সপ্তম শ্রেণির বাংলা মেলা
মেলা আহসান হাবীব কবি ও কবিতা সম্পর্কিত তথ্য কবি পরিচিতি নাম আহসান হাবীব। জন্ম পরিচয় জন্ম : ১৯১৭ খ্রিষ্টাব্দ। জন্মস্থান : পিরোজপুর জেলার শংকরপাশা গ্রাম। শিক্ষা ও কর্মজীবন আহসান হাবীব ব্রজমোহন কলেজে আইএ পর্যন্ত পড়ালেখা করেন। এরপর আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে আর পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারেননি। এমন অবস্থায় জীবিকার সন্ধানে কলকাতায় গমন করেন। কর্মজীবনে তিনি সাংবাদিকতার সাথে জড়িত ছিলেন। দীর্ঘকাল তিনি দৈনিক বাংলা পত্রিকার সাহিত্য বিভাগ পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন। সাহিত্য সাধনা কাব্যগ্রন্থ : রাত্রিশেষ ছায়াহরিণ, সারাদুপুুর, মেঘ বলে চৈত্রে যাবো, দুই হাতে দুই আদিম পাথর, বিদীর্ণ দর্পণে মুখ।’ শিশুতোষ গ্রন্থ : ছোটদের পাকিস্তান, বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর, ছুটির দিন দুপুরে প্রভৃতি। উপন্যাস : অরণ্যে নীলিমা, রাণী খালের সাঁকো । এছাড়াও তিনি অনুবাদক হিসেবেও সুপরিচিত। পুরস্কার ও সম্মাননা আহসান হাবীব তার সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৬১ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার ও ১৯৭৮ সালে একুশে পদক লাভ করেন। জীবনাবসান ১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দ। সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর প্রশ্ন- ১ ল্ফল্ফ স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদ্যাপন অনুষ্ঠানে বাংলা শিক্ষক বললেন, ’৭১ সালে দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধের পর আমরা পেয়েছি এই মুক্ত আকাশ-বাতাস, পেয়েছি ছায়া সুনিবিড়-শান্তির নীড়, এই বাংলাদেশ। প্রধান শিক্ষক বললেন, ‘তোমরা আজকের শিশু-কিশোররা আগামী দিনের স্বপ্ন। শুধু দেশ ও জাতির জন্য নয়, শিশুরা সারা বিশ্বের সম্ভাবনা।’ ক. নীল আকাশে রং কুড়িয়ে বেড়ায় কারা? খ. কবি আহসান হাবীব ‘আলোর পাখি’ বলতে কী বুঝিয়েছেন? গ. বাংলা শিক্ষকের বক্তব্যে ‘মেলা’ কবিতার কোন দিকটি ফুটে উঠেছে- ব্যাখ্যা কর। ঘ.“প্রধান শিক্ষক মন্তব্যে ‘মেলা’ কবিতার মূল বক্তব্যই ফুটে উঠেছে”- বিশ্লেষণ কর। ক ভাইরা ও বোনরা মিলে নীল আকাশে রং কুড়িয়ে বেড়ায়। খ কবি আহসান হাবীব ‘আলোর পাখি’ বলতে প্রভাতের সূর্যের কথা বুঝিয়েছেন। রোজ সকালে আকাশ পথে আলোর পাখি উঁকি দেয়। সেই পাখি অন্ধকার দূরীভ‚ত করে আলোকিত করে পৃথিবীর সবকিছুকে। অন্ধকারের চাদর ছুড়ে ফেলে আলোর পাখির পরশ মেখে ঝলমল করে ওঠে গোটা পৃথিবী। কবি আহসান হাবীব মূলত আলোর পাখি বলতে সেই সূর্যকেই বুঝিয়েছেন। গ বাংলা শিক্ষকের বক্তব্যে ‘মেলা’ কবিতার একতাবদ্ধতার দিকটি ফুটে উঠেছে। ‘মেলা’ কবিতায় আমাদের চারপাশের ফুলের মেলা, পাখির মেলা ও আকাশে তারার মেলার কথা কবি ব্যক্ত করেছেন। এসবের সাথে পৃথিবীর সব শিশুকে নিয়েও একটি মেলার কল্পনা করেছেন তিনি। কবিতায় বর্ণিত সারা বিশ্বের শিশুদের মধ্যে মনের ভাষার এক ঐক্য আছে। আর এই ঐক্যের টানে তারা সব বাধা ডিঙিয়ে একটি ¯েœহ-ভালোবাসার পৃথিবী গড়ে তুলবে। তাই সাজানো পৃথিবী গড়ে তোলার জন্য চাই একতাবদ্ধ একটি সমাজ। উদ্দীপকের বাংলা শিক্ষকের বক্তব্যেও ফুটে উঠেছে একতাবদ্ধতার কথা। ১৯৭১ সালে দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধের পর আমরা পেয়েছি এই মুক্ত আকাশ-বাতাস; পেয়েছি ছায়া সুনিবিড় এই বাংলাদেশ। এক অনন্য একতার কারণেই আজকের এই সুন্দর স্বাধীন বাংলাদেশকে আমরা পেয়েছি। অর্থাৎ বাংলা শিক্ষকের বক্তব্যে একতাবদ্ধতার বিষয়টি ফুটে উঠেছে। ঘ “আজকের কিশোররা আগামী দিনের স্বপ্ন শুধু দেশ ও জাতির জন্য নয়, শিশুরা সারা বিশ্বের জন্য সম্ভাবনা” প্রধান শিক্ষকের উক্তিটি যথার্থ। ‘মেলা’ কবিতায় কবি দেখিয়েছেন, কচি সবুজ ভাইবোনদের হাসি-খুশির মধ্যে লাখ লাখ সবুজ মনের জগৎ ও স্নেহ-প্রীতির প্রকাশ ঘটেছে। দেশ-কালের সীমানা ভেঙে তারা অন্তরের ভালোবাসা দিয়ে গড়তে চাচ্ছে একটি সুন্দর জগৎ। সাজানো বাগানের মতো সুন্দর পৃথিবী। তখন পৃথিবী হবে একটা দেশ, মানবসমাজ হবে একটা পরিবার। আজকের শিশুরাই ভবিষ্যতে গড়ে তুলবে এমন একটা সুন্দর পৃথিবী। উদ্দীপকের প্রধান শিক্ষকের বক্তব্যে উঠে এসেছে, আজকের শিশু কিশোররা আগামী দিনের স্বপ্ন সকল শিশুর একতাবদ্ধ হয়ে সৌহার্দ্য, প্রীতি ও শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দেবে। প্রধান শিক্ষকের এ বক্তব্যটি যৌক্তিক। কারণ শিশুরাই পারে আগামী দিনের শান্তির বার্তা দিকে দিকে পৌঁছে দিতে। ‘মেলা’ কবিতার কবি আহসান হাবীবও সেই বিষয়টি স্বীকার করেছেন। আজকের শিশুরাই আগামী দিনের জাতির কর্ণধার। তাদের হাতেই সৃষ্টি হবে বিবাদহীন নতুন পৃথিবী। ‘মেলা’ কবিতা ও উদ্দীপকে এ বিষয়টিই তুলে ধরা হয়েছে। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের প্রধান শিক্ষকের উক্তিটি অত্যন্ত যৌক্তিক। প্রশ্ন- ১ ল্ফল্ফ সুজন বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। বাবা চান তাদের সন্তান সুন্দর পৃথিবীর আলো বাতাসে বেড়ে উঠুক। মুক্ত মনে সকল মানুষকে ভালোবাসতে শিখুক, কাছে টানুক। এজন্য তিনি শিশুটিকে প্রতিদিন বিকালে খেলার মাঠে নিয়ে যেতেন। চলাফেরার স্বাধীনতা দিতেন। মুক্ত মনে সবার সাথে মেশার সুযোগ করে দিতেন। যেন সে ভেদাভেদহীনভাবে বেড়ে ওঠে। ক. ‘নিত্য’ শব্দটির অর্থ কী? ১ খ. মেলা বলতে কী বোঝায়- ব্যাখ্যা কর। ২ গ. সুজনের বাবার চাওয়ার সাথে ‘মেলা’ কবিতার বিষয়বস্তু কতটুকু সাদৃশ্যপূর্ণ- নির্ণয় কর। ৩ ঘ.‘শিশুরা মুক্ত মনের অধিকারী, তারা নতুন পৃথিবীর সন্ধান দেয়’ মন্তব্যটি ‘মেলা’ কবিতার আলোকে বিশ্লেষণ কর। ৪ ক ‘নিত্য’ শব্দটির অর্থ রোজ বা প্রতিদিন। খ মেলা বলতে বোঝায় কোনো উপলক্ষে মিলিত বা একত্র হওয়া। মেলা সাধারণত কোনো বিশেষ দিন, কোনো উৎসব বা ধর্মীয় কোনো অনুষ্ঠান উপলক্ষে হয়ে থাকে। তবে মেলা কবিতায় ‘মেলা’ শব্দটি খানিকটা ভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। এখানে মেলা বলতে বোঝানো হয়েছে জগতের আনন্দ যজ্ঞকে। ফুল, পাখি, তারা আর নওল দিনের শিশু-কিশোরের আনন্দকে। গ ‘মেলা’ কবিতার বিষয়বস্তুর সাথে উদ্দীপকের সুজনের বাবার চাওয়া অনেকাংশে সাদৃশ্যপূর্ণ। আহসান হাবীব তার ‘মেলা’ কবিতায় বলেছেন শিশু-কিশোররা পৃথিবী জুড়ে নবীন প্রাণে আশার আলো ছড়িয়ে দেয়। তারা ভালোবাসা দিয়ে নতুন এক জগৎ গড়তে চায়। উদ্দীপকে সুজনের বাবা জানেন একটা সুন্দর পৃথিবী গড়ে তুলতে হলে প্রথম প্রয়োজন মুক্তমনের অধিকারী হওয়া। তাই তিনি নিজের সন্তানকে মানুষকে ভালোবাসতে, কাছে টানতে শিখিয়েছেন, চলাফেরার স্বাধীনতা দিতেন, সবার সাথে মিশতে দিতেন। তিনি তার সন্তানকে ভেদাভেদহীনভাবে বেড়ে উঠতে সাহায্য করেন। যেন সুন্দর একটা পৃথিবী সে গড়তে পারে। আর উদ্দীপকের এই বিষয়বস্তুর মধ্যে ‘মেলা’ কবিতার বিষয়বস্তুর প্রতিচ্ছবি লক্ষ করা যায়। তাই উদ্দীপকের সুজনের বাবার চাওয়ার সাথে ‘মেলা’ কবিতা বিষয়বস্তু অনেকাংশে সাদৃশ্যপূর্ণ। ঘ ‘শিশুরা মুক্তমনের অধিকারী, তারা নতুন পৃথিবীর সন্ধান দেয়’ মন্তব্যটি যথার্থ ও সঠিক। ‘মেলা’ কবিতার সুন্দর সাজানো বাগানের মতো পৃথিবী গড়ে তোলার কথা বলা হয়েছে, শিশুরাই গড়ে তোলে তাদের আপন ভুবন মুক্তমন দিয়ে। তারা মুক্ত মনের অধিকারী, প্রকৃতির মতো উদার, সুন্দর ও পবিত্র। তারা ভালোবাসা দিয়ে এক নতুন পৃথিবী গড়তে চায় । যেখানে দেশ-কালের কোনো সীমানা থাকবে না। সাজানো বাগানের মতোই সুন্দর হবে তাদের তৈরি পৃথিবীটা। উদ্দীপকেও শিশু-কিশোরদের মুক্তমনের কথা বলা হয়েছে। তারা অপার সম্ভাবনার প্রতীক। এখানে সুজনের বাবা তাকে মানুষকে ভালোবাসতে শেখায়। ভেদাভেদ ভুলে যেতে শেখায়। এসবই হলো শিশু-কিশোরদের মুক্তমনের বিকাশ হওয়ার সুযোগ তৈরি করা। শিশুরা নতুন একটি পৃথিবী বানাতে চায়, যে পৃথিবীতে থাকবে না কোনো হানাহানি বা বিবাদ। তারা তাদের ভালোবাসা দিয়ে নতুন পৃথিবী গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখে। সব মানুষকে তারা এই পৃথিবীর সন্ধান দেয়। উদ্দীপক ও আলোচ্য কবিতার আলোকে বলা যায়, ‘শিশুরা মুক্তমনের অধিকারী তারা নতুন পৃথিবীর সন্ধান দেয়’। প্রশ্ন- ২ ল্ফল্ফ ড. রহমান একবার এক সেমিনারে কীভাবে নিজেকে, নিজের রাগকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় সে সম্পর্কে এবং মানুষকে ভালোবাসা সম্পর্কে আলোচনা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন- ‘আপনি ভাবুন আপনার চারপাশে যারা আছে সবাই আপনার ভাই, বোন, কেউ বন্ধু, আপনজন। আপনি বিশ্বাস করতে শিখুন, আপনার প্রতিবেশী
সপ্তম শ্রেণির বাংলা মেলা Read More »