা হয়।
প্রশ্ন \ ১১ \ হিজরতকালে পথে যে সূরা নাজিল হয় তাকে কী বলে?
উত্তর : মহানবি (স)-এর হিজরতকালে মদিনায় গমনের পথে যে সূরা নাজিল হয়েছে সেগুলোও মক্কি সূরা।
প্রশ্ন \ ১২ \ তাজবিদ অনুযায়ী কুরআন তিলাওয়াত করা কার হুকুম?
উত্তর : তাজবিদ অনুযায়ী কুরআন তিলাওয়াত করা আল­াহর হুকুম।
প্রশ্ন \ ১৩ \ কুরআন কী?
উত্তর : আল-কুরআন মহান আল্লাহ তায়ালার পবিত্র বাণী।
প্রশ্ন \ ১৪ \ কুরআন মজিদ শিখতে হলে প্রথমে কী করতে হবে?
উত্তর : কুরআন মজিদ শিখতে হলে প্রথমে দেখে দেখে তিলাওয়াত করতে হবে।
প্রশ্ন \ ১৫ \ সূরা আশ-শামসের বর্ণনা ধারা কয়টি ভাগে ভাগ করা যায়?
উত্তর : সূরা আশ-শামসের বর্ণনাধারা তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়।
প্রশ্ন \ ১৬ \ সূরা আশ-শামস কুরআনের কততম সূরা?
উত্তর : সূরা আশ-শামস কুরআনের একানব্বইতম সূরা।
প্রশ্ন \ ১৭ \ সূরা আশ-শামস কোথায় অবতীর্ণ হয়?
উত্তর : সূরা আশ-শামস মক্কায় অবতীর্ণ হয়।
প্রশ্ন \ ১৮ \ উম্মে জামিল কে?
উত্তর : উম্মে জামিল হলো আবু লাহাবের স্ত্রী।
প্রশ্ন \ ১৯ \ সূরা আদ-দুহা কোথায় অবতীর্ণ হয়?
উত্তর : সূরা আদ-দুহা মক্কায় অবতীর্ণ হয়।
প্রশ্ন \ ২০ \ কোন সূরায় পূর্বাহ্ণের শপথ করা হয়েছে?
উত্তর : সূরা আদ-দুহায় পূর্বাহ্ণের শপথ করা হয়েছে।
প্রশ্ন \ ২১ \ ‘নিশ্চয়ই কষ্টের সাথে স্বস্তি আছে’Ñ একথা কোন সূরায় বলা হয়েছে?
উত্তর : এটি সূরা আল-ইনশিরাহে বলা হয়েছে।
প্রশ্ন \ ২২ \ ‘জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত মূল্যবান’ এটা কোন সূরার শিক্ষা?
উত্তর: ‘জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত মূল্যবান’ এটা সূরা আল-ইনশিরাহর শিক্ষা।
প্রশ্ন \ ২৩ \ আল­াহ তায়ালা অন্তর উন্মুক্ত করে দেন কীভাবে?
উত্তর : সত্য ও ন্যায় উপলব্ধি করার জন্য আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে প্রচেষ্টা চালালে আল­াহ তায়ালা অন্তর উন্মুক্ত করে দেন।
প্রশ্ন \ ২৪ \ সূরা আত-তীনে কয়টি ফলের কসম করা হয়েছে?
উত্তর : সূরা আত-তীনে দুইটি ফলের কসম করা হয়েছে।
প্রশ্ন \ ২৫ \ সূরা আত-তীনে আহŸান জানানো হয়েছে কিসের প্রতি?
উত্তর : সূরা আত-তীনে মানবজাতিকে ইমান ও সৎকর্মের প্রতি আহŸান জানানো হয়েছে।
প্রশ্ন \ ২৬ \ ত‚র পাহাড়ে কোন নবি (আ)-কে নবুয়ত দেওয়া হয়েছে?
উত্তর : ত‚র পাহাড়ে হযরত মুসা (আ)-কে নবুয়ত দেওয়া হয়েছে।
প্রশ্ন \ ২৭ \ সূরা আল-মাউন কোথায় অবতীর্ণ হয়?
উত্তর : সূরা আল-মাউন মক্কায় অবতীর্ণ হয়।
প্রশ্ন \ ২৮ \ সূরা আল-মাউন আল-কুরআনের কততম সূরা?
উত্তর : সূরা আল-মাউন আল-কুরআনের ১০৭তম সূরা।
প্রশ্ন \ ২৯ \ সূরা আল-মাউনে কিসের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে?
উত্তর : সূরা আল-মাউনে কাফির ও মুনাফিকদের কতিপয় বৈশিষ্ট্য ও কাজের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।
প্রশ্ন \ ৩০ \ হাদিসের বর্ণনা পরম্পরাকে কী বলে?
উত্তর : হাদিসের বর্ণনা পরম্পরাকে সনদ বলে।
প্রশ্ন \ ৩১ \ যারা হাদিস বর্ণনা করেন তাদেরকে কী বলা হয়?
উত্তর : যারা হাদিস বর্ণনা করেন তাদেরকে রাবি বলা হয়।
প্রশ্ন \ ৩২ \ প্রথম সংকলিত বিশুদ্ধ হাদিসগ্রন্থ কোনটি?
উত্তর : প্রথম সংকলিত বিশুদ্ধ হাদিসগ্রন্থ হলো আল-মুয়াত্তা।
প্রশ্ন \ ৩৩ \ মহানবি (স) বৃক্ষরোপণ ও ফসল ফলানোকে কী বলে আখ্যা দিয়েছেন?
উত্তর : মহানবি (স) বৃক্ষরোপণ ও ফসল ফলানোকে সাদকা বলে আখ্যা দিয়েছেন।
প্রশ্ন \ ৩৪ \ বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে মানুষ পার্থিব লাভের পাশাপাশি অন্য কী লাভ করতে পারে?
উত্তর : বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে মানুষ পার্থিব লাভের পাশাপাশি পরকালীন কল্যাণও লাভ করতে পারে।
প্রশ্ন \ ৩৫ \ নিয়ত কাকে বলে?
উত্তর : কাজের উদ্দেশ্য বা লক্ষ্যকে নিয়ত বলা হয়।
প্রশ্ন \ ৩৬ \ সমগ্র সৃষ্টির মধ্যে শ্রেষ্ঠ জীব কে?
উত্তর : সমগ্র সৃষ্টির মধ্যে শ্রেষ্ঠ জীব হলো মানুষ।
প্রশ্ন \ ৩৭ \ আল­াহ কার প্রয়োজন পূরণ করে দেন?
উত্তর : যে ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইয়ের প্রয়োজন পূরণে সচেষ্ট হয়, আল­াহ তার প্রয়োজন পূরণ করে দেন।
প্রশ্ন \ ৩৮ \ মুসলমান পরস্পর কী?
উত্তর : মুসলমান পরস্পর ভাই ভাই।
প্রশ্ন \ ৩৯ \ পরকালে কারা শহিদদের সমমর্যাদা লাভ করবে?
উত্তর : পরকালে বিশ্বস্ত মুসলিম ব্যবসায়ীগণ শহিদদের সমমর্যাদা লাভ করবে।
প্রশ্ন \ ৪০ \ বিপদে পড়লে আমরা কী করব?
উত্তর : বিপদে পড়লে আমরা ধৈর্যধারণ করব।
প্রশ্ন \ ৪১ \ ‘ইজমা’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর : ‘ইজমা’ শব্দের অর্থ ঐকমত্য।
প্রশ্ন \ ৪২ \ মুজতাহিদ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর : মুজতাহিদ শব্দের অর্থ গবেষক।
প্রশ্ন \ ৪৩ \ হযরত উমর (রা)-এর শাসনামলে ইজমার ভিত্তিতে কিসের বিধান প্রবর্তিত হয়?
উত্তর : তারাবির সালাত বিশ রাকআত আদায় করা।
প্রশ্ন \ ৪৪ \ ‘কিয়াস’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর : কিয়াস শব্দের অর্থ পরিমাপ, অনুমান ও তুলনা করা।
প্রশ্ন \ ৪৫ \ শরিয়তের আহকাম সংক্রান্ত পরিভাষাগুলো কী কী?
উত্তর : শরিয়তের আহকাম সংক্রান্ত পরিভাষাগুলো হলোÑ ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নত, মুস্তাহাব, মুবাহ ইত্যাদি।
প্রশ্ন \ ৪৬ \ ‘ফরজ’ অর্থ কী?
উত্তর : ‘ফরজ’ শব্দের অর্থ অত্যাবশ্যক, অবশ্য পালনীয়।
প্রশ্ন \ ৪৭ \ ‘ওয়াজিব’ অর্থ কী?
উত্তর : ‘ওয়াজিব’ শব্দের অর্থ অপরিহার্য, কর্তব্য।
প্রশ্ন \ ৪৮ \ ‘সুন্নত’ অর্থ কী?
উত্তর : ‘সুন্নত’ শব্দের অর্থ পথ, পন্থা, নিয়ম, রীতি, পদ্ধতি ইত্যাদি।
প্রশ্ন \ ৪৯ \ ‘মুস্তাহাব’ অর্থ কী?
উত্তর : ‘মুস্তাহাব’ শব্দের অর্থ পছন্দনীয়।

অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর


প্রশ্ন \ ১ \ শরিয়তের গুরুত্ব বিশ্লেষণ কর।
উত্তর: শরিয়তের গুরুত্ব অপরিসীম। শরিয়তের মাধ্যমে আমরা জীবন পরিচালনার দিকনির্দেশনা পেয়ে থাকি। ইসলামি বিধি-নিষেধ তথা হালাল-হারাম, ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নত, নফল ইত্যাদি বিষয়ের জ্ঞান শরিয়তের শিক্ষার মাধ্যমেই লাভ করা যায়। তাছাড়া শরিয়ত আমাদের ইবাদতের পদ্ধতি ও নিয়মকানুন শিক্ষা দেয়। উত্তম চরিত্র ও নৈতিকতার নানা শিক্ষাও শরিয়তে বিবৃত রয়েছে। সুতরাং সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে জীবন পরিচালনার জন্য শরিয়ত অপরিহার্য।
প্রশ্ন \ ২ \ কুরআন মজিদ কীভাবে নাজিল হয়?
উত্তর : মহানবি (স) হেরাগুহায় ধ্যানমগ্ন থাকা অবস্থায় মহান আল­াহর নির্দেশে জিবরাইল (আ) আল-কুরআনের সূরা আলাকের প্রথম পাঁচটি আয়াত নাজিল করেন। এটাই ছিল দুনিয়াতে নাজিলের প্রথম ঘটনা। এরপর বিভিন্ন সময় ও প্রয়োজনের পরিপ্রেক্ষিতে মহানবি (স)-এর ওপর কুরআন নাজিল হয়। এভাবে মহানবি (স)-এর জীবদ্দশায় মোট ২৩ বছরে সম্পূর্ণ কুরআন নাজিল হয়। এটি একসাথে নাজিল হয় নি; বরং অল্প অল্প করে প্রয়োজনানুসারে নাজিল হতো। আল্লাহ বলেনÑ

অর্থ : আর আমি খণ্ড-খণ্ডভাবে কুরআন নাজিল করেছি যাতে আপনি তা মানুষের নিকট ক্রমে ক্রমে পাঠ করতে পারেন। আর আমি তা ক্রমশ নাজিল করেছি। (সূরা বনি ইসরাইল : ১০৬)
প্রশ্ন \ ৩ \ অন্যান্য কিতাবের ন্যায় কুরআন পরিবর্তন হয়নি কেন?
উত্তর : আল­াহ তায়ালা স্বয়ং আল-কুরআনের সংরক্ষক বলে অন্যান্য কিতাবের ন্যায় আল-কুরআনে কোনো পরিবর্তন হয়নি। আল্লাহ তাঁর প্রত্যক্ষ তত্ত¡াবধানে এ কিতাব সংরক্ষণ করেন। এজন্যই আজ পর্যন্ত এ কিতাবের একটি হরফ, হরকতও পরিবর্তন হয়নি। এটি যেভাবে নাজিল হয়েছিল আজও ঠিক সেভাবেই বিদ্যমান রয়েছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।
প্রশ্ন \ ৪ \ মক্কি সূরার চারটি বৈশিষ্ট্য উলে­খ কর।
উত্তর : মক্কি সূরার বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তন্মধ্যে চারটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো :
১. তাওহিদ ও রিসালাতের প্রতি আহŸান;
২. মৃত্যুর পরবর্তী জীবন কিয়ামত, জান্নাত-জাহান্নাম তথা আখিরাতের বর্ণনা;
৩. শিরক-কুফরের পরিচয় বর্ণনা করে এগুলোর অসারতা প্রমাণ করা এবং
৪. মুশরিক ও কাফিরদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর।
প্রশ্ন \ ৫ \ শানে নুযুল কাকে বলে?
উত্তর : ‘শান’ শব্দের অর্থ অবস্থা, মর্যাদা, কারণ, ঘটনা, পটভ‚মি। আর নুযুল অর্থ অবতরণ। অতএব শানে নুুযুল অর্থ অবতরণের কারণ বা পটভ‚মি। ইসলামি পরিভাষায়, সূরা বা আয়াত নাজিলের কারণ বা পটভ‚মিকে শানে নুুযুল বলা হয়।
প্রশ্ন \ ৬ \ সূরা আশ-শামসের শিক্ষা বর্ণনা কর।
উত্তর : সূরা আশ-শাসম থেকে আমরা যেসব শিক্ষা লাভ করতে পারি তা নিম্নরূপ :
১. আল­াহ তায়ালাই আসমান, জমিন ও মানুষের স্রষ্টা।
২. তিনিই সূর্য, চন্দ্র, রাত, দিনের আবর্তন ঘটান।
৩. তিনিই মানুষের ভালো-মন্দ, সৎকর্ম-অসৎকর্মের জ্ঞান দান করেন।
৪. যে ব্যক্তি সৎকর্ম করবে সে সার্বিক সফলতা লাভ করবে।
৫. আর যে ব্যক্তি নিজকে পাপ-পংকিলতায় জড়িয়ে ফেলবে সে ব্যর্থ ও ধ্বংস হবে।
৬. আমাদের পূর্ববর্তী জাতিসমূহের মধ্যে যারা অবাধ্য ছিল আল­াহ তায়ালা দুনিয়াতেই তাদের শাস্তি প্রদান করেন। বস্তুত আল­াহ তায়ালার শাস্তি অত্যন্ত কঠোর।
প্রশ্ন \ ৭ \ সূরা আদ- দুহার একটি শিক্ষা লেখ।
উত্তর : সূরা আদ্-দুহা থেকে আমরা বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের শিক্ষা লাভ করি। তন্মধ্যে একটি শিক্ষা নিচে উল্লেখ করা হলো :
দুনিয়ার সকল কল্যাণ ও নিয়ামত আল­াহ তায়ালার দান। এসব নিয়ামতের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা সকলের কর্তব্য। যেমন : আল­াহ তায়ালা আমাদের ইমান, কুরআন, ধন-দৌলত, জ্ঞান-বুদ্ধি ইত্যাদি নিয়ামত দান করেছেন। সুতরাং এসবের জন্য আল­াহ তায়ালার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে হবে। এসব নিয়ামতের কথা মানুষের মাঝে প্রচার করতে হবে।
প্রশ্ন \ ৮ \ সূরা আল-ইনশিরাহ-এর শিক্ষা বর্ণনা কর।
উত্তর :
১. যে ব্যক্তি সত্য ও ন্যায়ের জন্য চেষ্টা-সাধনা করে আল­াহ তায়ালা তার অন্তরকে খুলে দেন; তাকে সৎপথ প্রদর্শন করেন।
২. আল­াহ তায়ালাই মানুষের কষ্ট-যাতনা দূর করেন।
৩. মানুষের মান-সম্মান, খ্যাতি-মর্যাদা সবকিছুই আল­াহ তায়ালার হাতে। তিনি যাকে ইচ্ছা সম্মান-মর্যাদা দান করেন।
৪. মানবজীবনে সুখ-দুঃখ থাকবেই। সুতরাং দুঃখ ও কষ্টে হতাশ হওয়া চলবে না। বরং ধৈর্যসহকারে এর মোকাবিলা করতে হবে।
৫. জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত অত্যন্ত মূল্যবান। অতএব, এ সময়কে কাজে লাগাতে হবে। দায়িত্ব ও কর্তব্য সঠিকভাবে পালন করতে হবে।
৬. পার্থিব প্রয়োজনীয় কাজ সমাধানের পর আল­াহ তায়ালার ইবাদত ও স্মরণে আত্মনিয়োগ করতে হবে। সকল কিছুতেই আল­াহ তায়ালার প্রতি মনোনিবেশ করা তাঁর প্রিয় বান্দার বৈশিষ্ট্য।
প্রশ্ন \ ৯ \ সূরা আত্-তীন পাঠ করে আমরা কী শিক্ষা লাভ করতে পারি?
উত্তর : সূরা আত-তীন পাঠ করে আমরা যে শিক্ষা লাভ করতে পারি নিচে তা উল্লেখ করা হলো :
১. মানুষ সৃষ্টিজগতের শ্রেষ্ঠ ও সুন্দরতম সৃষ্টি।
২. মানুষের সম্মান ও মর্যাদা সৎকর্মের ওপর নির্ভরশীল। অসৎকর্ম করলে মানুষ মনুষ্যত্বের স্তর থেকে পশুত্বের স্তরে নেমে যায়।
৩. সৎকর্মশীলগণ পরকালে অশেষ ও অফুরন্ত পুরস্কার লাভ করবেন।
৪. আল­াহ তায়ালা সর্বশ্রেষ্ঠ বিচারক। শেষ বিচারের দিন তিনি সকল মানুষের কৃতকর্মের হিসাব নেবেন।
প্রশ্ন \ ১০ \ সূরা আল-মাউনের শিক্ষা বর্ণনা কর।
উত্তর : সূরা আল-মাউন থেকে আমরা নি¤েœাক্ত শিক্ষা পেয়ে থাকি।
১. বিচার দিবসকে অস্বীকার করা খুবই জঘন্য কাজ। এটি কাফির-মুনাফিকদের কাজ।
২. ইয়াতিম ও দুস্থদের তাড়িয়ে দেওয়া নয়, বরং তাদের যথাসম্ভব সাহায্য-সহযোগিতা করতে হবে।
৩. ইয়াতিম, নিঃস্বদের সাহায্য-সহযোগিতার জন্য পরিবার-পরিজন, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব, পাড়া-প্রতিবেশী সকলকে উৎসাহ দিতে হবে।
৪. কোনোক্রমেই সালাতে অবহেলা করা চলবে না। লোক দেখানোর জন্য সালাত আদায় করা যাবে না; বরং বিশুদ্ধ নিয়তে সঠিকভাবে আল­াহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য সালাত আদায় করতে হবে।
৫. সালাতে উদাসীন ব্যক্তিদের জন্য রয়েছে মহাধ্বংস।
প্রশ্ন \ ১১ \ রাসুলুল্লাহ (স)-এর জীবদ্দশায় হাদিস লিখে রাখা নিষেধ ছিল কেন?
উত্তর : রাসুলুল্লাহ (স)-এর জীবদ্দশায় হাদিস লিখে রাখা নিষেধ ছিল। কেননা তখন আল-কুরআন নাজিল হচ্ছিল। এ অবস্থায় মহানবি (স)-এর হাদিস লিখে রাখলে তা আল-কুরআনের বাণীর সাথে সংমিশ্রণের আশংকা ছিল। তাই রাসুলুল্লাহ (স)-এর জীবদ্দশায় হাদিস লিপিবদ্ধ করে সংরক্ষণ করা হয়নি। তবে সাহাবিগণ মহানবি (স)-এর বাণীসমূহ মুখস্থ রাখতেন এবং রাসুলুল্লাহ (স) কোন সময় কী কাজ করতেন তা খেয়াল রাখতেন।
প্রশ্ন্ \ ১২ \ নিয়ত সম্পর্কে হাদিসটির শিক্ষা বর্ণনা কর।
উত্তর : নিয়ত সম্পর্কিত হাদিসটি থেকে আমরা নিম্নোক্ত শিক্ষা পেয়ে থাকিÑ
১. কাজের উদ্দেশ্য বা লক্ষ্যকে নিয়ত বলা হয়।
২. নিয়তের উপরই কাজের সফলতা নির্ভর করে। অর্থাৎ নিয়ত যদি ভালো হয় তবে ব্যক্তি উত্তম প্রতিদান লাভ করবে। আর নিয়ত যদি খারাপ হয় তবে ভালো কাজ করলেও ব্যক্তি সাওয়াব লাভ করবে না।
৩. আল­াহ তায়ালা মানুষের বাহ্যিক আমলের সাথে সাথে অন্তরের অবস্থাও লক্ষ্য করেন।
সুতরাং সকল কাজেই আমরা নিয়তকে বিশুদ্ধ রাখব। লোক দেখানোর জন্য বা পার্থিব কোনো লাভের আশায় সৎকর্ম করব না, বরং আল­াহ তায়ালা ও তাঁর রাসুলের সন্তুষ্টির জন্য কাজ করব।
প্রশ্ন \ ১৩ \ সর্বোত্তম মানুষ সম্পর্কিত হাদিসটির শিক্ষ লেখ।
উত্তর : সর্বোত্তম মানুষ সম্পর্কিত হাদিসটি থেকে আমরা নিম্নোক্ত শিক্ষা পেয়ে থাকি :
১. আল­াহ তায়ালার স্মরণ সর্বোত্তম কাজ।
২. মানুষের মর্যাদা ধনদৌলত, শিক্ষা বা ক্ষমতার ওপর নির্ভরশীল নয়। বরং দীন পালনের মাধ্যমেই মানুষের মর্যাদা নিরূপিত হয়।
৩. যাঁদের দেখলে আল­াহ তায়ালার স্মরণ হয় তারা সর্বোত্তম ব্যক্তি।
প্রশ্ন \ ১৪ \ কিয়ামতের দিন বিশ্বস্ত ও সত্যবাদী মুসলিম ব্যবসায়ী শহিদদের সাথে একত্রে থাকার কারণ কী?
উত্তর : বিশ্বস্ত ও সত্যবাদী মুসলিম ব্যবসায়ীরা কিয়ামতের দিন শহিদদের সাথে থাকবেন। কেননা তাঁদের প্রতিনিয়ত নিজেদের সাথে জিহাদ করে সৎভাবে ব্যবসা করতে হয়েছে। তাঁরা পণ্য নকল করাতে পারতেন। খারাপ পণ্য ভালো পণ্য হিসেবে চালিয়ে দিয়ে বেশি লাভ করতে পারতেন। ওজনে কম দিয়ে মানুষকে ঠকিয়ে বেশি মুনাফা অর্জন করতে পারতেন। কিন্তু তাঁরা সকল প্রলোভন ও মোহ থেকে মুক্ত হয়ে কুপ্রবৃত্তির সাথে জিহাদ করে হালাল পথে ব্যবসা পরিচালনা করেছেন। এ কারণেই কিয়ামতের দিন বিশ্বস্ত ও সত্যবাদী মুসলিম ব্যবসায়ীগণ শহিদদের সাথে থাকেন।
প্রশ্ন \ ১৫ \ সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ কাকে বলে?
উত্তর : যে সকল কাজ মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স) নিজে সর্বদাই পালন করতেন, অন্যদেরকে তা পালনের তাগিদ দিতেন তাকে সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ বলে। যেমন : আযান ও ইকামত দেওয়া, ফজরের ফরজ সালাতের পূর্বে দুই রাকআত সালাত আদায় করা সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ। সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ ওয়াজিবের কাছাকাছি। এগুলো পালন করা কর্তব্য। ইচ্ছাকৃতভাবে বা অবহেলাবশত বিনা কারণে এগুলো পালন না করলে গুনাহ হয়।
প্রশ্ন \ ১৬ \ কোন কোন নীতিমালার ভিত্তিতে কিয়াস করা যাবে?
উত্তর : শরিয়তের ইমামগণ কিয়াস করার ব্যাপারে কতিপয় নীতিমালা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। সেগুলো হলো :
ক. যেসব বিষয়ের সমাধান কুরআন, হাদিস ও ইজমায় পাওয়া যায় সেসব বিষয়ে কিয়াস করা যাবে না।
খ. কিয়াস কখনই কুরআন-সুন্নাহ ও ইজমার বিরোধী হবে না।
গ. কিয়াসের পদ্ধতি ও আইন মানুষের জ্ঞানের পরিসীমার মধ্যে থাকতে হবে।
ঘ. কুরআন, হাদিস ও ইজমা দ্বারা প্রবর্তিত আইনের মূলনীতি বিরোধী কোনো আইন তৈরি করা কিয়াসের আওতাবহিভর্‚ত।

অতিরিক্ত সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

 বোর্ড ও সেরা স্কুলের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন- ১  শরিয়তের প্রথম উৎস : আল কুরআন

শিক্ষক মহোদয় শ্রেণিতে ইসলাম শিক্ষা পড়াতে গিয়ে বলেন যে, মহান আল্লাহতায়ালা মানবজাতিকে হেদায়েত করার জন্য যুগে যুগে অসংখ্য নবি ও রাসুল প্রেরণের পাশাপাশি তাঁদের ওপর ১০৪ খানা আসমানি কিতাব নাজিল করেছেন। তবে নাজিলের ক্ষেত্রে অন্যান্য আসমানি কিতাবের সাথে পবিত্র কুরআন শরিফের বিশেষ পার্থক্য রয়েছে। তিনি আরও বলেন যে, ‘পবিত্র কুরআন হচ্ছে সর্বশেষ, সর্বশ্রেষ্ঠ, সর্বজনীন ও সন্দেহমুক্ত একটি মহাগ্রন্থ’। [স. বো. ’১৬]
ক. আল-কুরআন কোথায় সংরক্ষিত ছিল? ১
খ. খতমে নবুয়ত বলতে কী বোঝায়? ২
গ. নাজিলের ক্ষেত্রে অন্যান্য আসমানি কিতাবের সাথে আল-কুরআনের বিশেষ পার্থক্য বলতে শিক্ষক কী বুঝাতে চেয়েছেন- ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. শিক্ষকের সর্বশেষ উক্তিটি বিশ্লেষণ কর। ৪

ক আল-কুরআন লাওহে মাহফুজে সংরক্ষিত ছিল।
খ খাতামুন শব্দের অন্যতম অর্থ সিলমোহর। কোনো কিছুতে সিলমোহর তখন অঙ্কিত করা হয় যখন তা পূর্ণ হয়ে যায়। সিলমোহর লাগানোর পর তাতে কোনো কিছু প্রবেশ করানো যায় না। নবুয়তের সিলমোহর হলো নবুয়তের পরিসমাপ্তির ঘোষণা। নবুয়তের দায়িত্বের পরিসমাপ্তি ঘোষণা। অর্থাৎ নতুনভাবে কোনো ব্যক্তি নবি হতে পারবে না এবং নবুয়তের ধারায় প্রবেশ করতে পারবে না। এটাই হলো খতমে নবুয়তের মূল কথা।
গ নাজিলের ক্ষেত্রে অন্য আসমানি কিতাবের সাথে কুরআনের বিশেষ পার্থক্য বলতে শিক্ষক বোঝাতে চেয়েছেন পবিত্র কুরআন ছাড়া বাকি যে ১০৩ খানা আসমানি কিতাব রয়েছে তা কিন্তু নবি-রাসুলদের ওপর একত্রে পূর্ণাঙ্গ আকারে নাজিল হয়েছে। পবিত্র কুরআন হলো এর ব্যতিক্রম। এটি দীর্ঘ তেইশ বছরে অল্প অল্প করে অবস্থার আলোকে, প্রয়োজন ও ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মহানবি (স)-এর ওপর নাজিল হয়। প্রথমে এটি লাওহে মাহফুজ বা সংরক্ষিত ফলকে লিপিবদ্ধ ছিল। এরপর মহান আল্লাহ কদরের রাতে প্রথম আসমানের ‘বাইতুল ইযযাহ’ নামক স্থানে পবিত্র কুরআন একত্রে নাজিল করেন। এরপর বিভিন্ন সময় প্রয়োজনের পরিপ্রেক্ষিতে এবং অবস্থার আলোকে বা কোনো তাৎক্ষণিক ঘটে যাওয়া ঘটনাকে কেন্দ্র করে কখনো পাঁচ আয়াত, কখনো দশ আয়াত, কখনো আয়াতের অংশবিশেষ, আবার কখনো একটি পূর্ণাঙ্গ সূরা নাজিল হতো। শিক্ষক মহোদয় এ বিষয়টি বোঝাতে চেয়েছেন।
ঘ পবিত্র কুরআনের শ্রেষ্ঠত্ব বোঝাতে গিয়ে শিক্ষক যে বক্তব্য পেশ করেছেন তা অত্যন্ত যৌক্তিক, বাস্তব এবং তথ্যনির্ভর। পবিত্র কুরআন সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ আসমানি গ্রন্থ। এরপরে আর কোনো আসমানি গ্রন্থ নাজিল হবে না এবং হওয়ার প্রয়োজনও নেই। কারণ কিয়ামত পর্যন্ত সমগ্র মানবজাতির জন্য যা কিছু প্রয়োজন তার সবকিছুর বর্ণনা ও দিকনির্দেশনা এখানে রয়েছে। যেমন এ মহাগ্রন্থটি যে নবির ওপর নাজিল হয় তিনিও সর্বশেষ নবি। কাজেই পবিত্র কুরআন একটি সর্বজনীন কিতাব। এই আলোকে এটি একটি সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ কিতাব। এছাড়াও এর আরও বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এটি একটি অপরিবর্তনীয়, অবিকৃত ও সন্দেহমুক্ত কিতাব। মহান আল্লাহ স্বয়ং এর রক্ষার দায়িত্ব নিয়েছেন। যেমন আল্লাহ বলেছেন- “ইন্না-নাহনু নাযযালনায যিকরা ওয়া ইন্না-লাহু লাহাফিযুন” অর্থ : আমিই কুরআন অবতীর্ণ করেছি এবং অবশ্য আমিই এর সংরক্ষক।” (সূরা আল-হিজর আয়াত ৯)। এদিক থেকেও পবিত্র কুরআন একটি সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থ। এসব বিবেচনায়ই উদ্দীপকে শিক্ষক বলেন, ‘পবিত্র কুরআন হচ্ছে সর্বশেষ, সর্বশ্রেষ্ঠ, সর্বজনীন ও সন্দেহমুক্ত একটি মহাগ্রন্থ।’
প্রশ্ন- ২  শরিয়াতের দ্বিতীয় উৎস: সুন্নাহ

সৌরভ একটি আলোচনা সভায় এক বক্তাকে বলতে শুনল যে, মানবজীবনে ইহকালীন ও পরকালীন কল্যাণের জন্য শুধুমাত্র কুরআন জানা ও মানা আবশ্যক। হাদিসের অনুসরণ প্রয়োজন নেই। বক্তব্য শুনে সে দ্বিধাদ্ব›েদ্ব পড়ে স্থানীয় এক ইমাম সাহেবকে বললে তিনি সূরা আল-হাশরের ৭নং আয়াতখানা পাঠ করে এর অর্থ ও ব্যাখ্যা শুনিয়ে দেন। অর্থ “রাসুল তোমাদের যা প্রদান করেন তা তোমরা গ্রহণ কর। আর যা নিষেধ করেন তা থেকে বিরত থাক।” [স. বো. ’১৫]
ক. শরিয়তের তৃতীয় উৎস কী? ১
খ. কিয়াসের গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর। ২
গ. আলোচনা সভার বক্তার বক্তব্যটি ইসলামের দৃষ্টিতে কিরূপ? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. ইমাম সাহেবের বক্তব্যের যথার্থতা পবিত্র কুরআন ও হাদিসের আলোকে বিশ্লেষণ কর। ৪

ক শরিয়তের তৃতীয় উৎস হলো আল-ইজমা।
খ ইসলামি শরিয়তের পূর্ণঙ্গতার জন্য কিয়াসের গুরুত্ব অপরিসীম।
কিয়াস ইসলামি শরিয়তের অন্যতম উৎস। ইজমার পরই এর স্থান। মানবজীবন ও সমাজ সতত পরিবর্তনশীল। পরিবর্তন ও বিবর্তনের ধারায় জগতে নতুন নতুন সভ্যতা-সংস্কৃতির উন্মেষ ঘটে। ফলে নতুন নতুন জিজ্ঞাসা, সমস্যা ও জটিলতার সৃষ্টি হয়, এ সমস্ত সমস্যার সমাধান সভ্যতা ও সংস্কৃতির আলোকেই করতে হয়। কুরআন ও হাদিসে শরিয়তের বিষয়গুলো এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে যেন এগুলোর দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে সর্বযুগে সর্বকালে সমস্ত সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হয়। আর এ পদ্ধতির নামই কিয়াস। সুতরাং শরিয়তের পূর্ণাঙ্গতার জন্য কিয়াস অপরিহার্য।
গ আলোচনা সভার বক্তার বক্তব্যটি ইসলামের দৃষ্টি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক যা কুফরির শামিল। কেননা ইসলামি শরিয়তে হাদিসের গুরুত্ব অপরিসীম। হাদিস হলো শরিয়তের দ্বিতীয় উৎস। এটিও এক প্রকার ওহি। মহানবি (স) আল্লাহর তায়ালার নির্দেশনা প্রাপ্ত হয়েই মানুষকে নানা বিষয়ের নির্দেশনা প্রদান করতেন। রাসুল (স) এর এসব বাণী বা কর্মই হাদিস। সুতরাং কুরআনের বিধিবিধান সুস্পষ্টভাবে অনুসরণের জন্য হাদিস অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। প্রকৃতপক্ষে, কুরআন ও হাদিস ইসলামি শরিয়তের সর্বপ্রধান দুটি উৎস। এগুলো মানুষকে সত্য, ন্যায় ও শান্তির পথে পরিচালনা করে। এ দুটোর শিক্ষা ও আদর্শ ত্যাগ করলে মানুষ পথভ্রষ্ট হয়ে পড়ে। যেমনটি আমরা উদ্দীপকের আলোচনা সভার বক্তার বক্তব্যে দেখতে পাই। বক্তা মানবজীবনে ইহকালীন ও পরকালীন কল্যাণের জন্য হাদিসকে বাদ দিয়ে শুধুমাত্র কুরআনকেই জানা ও মানা আবশ্যক বলে মনে করেন। তার এ ধারণা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক যা কুফরির শামিল। হাদিসকে বাদ দিয়ে শুধু কুরআন অুনসরণ করলে মূলত কুরআনকেই অস্বীকার করা হয়। উপরোল্লিখিত আলোচনার দ্বারা এটা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে উদ্দীপকে আলোচনা সভার বক্তার বক্তব্যটি সম্পূর্ণরূপে অযৌক্তিক যা কুফরির শামিল।
ঘ ইমাম সাহেবের বক্তব্যের দ্বারা মানবজীবনে হাদিসের প্রয়োজনীয়তা বুঝানো হয়েছে, যা অত্যন্ত তাৎপর্যবহ। মহানবি (স) এর বাণী, কর্ম ও তাঁর সমর্থিত রীতিনীতিই হলো হাদিস। সুতরাং রাসুলুল্লাহ (স) এর বাণী ও কাজের অনুসরণ করা আবশ্যক। রাসুলুল্লাহ (স)-এর আনুগত্য করলে প্রকারান্তরে আল্লাহ তায়ালারই আনুগত্য করা হয়। আল্লাহ তায়ালা এতে সন্তুষ্ট হন। উদ্দীপকের ইমাম সাহেব এজন্যই হাদিসের প্রয়োজনীয়তার কথা সৌরভের নিকট তুলে ধরেন। কুরআনের বিধিবিধান সুস্পষ্টরূপে অনুসরণের জন্য হাদিস অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। নিম্নের উদাহরণের মাধ্যমে আমরা আরও ভালোভাবে বিষয়টি বুঝতে পারি। যেমন- কুরআন মজিদে সালাত কায়েম করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কীভাবে, কোন সময়, কত রাকাআত সালাত আদায় করতে হবে তার বিস্তারিত দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়নি। রাসুলুল্লাহ (স) হাদিসের দ্বারা আমাদের তার নিয়ম-কানুন সূ²াতিসূ²ভাবে বর্ণনা করেছেন। ফলে আমরা যথাযথভাবে সালাত আদায় করতে পারছি। এজন্য আল্লাহ তায়ালা বলেছেন :

অর্থ: রাসুল তোমাদের যা দেন তা তোমরা গ্রহণ কর। আর যা নিষেধ করেন তা থেকে বিরত থাক। (সূরা আল-হাশর, আয়াত ৭)
মহানবি ষ:) স্বয়ং হাদিসের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন,

অর্থ : আমি তোমাদের মধ্যে দুটি বস্তু রেখে যাচ্ছি যতদিন তোমরা এ দুটোকে আঁকড়ে থাকবে ততদিন পর্যন্ত তোমরা পথভ্রষ্ট হবে না। একটি হলো আল্লাহর কিতাব (আল-কুরআন) এবং অপরটি তাঁর রাসুলের সুন্নাহ। (মুয়াত্তা) সুতরাং মানবজীবনের আল-কুরআনের পাশাপাশি মহানবি (স) এর হাদিসের প্রয়োজনীয়তাও অনস্বীকার্য।
প্রশ্ন- ৩  সূরা আদ-দুহা, সূরা আল-মাউন

জনাব মুরাদ একজন ধার্মিক ও ধনী লোক। ইসলামের বিধিবিধানগুলো পালনের সাথে সাথে তিনি প্রচুর দান-খয়রাতও করেন। তার বাড়িতে ইয়াতিম ও ভিক্ষুক আসলে তিনি তাদের সাথে সুন্দর ব্যবহার করেন এবং তাদেরকে বিভিন্নভাবে সাহায্য করেন। অন্যদিকে মিসেস আলেয়ার কাছে কেউ গৃহস্থালির প্রয়োজনীয় জিনিস চাইতে আসলে তিনি থাকা সত্তে¡ও তা দিতে অস্বীকার করেন। [স. বো. ’১৫]
ক. সূরা আত্তীন কোথায় অবতীর্ণ হয়? ১
খ. তাকরিরি হাদিস কাকে বলে? ব্যাখ্যা কর। ২
গ. কোন সূরার শিক্ষার প্রভাবে জনাব মুরাদ এরূপ দানশীল হয়েছেন? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. মিসেস আলেয়ার এরূপ কর্মকাণ্ড সূরা আল-মাউনের আলোকে মূল্যায়ন কর। ৪

ক সূরা আত্তীন মক্কায় অবর্তীর্ণ হয়।
খ রাসুলুল্লাহ (স)-এর অনুমোদনসূচক হাদিসই হলো তাকরিরি হাদিস। অর্থাৎ সাহাবিগণ রাসুলুল্লাহ (স) এর সামনে কোনো কথা বলেছেন কিংবা কোনো কাজ করেছেন কিন্তু রাসুলুল্লাহ (স) তা নিজে করেননি এবং তাতে বাধাও দেননি বরং মৌনতা অবলম্বন করে তাকে সম্মতি বা অনুমোদন দিয়েছেন। এরূপ অবস্থা বা বিষয়ের বর্ণনা যে হাদিসে এসেছে সে হাদিসকে তাকরির বা সম্মতিসূচক হাদিস বলা হয়।
গ সূরা আদ-দুহার শিক্ষার প্রভাবে জনাব মুরাদ এরূপ দানশীল হয়েছেন। সূরা আদ-দুহা থেকে আমরা শিক্ষা লাভ করি যে, আল্লাহ তাঁর প্রিয় বান্দাদের কখনোই পরিত্যাগ করেন না। তিনিই তাঁদের সকল বিপদাপদ থেকে রক্ষা করেন। পরকালে তিনি তাঁদের সকল কল্যাণময় জীবন দান করবেন। তাই ধনী ও সচ্ছল ব্যক্তিদের উচিত গরিব-দুঃখী, ইয়াতিম ও ভিক্ষুকদের কল্যাণ করা। অভাবী, সাহায্যপ্রার্থী, ইয়াতীমদের প্রতি কঠোর হওয়া যাবে না, তাদের গালমন্দ কিংবা মারধর করা যাবে না এবং তাঁদের ধমকও দেওয়া যাবে না। বরং তাদের সাথে সদাচরণ করতে হবে। দুনিয়ার সকল কল্যাণ ও নিয়ামত আল্লাহ তায়ালার দান। এসব নিয়ামতের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা সকলের কর্তব্য।
উদ্দীপকের জনাব মুরাদের ঘরের দরজায় ইয়াতিম, গরিব, মিসকিন, অনাথ, অভাবগ্রস্থ, ভিক্ষুক আসলে তিনি তাদের সাথে এমন সুন্দর, সুমধুর ও কোমল ব্যবহার করেন যেন তারা তার ঘরের লোক। এসব ইয়াতিম ও গরিবদের তিনি পর্যাপ্ত পরিমাণে দান-সদকা করে তাদের প্রয়োজন পূরণ করেন। উপরোল্লিখিত পর্যালোচনার দ্বারা একথা নির্দ্বিধায় বলা যায় যে, জনাব মুরাদ সূরা আদ-দুহার শিক্ষার প্রভাবে এরূপ দানশীল হয়েছেন।
ঘ মিসেস আলেয়ার কাছে কেউ গৃহস্থালির প্রয়োজনীয় জিনিস চাইতে আসলে কাছে থাকা সত্তে¡ও তা দিতে অস্বীকার করা মূলত সূরা আল-মাউনের আলোকে কুফরি ও মুনাফিকী। কাফির ও মুনাফিকরা তাদের অন্তরে কুফর ও নিফাক লুকিয়ে রাখার সত্তে¡ও তাদের কর্মকাণ্ডে তা প্রকাশ পেয়ে যায়। তারা বিচার দিবস অস্বীকারকারী। ইয়াতিম দুস্থদের সাহায্য করার পরিবর্তে তাদের সাথে অত্যন্ত রূঢ় ব্যবহার করে। নিষ্ঠুরভাবে তাদের তাড়িয়ে দেয়। প্রয়োজনীয় কোনো জিনিস তাদের নিকট চাইতে আসলে তা তার নিকট থাকা সত্বেও দিতে অস্বীকার করে। তারা সালাত সম্পর্কেও উদাসীন থাকে। যেমনটি আমরা উদ্দীপকের আলেয়ার মধ্যে দেখতে পাই। আলেয়ার নিকট কোনো প্রয়োজনীয় জিনিস কেউ চাইতে আসলে তার কাছে থাকা সত্তে¡ও তা দেয় না। তার এ ধরনের কর্মকাণ্ড মূলত কাফির ও মুনাফিকদের কাজের ন্যায়। যা সূরা আল-মাউনে বর্ণিত হয়েছে। তার এ ধরনের কাজের জন্য দুনিয়াতে সে পদেপদে লাঞ্ছিত হবে এবং আখিরাতেও মর্মন্তুদ শাস্তি ভোগ করবে। সে যদি মুক্তি পেতে চায় তাহলে তাকে সূরা মাউনের শিক্ষা কাজে লাগিয়ে পূর্বের কর্মকাণ্ডের জন্য আল্লাহর দরবারে তওবা করতে হবে। ইয়াতিম ও দুস্থদের তাড়িয়ে দেওয়া নয়, বরং তাদের যথাসম্ভব সাহায্য সহযোগিতা করতে হবে।
প্রশ্ন- ৪  শরিয়তের আহকাম সংক্রান্ত পরিভাষা

কবির ও খবির দুই বন্ধু হালাল ও হারাম নিয়ে আলোচনা করছিল। কবির বলে মহানবি বলেছেন, হালাল ও হারাম স্পষ্ট। খবির বলে এখনও অনেক মানুষ আছে যারা হালাল ও হারাম সম্পর্কে অজ্ঞ। তাইতো তারা বিবাহে যৌতুক গ্রহণ করে। [ঝালকাঠি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়]
ক. হালাল শব্দের অর্থ পাঠ্যবইয়ে কয়টি আছে? ১
খ. হারাম বলতে কী বোঝায়? ২
গ. খবির মিয়ার কথার যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. কবির মিয়ার কথাটির মূল্যায়ন কর। ৪

ক হালাল শব্দের পাঁচটি অর্থ পাঠ্যবইয়ে রয়েছে।
খ যে সকল কাজ বা বস্তু কুরআন ও সুন্নাহর স্পষ্ট নির্দেশে অবশ্য পরিত্যাজ্য, বর্জনীয় তাকে হারাম বলে। হারাম অর্থ নিষিদ্ধ, মন্দ, অসঙ্গত, অপবিত্র ইত্যাদি। আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর রাসুল (স) যেসব কাজ করতে বা যেসব বস্তু ব্যবহার সুস্পষ্টভাবে নিষেধ করেছেন সেসব কাজ বা বস্তু মানুষের জন্য হারাম।
গ উদ্দীপকে উল্লিখিত খবির মিয়ার কথা সঠিক। হালাল অর্থ বৈধ, সিদ্ধ, আইনানুগ বা অনুমোদিত। এছাড়া পবিত্র, গ্রহণযোগ্য ইত্যাদি অর্থেও হালাল শব্দটি ব্যবহৃত হয়। ইসলামি পরিভাষায় যেসকল বিষয়ের বৈধ হওয়া কুরআন হাদিস দ্বারা পরিষ্কারভাবে প্রমাণিত, শরিয়ত তাকে হালাল বলে আর হারাম হলো হালালের বিপরীত। উদ্দীপকের খবিরের বক্তব্য হলো অনেক মানুষ আছে যাদের হালাল হারামের জ্ঞান নেই। তারা হারাম কাজ করলেও বুঝতে পারে না যে সে হারাম কাজ করেছে। ফলে যৌতুক যে হারাম তা তারা জানে না। ফলে আনন্দচিত্তে যৌতুক গ্রহণ করে। এজন্য আল্লাহ তায়ালা জ্ঞান অর্জন করা ফরয করে দিয়েছেন। যদি তাদের হালাল হারামের জ্ঞান থাকত তাহলে তারা হারাম কাজ থেকে বিরত থাকতে পারত। তাই হালাল-হারাম সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করা সকলের কর্তব্য। আর এ সম্পর্কে খবির মিয়ার বক্তব্য যথার্থ হয়েছে।
ঘ উদ্দীপকে উল্লিখিত কবির মিয়ার কথাটি যথাযথ হয়েছে।
যে সকল বিষয়ে বৈধ হওয়া কুরআন-হাদিস দ্বারা পরিষ্কারভাবে প্রমাণিত, শরিয়তে তাকে হালাল বলা হয়। হালাল কথা, কাজ বা বস্তুত সবই হতে পারে। আর যে সকল কাজ বা বস্তু কুরআন ও সুন্নাহর স্পষ্ট নির্দেশে অবশ্য পরিত্যাজ্য, বর্জনীয় তাকে হারাম বলে। উদ্দীপকে উল্লিখিত কবির ও খবির দুই বন্ধু। তারা হালাল ও হারাম সম্পর্কে আলোচনা করছিল। কবির বলেন মহানবি (স) বলেছেন, হালাল-হারাম স্পষ্ট। কবিরের কথাটি সঠিক। কেননা আল্লাহ তায়ালা পৃথিবীতে হালাল ও হারাম সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করে দিয়েছেন। পৃথিবীতে হালাল জিনিস বা বস্তু অগণিত। এর কোনো সীমা-পরিসীমা নেই। শরিয়তের ভাষ্যমতে প্রত্যেক বিষয় মুবাহ বা বৈধ। তবে এর বিপক্ষে কুরআন ও হাদিসে যদি কোনো নিষেধাজ্ঞা পাওয়া যায় তবে তা হারাম। সুতরাং, বুঝা গেল হালালের সংখ্যা অগণিত। আর হারাম বস্তুর সংখ্যা সীমিত। এসব হালাল ও হারাম বিষয়গুলো চিনে রাখা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কেননা হালালকে হারাম মনে করা ও হারাম বিষয়কে হালাল বলে বিশ্বাস করা কুফর। সুতরাং, আমাদের উচিত হালাল জিনিস গ্রহণ করা, হারাম জিনিস বর্জন করা।
প্রশ্ন- ৫  ইজমা

মহানবি (স)-এর ইন্তিকালের পর খুলাফায়ে রাশেদিনের যুগে যদি এমন কোনো সমস্যা দেখা দিত যার সমাধান কুরআন ও সুন্নাহতে পাওয়া যেত না, তখন তাঁরা প্রধান প্রধান সাহাবির মতামত নিয়ে তার সমাধান করতেন। হযরত উমর (রা)-এর যুগে অনেক বিষয়ে সাহাবিদের মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। তাবেঈগণের যুগেও এ পদ্ধতিতে নতুন নতুন সমস্যার সমাধান করা হতো। [মাগুরা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক. ‘সুন্নাহ’ অর্থ কী? ১
খ. ইসলামি শরিয়তের চতুর্থ উৎসটির বর্ণনা দাও। ২
গ. আমাদের ব্যবহারিক জীবনে উদ্দীপকে উল্লিখিত পদ্ধতির প্রভাব ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উদ্ধৃত অংশে যে পদ্ধতির কথা বলা হয়েছে, সে পদ্ধতির গুরুত্ব বিশ্লেষণ কর। ৪

ক সুন্নাহ অর্থ রীতিনীতি।
খ ইসলামি শরিয়তের চতুর্থ উৎস হচ্ছে কিয়াস। কিয়াস অর্থ অনুমান করা, তুলনা করা, পরিমাপ করা ইত্যাদি। ইসলামি পরিভাষায়, কুরআন ও সুন্নাহর আইন বা নীতির সাদৃশ্যের ভিত্তিতে বিচার-বুদ্ধি প্রয়োগ করে পরবর্তীতে উদ্ভূত সমস্যার সমাধান দেওয়াকে কিয়াস বলে।
গ আমাদের ব্যবহারিক জীবনে উদ্দীপকে উল্লিখিত পদ্ধতি তথা ইজমার গুরুত্ব অপরিসীম। ইজমার আভিধানিক অর্থ হলো একমত হওয়া, ঐক্যবদ্ধ হওয়া, মতৈক্য প্রতিষ্ঠা করা ইত্যাদি। ব্যবহারিক অর্থে কোনো বিষয় বা কথায় ঐকমত্য পোষণ করাকে ইজমা বলে। ইসলামি পরিভাষায়, শরিয়তের কোনো বিষয়ে একই যুগের মুসলিম উম্মতের পুণ্যবান মুজতাহিদগণের ঐকমত্য পোষণ করাকে ইজমা বলা হয়। ইজমা আল্লাহ তায়ালা প্রদত্ত মুসলমানদের জন্য এক বিশেষ মর্যাদা ও নিয়ামত। আমাদের ব্যবহারিক জীবনে উদ্দীপকে উল্লিখিত বিষয়ের প্রভাব লক্ষ করা যায়। যেমন : নামাজের মধ্যে মোবাইল বেজে উঠলে কী করণীয় তা মূলত ইজমা ও কিয়াসের ভিত্তিতেই নির্ধারিত হয়েছে। অনুরূপ আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার সম্পর্কিত বিধানগুলো ইজমার মাধ্যমেই নির্ধারণ করা হয়েছে।
ঘ উদ্দীপকের উদ্ধৃত অংশে ইজমার কথা বলা হয়েছে। ইসলামি শরিয়তে ইজমার ভ‚মিকা অপরিসীম।
ইজমা শরিয়তের তৃতীয় উৎস। ইজমা শব্দের অর্থ একমত হওয়া, ঐক্যবদ্ধ হওয়া, মতৈক্য প্রতিষ্ঠা করা ইত্যাদি। ব্যবহারিক অর্থে কোনো বিষয় বা কথায় ঐকমত্য পোষণ করাকে ইজমা বলে। ইসলামি পরিভাষায় শরিয়তের কোনো বিষয়ে একই যুগের মুসলিম উম্মতের পুণ্যবান মুজতাহিদগণের ঐকমত্য পোষণ করাকে ইজমা বলা হয়। ইজমা মহানবি (স)-এর পরবর্তী যে কোনো যুগে হতে পারে। ইসলামি শরিয়তে ইজমা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আল-কুরআন ও হাদিসের পরই এর স্থান। এটি শরিয়তের তৃতীয় উৎস ও অকাট্য দলিল। আল-কুরআনের বিভিন্ন আয়াত ও হাদিস দ্বারা ইজমার বৈধতা প্রমাণিত। সাধারণভাবে ইজমার ভিত্তিতে প্রণীত বিধানের ওপর আমল করা ওয়াজিব। ইজমার গুরুত্ব বর্ণনা করতে গিয়ে রাসুল (স) বলেন, আল্লাহ তায়ালা আমার উম্মতকে নিশ্চয়ই গোমরাহির ওপর জমায়েত করবেন না। আল্লাহর হাত (রহমত ও সাহায্য) দলবদ্ধ থাকার ওপর রয়েছে। যে ব্যক্তি বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে সে বিচ্ছিন্ন হয়ে (অবশেষে) দোযখে যাবে। (তিরমিযি)। ইজমা দ্বারা নির্ধারিত বিষয় অকাট্য দলিল হিসেবে সাব্যস্ত। সুতরাং, আমাদের উচিত ইজমা দ্বারা নির্ধারিত বিষয়ের ওপর আমল করা।
প্রশ্ন- ৬  তিলাওয়াতের গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য

জুমুআর সালাতে আশফাক সাহেব ইমামকে খুতবায় বলতে শুনলেন, “যে ঘরে কুরআন তিলাওয়াত করা হয়, আসমানবাসীদের নিকট সে ঘরটি এমন উজ্জ্বল দেখায় যেমন জমিনবাসীদের নিকট নক্ষত্ররাজি উজ্জ্বল দেখায়।” হাদিসটি শোনার পর তিনি প্রতিদিন নিজ ঘরে কুরআন তিলাওয়াত করেন। [দিনাজপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক. তিলাওয়াত অর্থ কী? ১
খ. নাযিরা তিলাওয়াত বলতে কী বোঝায়? ২
গ. নাযিরা তিলাওয়াতে আশফাক সাহেব আর কী কী ফজিলত লাভ করবেন? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. খুতবায় শ্রবণকৃত হাদিসটি কুরআন তিলাওয়াতের গুরুত্ব প্রকাশ করে বিশ্লেষণ কর। ৪

ক তিলাওয়াত শব্দের অর্থ পাঠ করা।
খ আল-কুরআন দেখে পড়াকে নাযিরা তিলাওয়াত বলা হয়। কুরআন মজিদ মুখস্থ পড়া যায়, আবার দেখে দেখেও তিলাওয়াত করা যায়। কুরআন মজিদ শিখতে হলে প্রথমে দেখে দেখে পাঠ করতে হয়। দেখে দেখে কুরআন তিলাওয়াত করা উত্তম কাজ।
গ নাযিরা তিলাওয়াতে আশফাক সাহেব আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি ও সান্নিধ্য লাভ করতে পারেন। আল-কুরআনের নাযিরা তিলাওয়াতের ফজিলত অত্যন্ত বেশি। এর প্রতিটি হরফ তিলাওয়াতেই নেকি পাওয়া যায়। নাযিরা তিলাওয়াতে একটি হরফ পাঠ করলে দশগুণ পরিমাণ নেকি লাভ করা যায়। কুরআন তিলাওয়াত হলো উত্তম ইবাদত। এটি তিলাওয়াতকারীর মর্যাদা সমুন্নত করে। কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে বান্দা আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি ও সান্নিধ্য লাভ করতে পারে। এর মাধ্যমে অন্তর পরিশুদ্ধ হয়। মানুষ নৈতিক ও মানবিক গুণাবলিতে উদ্ভাসিত হয়। প্রকৃতপক্ষে, কুরআনের নাযিরা তিলাওয়াতের দ্বারা আশফাক সাহেব দুনিয়া ও আখিরাতের সফলতা লাভ করতে পারে।
ঘ খুতবায় শ্রবণকৃত হাদিসটিতে কুরআন তিলাওয়াতের গুরুত্ব বিশেষভাবে প্রকাশিত হয়েছে। আল-কুরআন মহান আল্লাহর বাণী। এটি মানুষের প্রতি আল্লাহর এক বিশেষ নিয়ামত। তাই হালকাভাবে আল-কুরআন পাঠ করলেই চলবে না। বরং একে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে তিলাওয়াত করতে হবে। এর মর্মার্থ ও তাৎপর্য উপলব্ধি করতে হবে। এতে বর্ণিত বিষয়াদি সম্পর্কে গভীরভাবে চিন্তা-গবেষণা করতে হবে। তাহলে আমরা আল-কুরআনের জ্ঞান ও শিক্ষা আয়ত্ত করতে পারব। মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে চিন্তা-গবেষণা সহকারে কুরআন তিলাওয়াতের নির্দেশ দিয়েছেন। সর্বোপরি, আল-কুরআন সহিহ-শুদ্ধ ও সুন্দরভাবে পাঠ করাও অত্যাবশ্যক, ভুল বা অসুন্দর সুরে তিলাওয়াত করলে গুনাহ হয়। তাই বলা যায় যে, খুতবায় শ্রবণকৃত হাদিসটিতে কুরআন তিলাওয়াতের গুরুত্ব প্রকাশ পেয়েছে।
প্রশ্ন- ৭  শরিয়তের উৎসসমূহ

রফিক ও কুদ্দুস দুই বন্ধু শরিয়তের বিভিন্ন প্রসঙ্গ নিয়ে আলাপ করছিল। কুদ্দুস বলল, শরিয়ত অনুসরণের জন্য আল-কুরআনই যথেষ্ট। রফিক তখন তাকে বলল, ‘সুন্নাহ, ইজমা ও কিয়াস অনুসরণের জন্যও আল-কুরআনের নির্দেশনা রয়েছে। সুতরাং এসবের অনুসরণ করাও জরুরি।’ [সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, রংপুর]
ক. শরিয়তের তৃতীয় উৎস কোনটি? ১
খ. সুন্নাহ বলতে কী বোঝায়? ২
গ. কুদ্দুসের উক্তিটি শরিয়তের আলোকে ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. রফিকের বক্তব্যের সাথে তুমি কি একমত? উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও। ৪

ক শরিয়তের তৃতীয় উৎস হলো ইজমা।
খ ইসলামি শরিয়তের দ্বিতীয় উৎস হলো সুন্নাহ বা হাদিস। সুন্নাহ অর্থ রীতিনীতি। ইসলামি পরিভাষায় মহানবি (স)-এর বাণী, কর্ম ও তাঁর সমর্থিত রীতিনীতিকে সুন্নাহ বলে। সুন্নাহকে হাদিস নামেও অভিহিত করা হয়। এটি কুরআনের ব্যাখ্যাস্বরূপ।
গ কুদ্দুসের উক্তিটি সঠিক নয়। কারণ শরিয়ত অনুসরণের জন্য শুধু পবিত্র কুরআনই যথেষ্ট নয়, বরং আল-কুরআনের পাশাপাশি হাদিস অনুসরণ করাও আবশ্যক। এমনকি প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে ইজমা ও কিয়াসের অনুসরণও জরুরি। শরিয়তের উৎস চারটি। যথা : ১. কুরআন; ২. সুন্নাহ; ৩. ইজমা; ৪. কিয়াস। ইসলামি শরিয়তের পূর্ণাঙ্গতার জন্য এগুলোর প্রত্যেকটির প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। অথচ উদ্দীপকের কুদ্দুস বলেছে, শরিয়ত অনুসরণের জন্য আল-কুরআনই যথেষ্ট। তার এ উক্তিটি কুরআন ও হাদিসের পরিপন্থী। সূরা আল-হাশরের ৭নং আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘রাসুল তোমাদের যা দেন তা তোমরা গ্রহণ কর। আর যা নিষেধ করেন তা থেকে বিরত থাক।’ সুতরাং প্রমাণিত হয় যে, কুরআনের পাশাপাশি হাদিস অনুসরণ করাও জরুরি। এমনিভাবে কুরআন ও হাদিসের অন্যান্য বর্ণনার মাধ্যমে ইজমা ও কিয়াসের আবশ্যকতাও প্রমাণিত হয়। অতএব বলা যায়, কুদ্দুসের উক্তিটি সঠিক নয়। বরং কুরআন ও হাদিসের সম্পূর্ণ পরিপন্থী।
ঘ রফিকের বক্তব্য সঠিক হওয়ায় আমি তার সাথে সম্পূর্ণ একমত।
আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে শরিয়তের যাবতীয় আদেশ-নিষেধ, বিধি-বিধান ও মূলনীতি অত্যন্ত সংক্ষিপ্তভাবে বর্ণনা করেছেন। মহানবি (স) সেগুলোর প্রয়োজনীয় ব্যাখ্যা দিয়েছেন। অনেক ক্ষেত্রে নিজে আমল করার দ্বারা এসব বিধান হাতে-কলমে শিক্ষা দেন। মহানবি (স)-এর এসব বাণী ও কর্মই হাদিস। সুতরাং কুরআনের বিধি-বিধান অনুসরণের জন্য হাদিস অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। সাহাবিগণ নতুন কোনো সমস্যার সম্মুখীন হলে এবং কুরআন ও হাদিসে তার সমাধান খুঁজে না পেলে বিশিষ্ট সাহাবিগণের মতামত নিয়ে ঐক্যমতের ভিত্তিতে অর্থাৎ ইজমার মাধ্যমে তার সমাধান দিতেন।
শরিয়ত অনুসরণের জন্য উদ্দীপকের কুদ্দুস আল-কুরআন যথেষ্ট মনে করায় রফিক বলল, “সুন্নাহ, ইজমা ও কিয়াসের অনুসরণের জন্যও আল-কুরআনের নির্দেশনা রয়েছে। সুতরাং এসবের অনুসরণ করাও জরুরি।’
মহানবি (স) যখন হযরত মুআয ইবনে জাবাল (রা)-কে ইয়েমেনের বিচারক হিসেবে প্রেরণ করেন, তখন তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন, যখন কোনো সমস্যার উদ্ভব হবে তখন তুমি কীভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে? হযরত মুআয (রা) বললেন, আল্লাহর কিতাব অনুসারে। রাসুল (স) বললেন, যদি আল্লাহর কিতাবে না পাও তাহলে, তিনি বললেন, নবির সুন্নাহ মোতাবেক। রাসুল (স) বললেন, যদি তাতেও না পাও, হযরত মুআয (রা) বললেন, তাহলে আমি আমার বিবেক-বুদ্ধি প্রয়োগ করে সিদ্ধান্ত প্রদান করব। তাঁর উত্তরে মহানবি বললেন, সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি তাঁর রাসুলের দূত দ্বারা এমন উত্তর প্রদান করালেন যাতে তাঁর রাসুল সন্তুষ্ট।’
মহানবি (স)-এর অত্র হাদিসে কিয়াস বা গবেষণার প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে।
উপরিউক্ত আলোচনায় প্রমাণিত হয় যে, কুরআনের পাশাপাশি হাদিস, ইজমা ও কিয়াসের অনুসরণ আবশ্যক। সুতরাং রফিকের বক্তব্যের সাথে আমি সম্পূর্ণ একমত।
প্রশ্ন- ৮  আল-কুরআন

কুরআন মজিদ অবতরণ সম্পর্কে মেহরাব তার ধর্মীয় শিক্ষককে জিজ্ঞাসা করলে শিক্ষক বললেন, কুরআন মজিদ সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ আসমানি গ্রন্থ। এটি মহানবি (স)-এর ওপর দীর্ঘ ২৩ বছর যাবত অবতীর্ণ হতে থাকে। এ সম্মানিত গ্রন্থটি অবতীর্ণ হয়েছে সমগ্র বিশ্বের সর্বকালের মানুষের জন্য। আল্লাহ বলেন, ‘আমি আপনার প্রতি যে কিতাব নাজিল করেছি তা প্রত্যেক বিষয়ের স্পষ্ট ব্যাখ্যাস্বরূপ।”
[সরকারি করোনেশন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, খুলনা]
ক. মহাগ্রন্থ আল-কুরআন কোথায় সংরক্ষিত ছিল? ১
খ. ‘আল-কুরআন সমগ্র বিশ্বের সর্বকালের মানুষের জন্য হিদায়াত স্বরূপ’ Ñ বুঝিয়ে লেখ। ২
গ. উদ্দীপকে আলোচিত গ্রন্থটি মেহরাবের ব্যবহারিক জীবনে কীরূপ প্রভাব ফেলতে পারে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উদ্দীপকে বর্ণিত সর্বশেষ বাণীটির সাথে তুমি কি একমত? মতামত দাও। ৪

ক মহাগ্রন্থ আল-কুরআন লাওহে মাহফুজে সংরক্ষিত ছিল।
খ আল-কুরআন সমগ্র বিশ্বের সর্বকালের মানুষের জন্য। এটি কোনো দেশ, কাল বা জাতির জন্য সীমাবদ্ধ নয়। বরং সকল যুগের সব মানুষের জন্য এটি উপদেশ ও পথনির্দেশক। কুরআনের শিক্ষা কিয়ামত পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। তাছাড়া পূর্ববর্তী সকল আসমানি কিতাবের সারনির্যাসও কুরআনে রয়েছে। তাই বলা যায়, আল-কুরআন সব দেশের, সব সময়ের, সব মানুষের।
গ উদ্দীপকে আলোচিত গ্রন্থটি হলো আল-কুরআন, যা মেহরাবের ব্যবহারিক জীবনে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে। আমরা জানি, মানবজীবনকে নৈতিক ও আদর্শিক পথে পরিচালনা করতে আল-কুরআন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আল-কুরআন মানুষকে আল্লাহ তায়ালার সত্তা, গুণাবলি, ক্ষমতা ইত্যাদি সম্পর্কে ধারণা প্রদান করে। তাছাড়া কুরআনের বর্ণনা দ্বারা মানুষ পরকাল, জান্নাত, জাহান্নাম ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে জানতে পারে। আর এসব বিষয়ের জ্ঞান মানুষকে সত্য ও সুন্দর জীবন গঠনে অনুপ্রাণিত করে। তাই উদ্দীপকের মেহরাবের উচিত আল-কুরআন অধ্যয়ন করে এর শিক্ষা অনুসারে নিজের জীবন গড়া। কেননা আল-কুরআন মানুষকে সব ধরনের কল্যাণের পথনির্দেশ করে এবং অনৈতিক ও অন্যায় কার্যাবলি থেকে বিরত রেখে মানুষকে সৎ ও মানবিক জীবনযাপনে অনুপ্রাণিত করে। সুতরাং মেহরাবের ব্যবহারিক জীবনে আল-কুরআনের অনুসরণ অপরিহার্য। আল-কুরআন অনুসরণে জীবন পরিচালনা করলে তার জীবন হবে নীতিনৈতিকতামণ্ডিত, সুন্দর ও শান্তিময়।
ঘ উদ্দীপকে বর্ণিত সর্বশেষ বাণীটি যেহেতু মহান আল্লাহর, তাই সঙ্গত কারণে আমি বাণীটির সাথে সম্পূর্ণ একমত। আল্লাহ তায়ালা মানবজাতির হিদায়াতের জন্য মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স)-এর ওপর অবতীর্ণ করেন মহাগ্রন্থ আল-কুরআন। এটি ইসলামি শরিয়তের সকল বিধি-বিধানের মূল উৎস। মানবজীবনের প্রয়োজনীয় সকল বিষয়ের সমাধানসূচক মূলনীতি ও ইঙ্গিত আল-কুরআনে বিদ্যমান। তাই উদ্দীপকের মেহরাবের ধর্মীয় শিক্ষক মহাগ্রন্থ আল-কুরআন সম্পর্কে বর্ণনার শেষ পর্যায়ে পবিত্র কুরআনের সূরা আন-নাহলের ৮৯নং আয়াতটি তুলে ধরেন, যেখানে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আমি আপনার প্রতি যে কিতাব নাজিল করেছি, তা প্রত্যেক বিষয়ের স্পষ্ট ব্যাখ্যা স্বরূপ।’ এখানে কুরআনকে যাবতীয় বিষয়ের বিশ্লেষণকারী বলা হয়েছে। বস্তুত, কুরআনে সব বিষয়েরই মূলনীতি বিদ্যমান রয়েছে। সেসব মূলনীতির আলোকেই মহানবি (স) হাদিস বর্ণনা করেছেন। কিছু কিছু বিবরণ ইজমা ও কিয়াসের আওতায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এতে বোঝা যায়, হাদিস, ইজমা ও কিয়াস থেকে যেসব মাসআলা নির্গত হয়েছে সেগুলো পরোক্ষভাবে আল-কুরআনে বর্ণিত হয়েছে। উপরিউক্ত আলোচনায় প্রতীয়মান হয় যে, আল-কুরআন প্রত্যেক বিষয়ের স্পষ্ট ব্যাখ্যাস্বরূপ। তাই আমি উদ্দীপকে বর্ণিত আল্লাহ তায়ালার বাণীটির সাথে সম্পূর্ণ একমত।
প্রশ্ন- ৯  তিলাওয়াত : গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য

হিফজুল বারি মসজিদে বয়স্ক পুরুষদেরকে সহিহভাবে কুরআন শিক্ষার ব্যবস্থা করেন। বিশুদ্ধ কুরআন তিলাওয়াত অপরিহার্য। অন্যথায় সাওয়াবের পরিবর্তে কুরআন তিলাওয়াতকারীকে গুনাহগার হতে হয়। আল্লাহ তায়ালা উক্ত বিষয়ে তাগিদ দিয়ে বলেছেন, “ওয়ারাত্তিলিল কুরআনা তারতিলা”। [বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ]
ক. কুরআন শব্দটির অর্থ কী? ১
খ. কুরআন মজিদ সম্পর্কে ফরাসি পণ্ডিতের উক্তিটি উল্লেখ কর। ২
গ. হিফজুল বারির কর্মকাণ্ড ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত আল্লাহপাকের বাণীটির বিষয়বস্তুর গুরুত্ব বিশ্লেষণ কর। ৪

ক কুরআন শব্দের অর্থ পঠিত।
খ কুরআন মজিদ সম্পর্কে একজন ফরাসি পণ্ডিত যথার্থই বলেছেন, “কুরআন বিজ্ঞানীদের জন্য একটি বিজ্ঞান সংস্থা, ভাষাবিদদের জন্য এক শব্দকোষ, বৈয়াকরণের জন্য এক ব্যাকরণ গ্রন্থ এবং বিধানের জন্য একটি বিশ্বকোষ।”
গ হিফজুল বারির কর্মকাণ্ড প্রশংসনীয় এবং ইসলামের দৃষ্টিতে তিনি সর্বোত্তম ব্যক্তি। আল-কুরআন সকল জ্ঞান বিজ্ঞানের আধার। আল-কুরআনের শিক্ষা মানুষকে সুশিক্ষিত করে তোলে ও নৈতিকতা বিকাশে সহায়তা করে। তাই অর্থ বুঝে সহিহভাবে কুরআন তিলাওয়াত করতে হবে এবং তদনুযায়ী আমল করতে হবে। তবে কুরআন মজিদ ভুল ও অশুদ্ধভাবে তিলাওয়াত করলে একদিকে যেমন গুনাহ হয় তেমনি অশুদ্ধ তিলাওয়াতে নামায শুদ্ধ হয় না। এ কারণেই উদ্দীপকের হিফজুল বারি মসজিদে বয়স্ক পুরুষদের সহিহভাবে কুরআন শিক্ষার ব্যবস্থা করেন। তাই মহানবি (স)-এর ভাষ্যমতে তিনি সর্বোত্তম ব্যক্তি। বস্তুত শুদ্ধ ও সুন্দররূপে কুরআন তিলাওয়াত করলে এবং এর মর্মার্থ বুঝে সে অনুযায়ী আমল করলে মানুষ প্রভ‚ত সম্মান ও মর্যাদার অধিকারী হয়। অপরদিকে অশুদ্ধ তিলাওয়াতের কারণে মানুষ গুনাহগার হয়। এ উপলব্ধি থেকেই উদ্দীপকের হিফজুল বারি এলাকার বয়স্ক যুবকদের সহিহ-শুদ্ধভাবে কুরআন তিলাওয়াতের যে ব্যবস্থা করেন তা সত্যিই প্রশংসনীয়। আর এ কারণে ইসলামের দৃষ্টিতে তিনি সর্বোত্তম ব্যক্তি।
ঘ উদ্দীপকে উল্লিখিত আল্লাহ পাকের বাণীটিতে তাজবিদসহ কুরআন তিলাওয়াতের গুরুত্ব বর্ণিত হয়েছে। প্রত্যেক ভাষা সুন্দর ও শুদ্ধভাবে পাঠ করার জন্য যেমন নিয়মকানুন থাকে, তেমনি আরবি ভাষায় অবতীর্ণ কুরআন মজিদ শুদ্ধভাবে তিলাওয়াত করার জন্য নির্দিষ্ট নিয়মকানুন রয়েছে। এ নিয়মকানুনই তাজবিদ। তাজবিদের সাথে কুরআন তিলাওয়াত না করলে তা সহিহ শুদ্ধ হয় না। আর ভুল ও অশুদ্ধভাবে কুরআন তিলাওয়াত করলে গুনাহ হয় এবং এতে নামাযও শুদ্ধ হয় না। কেননা অশুদ্ধ তিলাওয়াতের কারণে অনেক ক্ষেত্রে অর্থের ব্যাপক পার্থক্য ঘটে। তাই তাজবিদসহ কুরআন তিলাওয়াত করতে আল্লাহ তায়ালা নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, ‘ওয়ারাত্তিলিল কুরআনা তারতিলা।’ উদ্দীপকে উল্লিখিত আল্লাহ তায়ালার এ বাণীটি সূরা আল মুয্যাম্মিলের ৪নং আয়াত। এর অর্থ হলো- ‘আপনি কুরআন আবৃত্তি করুন ধীরে ধীরে ও সুস্পষ্টভাবে।’ এ আয়াতে তাজবিদসহ সহিহ শুদ্ধভাবে কুরআন তিলাওয়াতের গুরুত্ব ফুটে উঠেছে। অন্যদিকে মহানবি (স)ও এ বিষয়ে বলেছেন, ‘তোমরা সুন্দর স্বরে কুরআন পাঠ কর। কেননা সুন্দর স্বরে কুরআন পাঠ কুরআনের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেয়।’ সুতরাং বলা যায়, আল-কুরআন সহিহ শুদ্ধ ও সুন্দরভাবে পাঠ করা অত্যাবশ্যক যা উদ্দীপকে উল্লিখিত আল্লাহর বাণীতে প্রতিফলিত হয়েছে।
প্রশ্ন- ১০  শরিয়তের দ্বিতীয় উৎস: সুন্নাহ

তানভীর তার বাবাকে বলল, বাবা আমি পবিত্র কুরআন অধ্যয়ন করে দেখেছি সেখানে সালাত, যাকাত, সাওম, হজ ইত্যাদি পালনের নির্দেশ রয়েছে। কিন্তু কীভাবে পালন করব তার কোনো বর্ণনা নেই। আমি এর বিস্তারিত বিবরণ কোথায় পেতে পারি? পিতা বললেন, তুমি শরিয়তের দ্বিতীয় উৎস অধ্যয়ন কর। এটা পবিত্র কুরআনের ব্যাখ্যা। [ভোলা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক. হাদিসের সর্বপ্রথম বিশুদ্ধ সংকলন কোনটি? ১
খ. তাকরিরি হাদিস বলতে কী বোঝায়? ২
গ. শরিয়তের দ্বিতীয় উৎস বলতে তানভীরের পিতা কোন বিষয়টির প্রতি ইঙ্গিত করেছেন? ৩
ঘ. শরিয়তের দ্বিতীয় উৎসকে কুরআনের ব্যাখ্যা বলাটা কতটুকু যুক্তিসঙ্গত? বিশ্লেষণ কর। ৪

ক হাদিসের সর্বপ্রথম বিশুদ্ধ সংকলন হলো আল-মুয়াত্তা।
খ তাকরিরি হাদিস হলো মৌন সম্মতি জ্ঞাপক হাদিস। রাসুলুল্লাহ (স)-এর অনুমোদনসূচক হাদিসই হলো তাকরিরি হাদিস। অর্থাৎ সাহাবিগণ রাসুলুল্লাহ (স)-এর সামনে কোনো কথা বলেছেন কিংবা কোনো কাজ করেছেন কিন্তু রাসুলুল্লাহ (স) তা নিজে করেননি এবং তাতে বাধাও দেননি বরং মৌনতা অবলম্বন করে তাতে সম্মতি বা অনুমোদন দিয়েছেন। এরূপ অবস্থা বা বিষয়ের বর্ণনা যে হাদিসে এসেছে সে হাদিসকে তাকরিরি বা সম্মতিসূচক হাদিস বলা হয়।
গ শরিয়তের দ্বিতীয় উৎস বলতে তানভীরের পিতা হাদিসের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। হাদিস অর্থ কথা বা বাণী। ইসলামি পরিভাষায় হাদিস বলতে মহানবি হযরত মুহম্মদ (স)-এর বাণী, কর্ম ও মৌনসম্মতিকে বোঝানো হয়। হাদিস বা সুন্নাহ শরিয়তের অন্যতম দলিল ও উৎস। এটি পবিত্র কুরআনের ব্যাখ্যাস্বরূপ। আল্লাহ তায়ালা কুরআন মজিদে বিভিন্ন বিষয়ের সংক্ষিপ্ত মূলনীতি বর্ণনা করেছেন। আর মহানবি (স) তাঁর হাদিসের মাধ্যমে এসব বিধিবিধান ও বিষয়সমূহ ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করেছেন। তাই উদ্দীপকের তানভীর তার পিতার কাছে সালাত, যাকাত, সাওম, হজ ইত্যাদি বিধান কীভাবে পালন করবে তা জানতে চাইলে তার পিতা তাকে শরিয়তের দ্বিতীয় উৎস অধ্যয়ন করতে বলেন যা সুন্নাহ বা হাদিস। কেননা সুন্নাহ বা হাদিস হলো আল-কুরআনের পরিপূরক। এর মাধ্যমেই কুরআনে বর্ণিত বিধিবিধান ও বিষয়সমূহের ব্যাখ্যা করা হয়েছে। আল-কুরআনে হাদিসকে শরিয়তের দলিল হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। সুতরাং প্রমাণিত হয় যে, হাদিস শরিয়তের অন্যতম দলিল এবং দ্বিতীয় উৎস।
ঘ তানভীরের পিতা শরিয়তের দ্বিতীয় উৎসকে পবিত্র কুরআনের ব্যাখ্যা বলেছেন। তার এ বক্তব্য যথার্থ ও যুক্তিসঙ্গত। ইসলামি শরিয়তের দ্বিতীয় উৎস হলো সুন্নাহ বা হাদিস। আর হাদিস বলতে মহানবি (স)-এর বাণী, কর্ম ও মৌনসম্মতিকে বোঝানো হয়। আল্লাহ তায়ালা কুরআন মজিদে বিভিন্ন বিষয়ের সংক্ষিপ্ত মূলনীতি বর্ণনা করেছেন। আর মহানবি (স) তাঁর সুন্নাহ বা হাদিসের মাধ্যমে এসব বিধিবিধান ও বিষয়সমূহ ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করেছেন। পবিত্র কুরআনের সূরা-আন নাহল এর ৪৪নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আর আমি আপনার প্রতি কুরআন নাজিল করেছি মানুষকে সুস্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য যা তাদের প্রতি নাজিল করা হয়েছে।’ একটি উদাহরণের মাধ্যমে বিষয়টি স্পষ্ট হতে পারে। যেমন : আল-কুরআনে বলা হয়েছে, “তোমরা সালাত কায়েম কর।” কিন্তু কোথায়, কীভাবে, কোন সময়ে সালাত আদায় করতে হবে এর কোনো পূর্ণাঙ্গ বর্ণনা আল-কুরআনে পাওয়া যায় না। রাসুল (স)-এ বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি সালাতের সমস্ত নিয়ম-কানুন তাঁর হাদিস বা সুন্নাহর মাধ্যমে বিশ্লেষণ করেছেন। এ কারণে উদ্দীপকের তানভীরের পিতা সালাত, যাকাত, সাওম, হজ ইত্যাদি বিধানের বিস্তারিত বিধান জানতে তানভীরকে শরিয়তের দ্বিতীয় উৎস তথা হাদিস অধ্যয়ন করতে পরামর্শ দেন এবং বলেন, এটা পবিত্র কুরআনের ব্যাখ্যা। সুতরাং বলা যায়, শরিয়তের দ্বিতীয় উৎস হাদিসকে কুরআনের ব্যাখ্যা বলাটা যথার্থ ও যুক্তিসঙ্গত।

বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর

 বোর্ড ও সেরা স্কুলের বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১. ভিক্ষুকদের তিরস্কার না করে যথাসম্ভব সাহায্য করতে হবে। এটি কোন সূরার শিক্ষা? [স. বো. ’১৬]
ক আস-শামস খ আল-ইনশিরাহ
 আদ-দুহা ঘ আত-তীন
২. হিজরি কোন শতক হাদিস সংকলনের স্বর্ণযুক্ত? [স. বো. ’১৬]
ক প্রথম খ দ্বিতীয়  তৃতীয় ঘ চতুর্থ
৩. ‘বরং এটি সম্মানিত কুরআন যা লাওহে মাহফুজে লিপিবদ্ধ রয়েছে’আয়াতটি কোন সূরার অন্তর্গত? [স. বো. ’১৬]
ক বাকারা খ আলে ইমরান  আল-বুরুজ ঘ আন-নিসা
৪. فَارْغَبْ (ফারগাব) শব্দের অর্থ কী? [স. বো. ’১৬]
ক আমি উচ্চ করেছি খ আমি প্রশস্ত করেছি
গ অতঃপর পরিশ্রম করুন  অনন্তর মনোনিবেশ করুন
৫. হাদিসের মূল বক্তব্যকে কী বলা হয়? [স. বো. ’১৬]
ক সনদ খ রাবী গ রেওয়ায়েত  মতন
৬. যারা আল-কুরআনকে চিন্তা-গবেষণা করে পড়ে না তাদের অন্তরকে কিসের সাথে তুলনা করা হয়েছে? [স. বো. ’১৬]
ক শূন্য ঘর  তালাবদ্ধ অন্তর
গ বিরান বাড়ি ঘ পুরাতন দেয়াল
৭. ‘আর তাদের কাজকর্ম সম্পাদিত হয় পারস্পরিক পরামর্শের ভিত্তিতে।’ আয়াতটি দ্বারা ইসলামি শরিয়তের কোন উৎসের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে? [স. বো. ’১৬]
ক কুরআন খ হাদিস  ইজমা ঘ কিয়াস
৮. ইয়ামামার যুদ্ধে বহু সংখ্যক কুরআনের হাফিজ শাহাদাতবরণ করেন। ফলে হযরত উমর (রা) উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। তার উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ [স. বো. ’১৬]
ক অধিক সাহাবির শাহাদাতবরণ খ মুসলমানদের পরাজয়ের আশঙ্কা
 কুরআন বিলুপ্তির আশঙ্কা ঘ নেতৃত্বশূন্য হওয়ার আশঙ্কা
৯. যে হাদিসের ভাষা রাসুলুল্লাহ (স)-এর এবং ভাব আল্লাহ তায়ালার সেটি কোন ধরনের হাদিস? [স. বো. ’১৫]
ক মারফু  কুদসি গ মওক‚ফ ঘ মাকত‚
১০. মাদানি সূরার বৈশিষ্ট্য হলো, এতে বর্ণিত হয়েছেÑ [স. বো. ’১৫]
ক তাওহিদ ও রিসালাত খ আখিরাত ও কিয়ামত
গ শিরক ও কুফর  হালাল ও হারাম
১১. اَلْـقَـمَـرُ (আল কামারু) শব্দের অর্থ কী? [স. বো. ’১৫]
ক সূর্য  চন্দ্র গ জ্যোতি ঘ নক্ষত্র
১২. মুসলিম মনীষীগণ শরিয়তের বিষয়বস্তুকে প্রধানত কয়টি ভাগে ভাগ করেছেন? [স. বো. ’১৫]
 তিন খ চার গ পাঁচ ঘ ছয়
১৩. বিশ্বস্ত, সত্যবাদী মুসলিম ব্যবসায়ী কিয়ামতের দিন কাদের সাথে থাকবেন? [স. বো. ’১৫]
 শহিদ খ হাফিজ গ আলিম ঘ মুমিন
১৪. রমযান মাসে তারাবির নামায বিশ রাকআত হওয়ার তথ্যসূত্র কোনটি?
[স. বো. ’১৫]
ক কুরআন খ সুন্নাহ  ইজমা ঘ কিয়াস
১৫. মকবুল মিয়া রাগের মাথায় তার ছাগলটিকে গলা টিপে হত্যা করে এবং পরে জবাই করে উহার গোশত খায়। মকবুল মিয়ার কাজটিÑ [স. বো. ’১৫]
ক হালাল  হারাম গ মুবাহ ঘ মাকরূহ
১৬. “অতএব হে চক্ষুস্মানগণ। তোমরা শিক্ষা গ্রহণ কর।” Ñ আয়াতখানা দ্বারা কোনটিকে বুঝানো হয়েছে? [স. বো. ’১৫]
ক কুরআন খ সুন্নাহ গ ইজমা  কিয়াস
১৭. ইয়ামামার যুদ্ধ কার বিরুদ্ধে পরিচালিত হয়েছিল?
[রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ, ঢাকা]
ক তোলায়হা খ গোলাম আহমাদ
 মুসায়ালমা ঘ সাজাহ
১৮. ত‚র পর্বতে কোন কিতাব নাজিল হয়েছে? [রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ, ঢাকা]
 তাওরাত খ যাবুর গ ইনজিল ঘ কুরআন
১৯. ইয়াতিমদের প্রতি কঠোর হওয়া এবং তাদের সম্পদ জোর করে দখল করা কাদের বৈশিষ্ট্য? [রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ, ঢাকা]
ক লোভীদের খ ইহুদিদের
 কাফির ও মুনাফিকদের ঘ জালিমদের
২০. হাদিসের রাবি পরম্পরাকে কী বলা হয়? [রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ, ঢাকা]
 সনদ খ রিওয়ায়াত গ মতন ঘ তাদবীন
২১. ‘জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত অত্যন্ত মূল্যবান’Ñ এটি কোন সূরার শিক্ষা?
[আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ, মতিঝিল, ঢাকা]
ক সূরা আশ-শামস খ সূরা আদ-দুহা
 সূরা আল-ইনশিরাহ ঘ সূরা আল-মাউন
২২. সহিফা ‘আস-সাদিকা এর রচয়িতা হচ্ছেনÑ
[আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ, মতিঝিল, ঢাকা]
ক হযরত মুসআব ইবনে উমায়র (রা)
খ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা (রা)
গ হযরত মুগিরা ইবনে শুবা (রা)
 হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস (রা)
২৩. (খাফিফাতানে) শব্দের অর্থ?
[আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ, মতিঝিল, ঢাকা]
ক দুটি বাক্য  খুবই সহজ গ খুবই প্রিয় ঘ খুবই ভারী
২৪. ‘নিশ্চয় আমি কুরআনকে উপদেশ গ্রহণের জন্য সহজ করে দিয়েছি। অতএব কোনো উপদেশ গ্রহণকারী আছে কি? এটি কোন সূরার আয়াত?
[আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ, মতিঝিল, ঢাকা]
ক সূরা মুহাম্মদ খ সূরা আদ-দুখান
 সূরা আল-কামার ঘ সূরা আল-বুরুজ
২৫. ‘ইসলামে বান্দার হক তথা মানবাধিকারের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে’Ñ এটি কীসের মাধ্যমে জানা যায়? [আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ, মতিঝিল, ঢাকা]
ক কুরআনের মাধ্যমে
খ হাদিস ও ইজমার মাধ্যমে
 কুরআন ও হাদিসের মাধ্যমে
ঘ কুরআন, হাদিস, ইজমা ও কিয়াসের মাধ্যমে
২৬. ইজমার ভিত্তিতে প্রণীত বিধানের ওপর আমল করাÑ
[গভ. ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজ, ঢাকা]
ক ফরজ  ওয়াজিব গ সুন্নত ঘ মুস্তাহাব
২৭. কোন সময়ে প্রথম ইজমার ব্যবহার লক্ষ করা যায়? [মাইলস্টোন কলেজ, ঢাকা]
 রাসুলুল্লাহ (স)-এর সময়ে খ সাহাবিগণের সময়ে
গ তাবিঈগণের সময়ে ঘ আধুনিক যুগে
২৮. হাদিসও একপ্রকারÑ [ময়মনসিংহ জিলা স্কুল]
ক কুরআনের ব্যাখ্যা  ওহি গ সুন্নাহ ঘ স্বপ্নাদেশ
২৯. যার ভাব, অর্থ ও মূলকথা আল্লাহ তায়ালার তা হলোÑ [ময়মনসিংহ জিলা স্কুল]
ক কুরআন খ হাদিস  হাদিসে কুদসি ঘ মাকতু হাদিস
৩০. অর্থÑ [ময়মনসিংহ জিলা স্কুল]
 নিঝুম হয় খ বর্ণনা গ সফলকাম ঘ সুবিন্যস্ত
৩১. হারাম বস্তু নিষিদ্ধ হওয়ার মূল কারণ কী? [খুলনা জিলা স্কুল]
ক অপচয়  অকল্যাণ গ অতিরিক্ত ঘ অযাচিত
৩২. শরিয়তের দ্বিতীয় উৎস কোনটি? [খুলনা জিলা স্কুল]
ক কুরআন  সুন্নাহ গ ইজমা ঘ কিয়াস
৩৩. শরিয়ত শব্দের অর্থ [বরিশাল জিলা স্কুল]
 পথ খ পুল গ ইহকাল ঘ হাশর
৩৪. “তোমরাই শ্রেষ্ঠ উম্মত, মানবজাতির জন্য তোমাদের আবির্ভাব”Ñ এ আয়াত দ্বারা কীসের গুরুত্ব ও বৈধতা প্রমাণিত হয়? [বরিশাল জিলা স্কুল]
ক কিয়াস খ হাদিস  ইজমা ঘ কুরআন
৩৫. আল­াহ তায়ালা কদরের রাতে গোটা কুরআন কোথায় নাজিল করেন?
[পাবনা জিলা স্কুল]
ক বাইতুল হামদ নামক স্থানে খ বাইতুল মামুর নামক স্থানে
 বাইতুল ইযযাহ নামক স্থানে ঘ বাইতুল­াহ নামক স্থানে
৩৬. কোন খলিফা সরকারিভাবে হাদিস সংগ্রহ ও সংকলনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন? [সরকারি করোনেশন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, খুলনা]
ক হযরত আবু বকর (রা) খ হযরত উমর (রা)
গ হযরত উসমান (রা)  হযরত উমর ইবনে আব্দুল আযিয (রা
৩৭. ‘আমিই কুরআন অবতীর্ণ করেছি এবং অবশ্যই আমি এর সংরক্ষক।’এটি কার উক্তি? [ঝিনাইদহ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
 আল্লাহ তায়ালা খ মুহাম্মদ (স)
গ হযরত ঈসা (আ) ঘ হযরত জিবরাইল (আ)
৩৮. আত্ তাজিরু- শব্দের অর্থ কী? [পুলিশ লাইন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, যশোর]
 ব্যবসায়ী খ চাকরিজীবী গ লেখক ঘ কর্মকার
৩৯. কুরআন শিক্ষাদানের জন্য রাসুলুল­াহ (স) সাহাবিদের কোথায় প্রেরণ করতেন? [সেন্ট জোসেফ উচ্চ বিদ্যালয়, খুলনা]
ক সিরিয়ায় খ ফিলিস্তিনে গ আবিসিনিয়ায়  প্রত্যন্ত অঞ্চলে
৪০. ‘নিশ্চয়ই কষ্টের সাথে স্বস্তি রয়েছে। এটি কোন সুরার অন্তর্গত?
[সেন্ট জোসেফ উচ্চ বিদ্যালয়, খুলনা]
ক সুরা আত্তীন খ সুরা আদ্দুহা
গ সুরা আল-কদর  সুরা আল-ইনশিরাহ
৪১. সূরা আশ-শামস এর আয়াত সংখ্যা কত? [বাংলাদেশ নৌবাহিনী স্কুল এন্ড কলেজ, খুলনা]
ক ১৩টি খ ১৪টি  ১৫টি ঘ ১৬টি
৪২. সূরা আদ-দুহা কুরআনের কততম সূরা? [বাংলাদেশ নৌবাহিনী স্কুল এন্ড কলেজ, খুলনা]
ক ৯২তম  ৯৩তম গ ৯৪তম ঘ ৯৫তম
৪৩. সূরা আল-ইনশিরাহ কোথায় অবতীর্ণ হয়?
[বাংলাদেশ নৌবাহিনী স্কুল এন্ড কলেজ, খুলনা]
 মক্কায় খ মদিনায় গ তায়েফে ঘ জিদ্দায়
৪৪. সুন্নাতে যায়িদাহ এর উদাহরণ হলো [সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়]
ক ফজরের সুন্নত খ যোহরের সুন্নত
 আসরের সুন্নত ঘ মাগরিবের সুন্নত
৪৫. যে সমস্ত কাজের প্রতি রাসুল (স) উম্মতকে উৎসাহ প্রদান করেছেন, তাকে কী বলে? [ক্যান্টেনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ, রংপুর]
ক ওয়াজিব খ সুন্নত  মুস্তাহাব ঘ মুবাহ
৪৬. ওয়াজিব অস্বীকার করলে মানুষ কী হয় না?
[ক্যান্টেনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ, রংপুর]
ক মুুমিন  কাফির গ মুনাফিক ঘ ফাসিক
৪৭. “আমার উম্মতের উত্তম ইবাদত হলো কুরআন তিলাওয়াত”- এটি কোন হাদিসে আছে? [ক্যান্টেনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ, রংপুর]
ক বুখারি খ তিরমিযি  বায়হাকি ঘ আবু দাউদ
৪৮. সম্পূর্ণ কুরআন নাজিল হতে বছর লেগেছিল
[সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, হেলেনাবাদ, রাজশাহী]
ক ২০  ২৩ গ ২৫ ঘ ২৭
৪৯. সর্বপ্রথম সংকলিত হাদিস গ্রন্থের নাম কী?
[নওয়াব ফয়জুন্নেছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, কুমিল­া]
ক বুখারি খ মুসলিম গ তিরমিযি  মুয়াত্তা
৫০. জনৈক মুসলিম ব্যক্তির মৃত্যুর পর তার প্রতিবেশী জানাযায় অংশগ্রহণ করেননি। এতে সে ইসলামের কোন বিধান পালন করেননি?
[ব−ু-বার্ড স্কুল এন্ড কলেজ, সিলেট]
ক ফরজে আইন  ফরজে কিফায়া
গ ওয়াজিব ঘ সুন্নত
৫১. কুরআনের আয়াতের ক্রমধারা রক্ষা করাÑ [চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়]
ক ফরজ খ ওয়াজিব  সুন্নত ঘ মুস্তাহাব
৫২. হালাল উপার্জনে কী নিহিত থাকে? [চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়]
ক আর্থিক লাভ খ মর্যাদা লাভ  কল্যাণ ঘ পরিশ্রম
৫৩. ইসলাম শিক্ষার মূল উৎস কোনটি? [নাসিরাবাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, চট্টগ্রাম]
 দুটি খ তিনটি গ চারটি ঘ পাঁচটি
৫৪. পবিত্র কুরআন নাযিলের সূচনা কোন শব্দ দ্বারা?
[নাসিরাবাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, চট্টগ্রাম]
ক আলহামদু খ কুল গ ইয়াসিন  ইকরা
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৫৫. রাসুলুল্লাহ (স) এর জীবদ্দশায় হাদিস লিখে রাখা নিষেধ ছিল। কারণ [স. বো. ’১৬]
র. তখন আল-কুরআন নাযিল হচ্ছিল
রর. হাদিস ও কুরআনের সংমিশ্রণের আশঙ্কা ছিল
ররর. আরবদের স্মৃতিশক্তি ছিল অসাধারণ
নিচের কোনটি সঠিক?
 র ও রর খ রর ও ররর গ র ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৫৬. রফিক একজন আদর্শ শিক্ষার্থী। তার বৈশিষ্ট্য হলো [স. বো. ’১৬]
র. না বুঝে সবকিছু মুখস্থ করা
রর. সুশঙ্খল জীবন-যাপনে অভ্যস্ত হওয়া
ররর. জ্ঞান লাভের ক্ষেত্রে লজ্জাশীলতা পরিহার করা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর  রর ও ররর গ র ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৫৭. মুমিন ব্যক্তি সর্বোচ্চ কল্যাণ লাভ করেÑ [রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ, ঢাকা]
র. যিকিরের মাধ্যমে
রর. সবরের মাধ্যমে
ররর. শোকরের মাধ্যমে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
৫৮. তাকরিরি হাদিসের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এতে রাসূল (স) এরÑ [নওগাঁ জিলা স্কুল]
র. বক্তব্য অনুপস্থিত রর. কর্ম অনুপস্থিত
ররর. অনুমোদন উপস্থিত
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
৫৯. কাজের জন্য অতিরিক্ত অর্থের দাবি [ঝিনাইদহ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
র. জুলুমের শামিল রর. ঘুষের শামিল
ররর. মানবাধিকারের শামিল
নিচের কোনটি সঠিক?
 র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ. র, রর ও ররর
৬০. আসমান থেকে একত্রে অবতীর্ণ হওয়া কিতাবÑ [পুলিশ লাইন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, যশোর]
র. তাওরাত রর. কুরআন
ররর. ইঞ্জিল
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর  র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৬১. পবিত্র কুরআনের আলোকে জীবন গঠন করে জনাব তুহিন নিজেকে রক্ষা করতে পারবেনÑ [ভোলা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
র. পথভ্রষ্টতা থেকে
রর. গোমরাহি থেকে
ররর. হিদায়াত থেকে
নিচের কোনটি সঠিক?
 র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৬২. রহিম ও করিম কুরআন তিলাওয়াত করবেÑ
[সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, হেলেনাবাদ, রাজশাহী]
র. তাজবিদ সহকারে রর. সুললিত কণ্ঠে
ররর. দেখে দেখে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
৬৩. মক্কি সূরার বৈশিষ্ট্যের বর্ণনা করা হয়েছেÑ
[নওয়াব ফয়জুন্নেছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, কুমিল­া]
র. শিরক কুফরের পরিচয় রর. মুনাফিকদের ষড়যন্ত্রের কথা
ররর. শরিয়তের সাধারণ নীতিমালা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর  র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৬৪. অত্যাচারীকে কীভাবে সাহায্য করা যায়? [ব−ু-বার্ড স্কুল এন্ড কলেজ, সিলেট]
র. যুলুম করতে সহায়তা করে রর. যুলুম করা থেকে প্রতিরোধ করে
ররর. যুলুম করা থেকে নিরুৎসাহিত করে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র খ রর গ র ও রর  রর ও ররর
৬৫. মহানবি (স)Ñএর যুগে কুরআনের আয়াত লিখে রাখা হতোÑ
[চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়]
র. প্রস্তর খণ্ডে রর. বৃক্ষের পত্রে
ররর. কাগজে
নিচের কোনটি সঠিক?
 র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
অভিন্ন তথ্যভিত্তিক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ৬৬ ও ৬৭নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
কুরবানির গোশত যথারীতি ধোয়ার পরও মিসেস ‘খ’ দেখতে পান যে কিছু রক্ত পানির সাথে বেরিয়ে আসছে। এমতাবস্থায় তিনি উহা রান্না করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে খান। [স. বো. ’১৬]
৬৬. উক্ত গোশত খাওয়ার ব্যাপারে ইসলামের বিধান কী?
ক হারাম  হালাল গ মাকরহ ঘ মুবাহ
৬৭. মিসেস ‘খ’ এর উক্ত কাজের মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে
 হালাল-হারাম বিষয়ক জ্ঞানের যথার্থতা
খ হালাল-হারাম বিষয়ক জ্ঞানের অজ্ঞতা
গ হালাল-হারাম বিষয়ে উদাসীনতা
ঘ গোশত খাওয়ার চরম আকাক্সক্ষা
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ৬৮ ও ৬৯নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
ফাহিম সালাত আদায় করতে গিয়ে রুকু থেকে উঠে সোজা হয়ে না দাঁড়িয়ে সিজদায় চলে যায়। [স. বো. ’১৫]
৬৮. ফাহিম শরিয়তের কোন বিধানটি পরিত্যাগ করেছেন?
ক সুন্নত খ মুস্তাহাব  ওয়াজিব ঘ ফরজ
৬৯. ফাহিম যে বিধান লঙ্ঘন করেছে তার অনুরূপ বিধানÑ
র. দুই ঈদের সালাত আদায় করা রর. বিতরের সালাত আদায় করা
ররর. আযান ও ইকামত
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র  র ও রর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ৭০ ও ৭১ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
ফয়সাল সাহেব মসজিদ কমিটির সভাপতি হওয়ার পর মসজিদে সকাল বিকাল ফ্রি কুরআন শিক্ষা চালু করেন। বিশেষ করে রমযান মাসে বয়স্ক মুসল্লিদের জন্য ও যুহর নামাযের পর ফ্রি কুরআন শিক্ষা চালু করেন।
[আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ, মতিঝিল, ঢাকা]
৭০. ফয়সাল সাহেবের কুরআন শিক্ষা চালুর উদ্দেশ্যÑ
র. ইসলামে জ্ঞানার্জন ফরজ
রর. এলাকাবাসীর প্রশংসা অর্জন
ররর. মসজিদের কল্যাণ সাধন
নিচের কোনটি সঠিক?
 র খ রর গ র ও রর ঘ র, রর ও ররর
৭১. ফয়সাল সাহেবের এ মহৎ কাজের ফলেÑ
ক মসজিদের আয় বৃদ্ধি পাবে  সমাজের কল্যাণ হবে
গ মসজিদের ব্যয় হ্রাস পাবে ঘ সন্ত্রাস দূর হবে

Leave a Reply