এইচএসসি ব্যবসায় উদ্যোগ তৃতীয় অধ্যায় পরিকল্পনা প্রণয়ন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর
অধ্যায়-৩ পরিকল্পনা প্রণয়ন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর প্রশ্ন১ সরকার দেশের উন্নয়ন ও জনগণের স্বার্থের দিক বিবেচনায় নিয়ে ঢাকায় মেট্রোরেল স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যা নির্মাণ করতে বেশ কয়েক বছর সময় লাগবে। যে অবস্থা বিবেচনা করে পরিকল্পনা প্রস্তুত হয় তা সবসময় মিলতে না-ও পারে। তাই ভবিষ্যৎ অবস্থার পরিবর্তন হলে পরিকল্পনা সংশোধনীসহ কর্তৃপক্ষ করণীয় ঠিক করে রাখেন, যাতে মেট্রোরেল নির্মাণের উদ্দেশ্য অর্জিত হয়। [ঢা. বো. ১৭] অ ক. সিদ্ধান্ত গ্রহণ কী? ১ অ খ. ভিশন গুরুত্বপূর্ণ কেন? ২ অ গ. উদ্দীপকের মেট্রোরেল স্থাপন প্রকৃতি ভিত্তিতে কোন ধরনের পরিকল্পনা? ব্যাখ্যা করো। ৩ অ ঘ. পরিকল্পনার যে বৈশিষ্ট্যটি ভবিষ্যৎ অবস্থার পরিবর্তনকে সহজ করে তোলেÑ উদ্দীপকের আলোকে তা মূল্যায়ন করো। ৪ ১ নং প্রশ্নের উত্তর অ মক সিদ্ধান্ত গ্রহণ হচ্ছে এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট সমস্যা সমাধানের সঠিক ও সর্বোত্তম কর্মপন্থা নির্ধারণ করা হয়। মখ ভিশন হলো প্রতিষ্ঠানের দীর্ঘমেয়াদি ভবিষ্যৎ লক্ষ্য, যেখানে প্রতিষ্ঠানটি যেতে চায় বা অর্জন করতে চায়। একটি প্রতিষ্ঠান যখন তার ভিশন নির্ধারণ করে তখন তাতে এর ভবিষ্যৎ লক্ষ্য ফুটে ওঠে। প্রতিষ্ঠানের ভিশন বা মূল লক্ষ্য নির্ধারণ করার ফলে প্রতিটি কর্মী ও বিভাগ তা অর্জনের জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালায়। এতে উদ্দেশ্য অর্জন অনেক সহজ হয়। এজন্য ভিশন গুরুত্বপূর্ণ। মগ উদ্দীপকের মেট্রোরেল স্থাপন কাজটি প্রকৃতি ভিত্তিতে একার্থক পরিকল্পনার অন্তর্গত। একার্থক পরিকল্পনা কোনো একটি বিশেষ কার্যসম্পাদনের লক্ষ্যে তৈরি করা হয়। তবে প্রণীত পরিকল্পনাটি বাস্তবায়িত হয়ে গেলে উক্ত পরিকল্পনাটি তার গ্রহণযোগ্যতা হারায়। উদ্দীপকে দেখা যায়, সরকার দেশের উন্নয়ন ও জনগণের স্বার্থের কথা চিন্তা করে ঢাকায় মেট্রোরেল স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়। যদিও মেট্রোরেল তৈরি করতে বেশ কয়েক বছর সময় লাগবে। তবুও সরকার চায় এ উদ্দেশ্যটি যেন বাস্তবায়িত হয়। এ লক্ষ্যে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে। সরকার একটি বিশেষ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে এ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে, উদ্দেশ্য অর্জিত হলে এর কার্যকারিতাও শেষ হয়ে যাবে। এটি একার্থক পরিকল্পনার বৈশিষ্ট্যের সাথে সংগতিপূর্ণ। তাই বলা যায়, মেট্রোরেল স্থাপন একটি একার্থক পরিকল্পনা। মঘ পরিকল্পনার নমনীয়তা বৈশিষ্ট্যটি ভবিষ্যৎ অবস্থার পরিবর্তনের সাথে সমন্বয়কে সহজ করে তোলে। নমনীয়তার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যৎ অবস্থা ও সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে পরিকল্পনার পরিবর্তন করা হয়। ভবিষ্যৎ সর্বদাই অনিশ্চিত। তাই পরিকল্পনা সময়, স্থান ও অবস্থাভেদে পরিবর্তনযোগ্য হওয়া বাঞ্ছনীয়। উদ্দীপকে দেখা যায়, সরকার দেশের জনগণের কথা চিন্তা করে ঢাকায় একটি মেট্রোরেল স্থাপনের পরিকল্পনা করে। যে অবস্থা বিবেচনা করে পরিকল্পনা প্রস্তুত করা হয় তা সবসময় না-ও মিলতে পারে। তাই কর্তৃপক্ষ ভবিষ্যৎ অবস্থার পরিবর্তন হলে সে অবস্থা অনুযায়ী পরিকল্পনার সংশোধনীগুলোও ঠিক করে নেয়। অর্থাৎ তারা যেকোনো অবস্থার মধ্য দিয়ে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য চেষ্টা করে। পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে সঙ্গতি বিধানের সামর্থ্যই হলো নমনীয়তা। একটি উত্তম পরিকল্পনায় নমনীয়তার সুযোগ থাকা আবশ্যক। কারণ, একই অবস্থার মধ্য দিয়ে পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবে তা সবসময় আশা করা যায় না। তাই উদ্দীপকে সরকারি কর্মকর্তাগণও ঢাকায় মেট্রোরেল নির্মাণের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য পরিকল্পনায় সম্ভাব্য ও প্রয়োজনীয় সংশোধনীর ব্যবস্থা করে রাখেন। তাই বলা যায়, পরিকল্পনার নমনীয়তা বৈশিষ্ট্যটি ভবিষ্যৎ অবস্থার পরিবর্তনকে সহজ করে তোলে। মমমপ্রশ্ন২ সুইট হোম লি. একটি ডেভেলপার কোম্পানি। কোম্পানিটি একেকটি প্রকল্পের অন্য একেকটি পরিকল্পনা গ্রহণ করে। নির্মাণ শেষে পরিকল্পনার সমাপ্তি ঘটে। সম্প্রতি নতুন একটি প্রকল্প ২০ তলা বিল্ডিং নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করে এবং এর নকশা সি.ডি.এ.-তে জমা দেওয়া হয়। জায়গার পরিমাণ, মূল রাস্তা থেকে জায়গার দূরত্ব, রাস্তার প্রশস্ততা ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা করে সর্বোচ্চ ১৫ তলার বেশি নির্মাণ করা অবাস্তব ও ত্র“টিপূর্ণ হবে বলে সি.ডি.এ. প্রকল্প পরিকল্পনাটি বাতিল করে দেয়। পরবর্তীতে সুইটস হোম লি. ১৫ তলা বিল্ডিং নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করে এবং সি.ডি.এ. পরিকল্পনাটি অনুমোদন দেয়। [রা. বো. ১৭] অ ক. সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ার প্রথম পদক্ষেপ কোনটি? ১ অ খ. “পরিকল্পনা ব্যবস্থাপনার অন্যান্য কাজের ভিত্তি”Ñ ব্যাখ্যা করো। ২ অ গ. ‘সুইট হোম লি.’-এর গৃহীত পরিকল্পনাগুলো প্রকৃতিভেদে কোন ধরনের পরিকল্পনা? ব্যাখ্যা করো। ৩ অ ঘ. পরিকল্পনার যে বৈশিষ্ট্যের কারণে ‘সুইট হোম লি.-এর প্রকল্পটি সিডিএ’র অনুমোদন পায় তার যৌক্তিকতা মূল্যায়ন করো। ৪ ২ নং প্রশ্নের উত্তর অ মক সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ার প্রথম পদক্ষেপ হলো সমস্যা চিহ্নিতকরণ ও সংজ্ঞায়িতকরণ। মখ প্রতিষ্ঠানের কাক্সিক্ষত উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য কোন কাজ কে করবে, কখন করবে, কত সময়ের মধ্যে করা হবে ইত্যাদি নির্ধারণ করার কর্মসূচি বা নকশা প্রণয়নের কাজকে পরিকল্পনা বলে। পরিকল্পনা হলো ব্যবস্থাপনার প্রথম কাজ। এটি বাস্তবায়নের জন্যই সংগঠন, কর্মীসংস্থান, নেতৃত্ব দান ইত্যাদি কাজ করা হয়। আর নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে পরিকল্পনা আদর্শমানের ভ‚মিকা পালন করে। এছাড়া ব্যবস্থাপনার অন্যান্য (সংগঠন, কর্মীসংস্থান, নেতৃত্ব দান) কাজ সম্পাদনেও প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হয়। তাই পরিকল্পনাকে অন্যান্য কাজের ভিত্তি বলে গণ্য করা হয়। মগ উদ্দীপকের সুইট হোম লি.-এর গৃহীত পরিকল্পনাগুলো প্রকৃতিভেদে একার্থক পরিকল্পনা। একার্থক পরিকল্পনা কোনো একটি বিশেষ কার্যসম্পাদনের জন্য তৈরি করা হয়। তবে প্রণীত পরিকল্পনাটি বাস্তবায়িত হলে তা পরে আর ব্যবহৃত হয় না। উদ্দীপকের সুইট হোম লি. একটি ডেভেলপার কোম্পানি। কোম্পানিটি একেকটি প্রকল্পের জন্য একেকটি পরিকল্পনা গ্রহণ করে। নির্মাণ শেষে পরিকল্পনার সমাপ্তি ঘটে। সম্প্রতি কোম্পানিটি ২০ তলা বিল্ডিং নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করে। কিন্তু সি.ডি.এ জায়গার পরিমাণ, রাস্তার প্রশস্থতা ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা করে ১৫ তলার বেশি নির্মাণ করা যাবে না বলে প্রকল্পের পরিকল্পনাটি বাতিল করে দেয়। পরবর্তীতে সুইট হোম লি. ১৫ তলা বিল্ডিং নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করে। বিল্ডিং নির্মাণ শেষে পরিকল্পনাটির সমাপ্তি ঘটবে। এসব বৈশিষ্ট্যানুযায়ী এটি একার্থক পরিকল্পনার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তাই বলা যায়, সুইট হোম লি.-এর গৃহীত পরিকল্পনাগুলো হলো একার্থক পরিকল্পনা। মঘ পরিকল্পনার নমনীয়তা বৈশিষ্ট্যের কারণে ‘সুইট হোম লি.’-এর প্রকল্পটি সি.ডি.এ.-এর অনুমোদন পায়Ñ কথাটি যৌক্তিক। ভবিষ্যৎ সর্বদাই অনিশ্চিত। তাই পরিকল্পনা সময়, স্থান ও অবস্থাভেদে পরিবর্তনযোগ্য হওয়া আবশ্যক। নমনীয়তা বৈশিষ্ট্যের কারণে পরিকল্পনাকে অবস্থা ও সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে পরিবর্তন করা যায়। উদ্দীপকের সুইট হোম লি. প্রথমত ২০ তলা ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা করে এবং এর নকশা সি.ডি.এ-তে জমা দেয়। জায়গার পরিমাণ ও রাস্তার কারণে সি.ডি.এ. ২০তলা ভবনের পরিবর্তে ১৫ তলার অনুমোদন দেয়। এতে সুইট হোম লি. পরিস্থিতি অনুযায়ী তাদের পরিকল্পনায় পরিবর্তন এনে ১৫ তলা ভবনের সিদ্ধান্ত নেয়; যা পরিকল্পনার নমনীয়তা বৈশিষ্ট্যের সাথে মিল পাওয়া যায়। যেকোনো সময়, পরিবেশ তথা পারিপার্শ্বিকতার পরিবর্তনের কারণে পরিকল্পনা পরিবর্তন করতে হতে পারে। উদ্দীপকেও এমন পরিবর্তনের প্রয়োজন হয়েছে। সুইট হোম লি. প্রতিষ্ঠানটি প্রথমত ২০ তলা ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিলেও তা বাতিল হয়ে যায়। পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠানটি পরিকল্পনায় পরিবর্তন এনে ১৫ তলা ভবন নির্মাণের চ‚ড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়, যা সি.ডি.এ. অনুমোদন দেয়। তাই বলা যায়, পরিকল্পনার নমনীয়তার কারণেই সুইট হোম লি.-এর প্রকল্পটি সি.ডি.এ.-এর অনুমোদন পায়। মমমপ্রশ্ন৩ জাগোয়ার করপোরেশনের চারটি বিভাগ রয়েছে। উৎপাদন বিভাগ ২০১৬ সালের জন্য ৫০০০ একক উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে। অর্থ বিভাগ প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ না করায় উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১০০০ একক কম হয়। অন্যদিকে মানবসম্পদ বিভাগ বিপণন বিভাগের জন্য অতিরিক্ত লোক নিয়োগ করায় খরচ বেড়ে যায়। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগে লোক স্বল্পতার কারণে নষ্ট মেশিন ঠিক করতে না পারায় উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটে। [রা.