নবম-দশম শ্রেণির বা এসএসসি পদার্থবিজ্ঞান দ্বিতীয় অধ্যায় জ্ঞানমূলক ও অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর দেখতে নিচে চোখ রাখুন। এখানে পর্যায়ক্রমে আরো সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন যোগ করা হবে।
নবম-দশম শ্রেণির পদার্থবিজ্ঞান ২য় অধ্যায় জ্ঞানমূলক ও অনুধাবনমূলক প্রশ্ন
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন \ ১ \ প্রসঙ্গ কাঠামো কাকে বলে?
উত্তর : যে দৃঢ় বস্তুর সাথে তুলনা করে অন্য বস্তুর অবস্থান, স্থিতি, গতি ইত্যাদি নির্ণয় করা হয় তাকে প্রসঙ্গ কাঠামো বলে।
প্রশ্ন \ ২ \ ঘূর্ণন গতি কাকে বলে?
উত্তর : যখন কোনো বস্তু কোনো নির্দিষ্ট বিন্দু বা অক্ষ থেকে বস্তু কণাগুলোর দূরত্ব অপরিবর্তিত রেখে ঐ বিন্দু বা অক্ষকে কেন্দ্র করে ঘোরে তখন সে বস্তুর গতিকে ঘূর্ণন গতি বলে।
প্রশ্ন \ ৩ \ পর্যাবৃত্ত গতি কাকে বলে?
উত্তর : কোনো গতিশীল বস্তুকণার গতি যদি এমন হয় যে, এটি এর গতিপথে কোনো নির্দিষ্ট বিন্দুকে নির্দিষ্ট সময় পর পর একই দিক থেকে অতিক্রম করে, তাহলে সেই গতিকে পর্যাবৃত্ত গতি বলে।
প্রশ্ন \ ৪ \ অসম বেগ কাকে বলে?
উত্তর : কোনো গতিশীল বস্তু যদি এমনভাবে চলতে থাকে যে, সময়ের সাথে সরণের মান অথবা দিক অথবা উভয়ই পরিবর্তিত হয় তবে বস্তুর ঐ সরণের হারকে অসম বেগ বলে।
প্রশ্ন \ ৫ \ গড় দ্রুতি কী?
উত্তর : বস্তু যদি সুষম দ্রæতিতে না চলে তাহলে তার অতিক্রান্ত মোট দূরত্বকে সময় দিয়ে ভাগ করলে গড়ে প্রতি একক সময়ে প্রাপ্ত অতিক্রান্ত দূরত্বই হলো গড় দ্রæতি।
প্রশ্ন \ ৬ \ অসম ত্বরণ কাকে বলে?
উত্তর : কোনো বস্তুর যদি নির্দিষ্ট দিকে বেগ বৃদ্ধির হার সমান না থাকে, তাহলে সে ত্বরণকে অসম ত্বরণ বলে।
প্রশ্ন \ ৭ \ মন্দন বা ঋণাত্মক ত্বরণ কাকে বলে?
উত্তর : গতিশীল কোনো বস্তুর সময়ের সাথে বেগ হ্রাসের হারকে মন্দন বা ঋণাত্মক ত্বরণ বলে।
প্রশ্ন \ ৮ \ ত্বরণের মাত্রা কত?
উত্তর : ত্বরণের মাত্রা, [a] = [L] /[T2] = [LT-2]।
প্রশ্ন \ ৯ \ সুষম ত্বরণের ক্ষেত্রে বেগ বনাম সময় লেখের প্রকৃতি কীরূপ হয়?
উত্তর : সুষম ত্বরণের ক্ষেত্রে বেগ বনাম সময় লেখের প্রকৃতি মূল বিন্দুগামী সরলরেখা।
প্রশ্ন \ ১০ \ সরণের একক কী?
উত্তর : এসআই বা আন্তর্জাতিক পদ্ধতিতে সরণের একক মিটার (স)।
প্রশ্ন \ ১১ \ দ্রæতি কী?
উত্তর : সময়ের সাপেক্ষে কোনো বস্তুর দূরত্ব অতিক্রম করার হারই দ্রæতি।
প্রশ্ন \ ১২ \ দ্রæতির একক কী?
উত্তর : এসআই বা আন্তর্জাতিক পদ্ধতিতে দ্রæতির একক মিটার/ সেকেন্ড (ms-1 )
।
প্রশ্ন \ ১৩ \ দ্রæতির মাত্রা সমীকরণ লেখ।
উত্তর : দ্রæতির মাত্রা সমীকরণ, [V] = [LT-1]।
প্রশ্ন \ ১৪ \ গড়বেগ কাকে বলে?
উত্তর : যেকোনো সময় ব্যবধানে কোনো বস্তুর গড়ে প্রতি একক সময়ে যে সরণ হয় তাকে বস্তুটির গড়বেগ বলে।
⇔ অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর ⇔
প্রশ্ন \ ১ \ ‘এ মহাবিশ্বের সকল স্থিতিই আপেক্ষিক, সকল গতিই আপেক্ষিক’- ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : পরম স্থিতিশীল প্রসঙ্গ বস্তুর সাপেক্ষে কোনো বস্তুর স্থিতিকে পরম স্থিতি বলে এবং পরম স্থিতিশীল প্রসঙ্গ বস্তুর সাপেক্ষে কোনো বস্তুর গতিকে পরম গতি বলে। কিন্তু এ মহাবিশ্বের এমন কোনো প্রসঙ্গ বস্তু পাওয়া সম্ভব নয়, যা প্রকৃতপক্ষে স্থির রয়েছে। কারণ পৃথিবী প্রতিনিয়ত সূর্যের চারদিকে ঘুরছে, সূর্যও তার গ্রহ, উপগ্রহ নিয়ে ছায়াপথে ঘুরছে। আমরা যখন কোনো বস্তুকে স্থিতিশীল বা গতিশীল বলি তা কোনো আপাত স্থিতিশীল বস্তুর সাপেক্ষে বলে থাকি। কাজেই আমরা বলতে পারি এ মহাবিশ্বের সকর স্থিতিই আপেক্ষিক, সকল গতিই আপেক্ষিক।
প্রশ্ন \ ২ \ ‘স্পন্দনগতি এক প্রকার পর্যাবৃত্ত গতি’- ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : কোনো গতিশীল বস্তুকণার গতি যদি এমন হয় যে, এটি এর গতিপথের কোনো নির্দিষ্ট বিন্দুকে নির্দিষ্ট সময় পর পর একই দিক থেকে অতিক্রম করে, তাহলে সেই গতিকে পর্যাবৃত্ত গতি বলে। আবার, কোনো বস্তু যদি পর্যাকালের অর্ধেক সময় কোনো নির্দিষ্ট দিকে এবং বাকি অর্ধেক সময় একই পথে তার বিপরীত দিকে চলে তবে এর গতিকে স্পন্দন গতি বলে। সুতরাং দেখা যাচ্ছে, স্পন্দনগতি সম্পন্ন কোনো বস্তু তার গতিপথের কোনো নির্দিষ্ট বিন্দুকে নির্দিষ্ট সময় পর পর একই বেগে এই দিক হতে অতিক্রম করে বলে সংজ্ঞানুসারে এর গতি পর্যাবৃত্ত গতিও বটে। তাই স্পন্দনগতি এক প্রকার পর্যাবৃত্ত গতি।
প্রশ্ন \ ৩ \ ‘সকল পর্যাবৃত্ত গতি ঘূর্ণন গতি নয়’- ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : যখন কোনো বস্তু কোনো নির্দিষ্ট বিন্দু বা অক্ষ থেকে বস্তুকণাগুলোর দূরত্ব অপরিবর্তিত রেখে ঐ বিন্দু বা অক্ষকে কেন্দ্র করে ঘোরে তখন সে বস্তুর গতিকে ঘূর্ণন গতি বলে। অপরদিকে, কোনো গতিশীল বস্তুকণার গতি যদি এমন হয় যে, এটি এর গতিপথ কোনো নির্দিষ্ট বিন্দুকে নির্দিষ্ট সময় পর পর একই দিক থেকে অতিক্রম করে, তাহলে সেই গতিকে পর্যাবৃত্ত গতি বলে।
তাহলে দেখা যাচ্ছে, ঘূর্ণন গতিসম্পন্ন কোনো বস্তুর বৃত্তাকার গতিপথের যেকোনো বিন্দুকে নির্দিষ্ট সময় পর পর একই দিক হতে অতিক্রম করতে হয় বলে ঘূর্ণন গতি এক প্রকার পর্যাবৃত্ত গতিও বটে। তবে সকল পর্যাবৃত্তগতি সম্পন্ন বস্তুর গতি ঘূর্ণন গতি নয়, যেমন : অল্প বিস্তারে সরল দোলকের গতি, যা পুরোপুরি রৈখিক গতি।
প্রশ্ন \ ৪ \ কোনো বস্তুর গড়বেগ শূন্য হলেও গড় দ্রæতি শূন্য নাও হতে পারে- ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : কোনো বস্তু একটি বিন্দু থেকে যাত্রা শুরু করে আবার যদি সেই বিন্দুতে ফিরে আসে তাহলে তার সরণ শূন্য হয়।
আমরা জানি, গড়বেগ = মোট সরণ/মোট সময় ।
এক্ষেত্রে যেহেতু মোট সরণ শূন্য, তাই গড়বেগও শূন্য।
কিন্তু গড় দ্রæতি = মোট অতিক্রান্ত দূরত্ব/মোট সময়।
এক্ষেত্রে মোট অতিক্রান্ত দূরত্ব কখনো শূন্য হয় না, তাই গড় দ্রæতিও শূন্য হয় না।
সুতরাং কোনো বস্তুর গড়বেগ শূন্য হলেও গড়দ্রæতি শূন্য নাও হতে পারে।
প্রশ্ন \ ৫ \ সুষম বেগের ক্ষেত্রে দূরত্ব বনাম সময়ের লেখ প্রকৃতি ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : যখন বস্তু সুষম বেগ চলে, তখন এটি সমান সময়ে সমান দূরত্ব অতিক্রম করে। সুতরাং X অক্ষের দিকে সময় t এবং Y অক্ষের দিকে দূরত্ব (S) নিয়ে দূরত্ব-সময় লেখ আঁকলে একটি সরলরেখা হবে।
প্রশ্ন \ ৬ \ কোনো বস্তুর ত্বরণ ৫ ms-2 পশ্চিম দিকে বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : কোনো বস্তুর ত্বরণ ৫ ms-2 পশ্চিম দিকে বলতে বুঝায় বস্তুটির বেগ পশ্চিম দিকে প্রতি সেকেন্ডে ৫ ms-1 বৃদ্ধি পায়। এ বেগ বৃদ্ধির দিক হলো আদি অবস্থান থেকে সোজা পশ্চিম দিকে।
প্রশ্ন \ ৭ \ কোনো গাড়ির দ্রæতি ৫০ kmh-1 বলতে কী বোঝ?
উত্তর : কোনো গাড়ির দ্রæতি ৫০ kmh-1 বলতে বুঝায়-
গাড়িটি প্রতি ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে।
গাড়িটির অবস্থান পরিবর্তনের হার ৫০ kmh-1 । এ অবস্থান পরিবর্তনের হার সরল অথবা বক্রপথে যেকোনো দিকে হতে পারে।
প্রশ্ন \ ৮ \ বেগ ও ত্বরণের মধ্যে সম্পর্ক নির্ণয় কর।
উত্তর : যদি কোনো বস্তু ঃ সময়ে নির্দিষ্ট দিকে ং দূরত্ব অতিক্রম করে তাহলে বেগ, V = । বা, বেগ = সরণ/সময়।
আবার, কোনো বস্তুর আদিবেগ যদি u হয় এবং t সময় পরে তার বেগ যদি v হয়, তাহলে t সময়ে বেগের পরিবর্তন = v-u
∴ একক সময়ে বেগের পরিবর্তন =
∴ বেগ পরিবর্তনের হার, অর্থাৎ ত্বরণ, a =
অর্থাৎ, ত্বরণ =( শেষবেগ – আদিবেগ)/সময়।
প্রশ্ন \ ৯ \ ত্বরণের মাত্রা নির্ণয় কর।
উত্তর : আমরা জানি, ত্বরণ = দূরত্ব(সময়)২
এখানে, দূরত্বের মাত্রা খ, সময়ের মাত্রা ঞ এবং ত্বরণের সংকেত ধ।
∴ ত্বরণের মাত্রা সমীকরণ, [a] = [L][T2]
∴ [a] = [LT-2]
প্রশ্ন \ ১০ \ কোনো বস্তুর স্থিতি ও গতির মধ্যে পার্থক্য লেখ।
উত্তর : কোনো বস্তুর স্থিতি ও গতির মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ :
স্থিতি | গতি |
১. সকল স্থিতিশীল বস্তুর বেগ শূন্য। | ১. সকল গতিশীল বস্তুর বেগ শূন্য অপেক্ষা বড়। |
২. বস্তুর স্থিতি পরিমাপ করা সম্ভব নয়। | ২. বস্তুর গতি বিভিন্ন রাশি দ্বারা প্রকাশ করা যায়। যেমন : সরণ, দ্রæতি, বেগ ইত্যাদি। |
৩. কোনো বস্তুই পরম স্থিতিশীল নয়। | ৩. সকল বস্তুই গতিশীল। |