এইচএসসি ব্যবসায় উদ্যোগ ষষ্ঠ অধ্যায় নেতৃত্ব সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর

অধ্যায়-৬: নেতৃত্ব

গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর

মমমপ্রশ্ন১ মি. ঢ কর্মীদের কোনো মতামতকে গুরুত্ব দেন না। তিনি প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ বিবেচনা না করেই কর্মীদের যা করতে বলেন তা পালনে বাধ্য করেন। এককভাবেই তিনি সব সিদ্ধান্ত নেন। ভবিষ্যৎ সম্পর্কে মূল্যায়ন না করেই তিনি বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে ১০০ টন পণ্য আমদানি করেন। পরবর্তীতে উক্ত পণ্য বিক্রয়ে মুনাফা লাভে ব্যর্থ হন, যা প্রতিষ্ঠানকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। [ঢা. বো., কু. বো. ১৭]
অ ক. নেতা কাকে বলে? ১
অ খ. গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব উত্তম কেন? ২
অ গ. উদ্দীপকে কোন ধরনের নেতৃত্ব বিদ্যমান? ব্যাখ্যা করো। ৩
অ ঘ. ‘মি. ঢ-এর দূরদর্শিতার অভাবই প্রতিষ্ঠানকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে’Ñ উদ্দীপকের আলোকে মূল্যায়ন করো। ৪
১ নং প্রশ্নের উত্তর অ
ক যিনি প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্য অর্জনের উদ্দেশ্যে অধীনস্থদের প্রভাবিত করে তাদের সর্বাধিক সামর্থ্যকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করেন, তিনিই নেতা।
খ যে নেতৃত্বে নেতা অধস্তনদের সাথে আলাপ-আলোচনা, পরামর্শ করে কাজ পরিচালনা করেন তাকে গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব বলে।
এক্ষেত্রে নেতা সব ক্ষমতা নিজের হাতে কেন্দ্রীভ‚ত না রেখে প্রয়োজনীয় কর্তৃত্ব অধীনস্থদের নিকট অর্পণ করেন। তাছাড়া সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে অধীনস্থদের সঙ্গে পরামর্শ করেন। যার কারণে নেতার প্রতি কর্মীদের ইতিবাচক ধারণা সৃষ্টি হয়। ফলে এরূপ নেতৃত্বের প্রতি অধীনস্থরা সন্তুষ্ট থাকেন। এতে কর্মীদের মনোবল বৃদ্ধি পায় এবং তারা সর্বোচ্চ সামর্থ্য দিয়ে লক্ষ্য অর্জনের চেষ্টা করেন। তাই বলা হয়, সাংগঠনিক ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক নেতৃত্বই উত্তম।
গ উদ্দীপকে স্বৈরতান্ত্রিক নেতৃত্বের কথা বলা হয়েছে।
স্বৈরতান্ত্রিক নেতৃত্বে নেতা নিজের কাছে সব ক্ষমতা কেন্দ্রীভ‚ত করে রাখেন। তিনি নিজের ইচ্ছেমতো একক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। এক্ষেত্রে নেতা কর্মীদের কোনা মতামতকে গুরুত্ব দেন না। নেতার নিদের্শনা কর্মীরা বিনাবাক্যে মানতে বাধ্য থাকেন।
উদ্দীপকের মি. ঢ কর্মীদের কাজের দিকনিদের্শনা দেন। কর্মীদের কোনো মতামত তিনি গ্রহণ করেন না । তিনি যা ভালো মনে করেন তাই কর্মীদের ওপর চাপিয়ে দেন। তিনি কর্মীদেরকে আদেশ পালনে বাধ্য করেন। এসব বৈশিষ্ট্য স্বৈরতান্ত্রিক নেতৃত্বের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের মি. ঢ স্বৈরতান্ত্রিক নেতৃত্ব প্রদান করছেন।
ঘ ‘মি. ঢ-এর দূরদর্শিতার অভাবই প্রতিষ্ঠানকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে’Ñ উদ্দীপকের আলোকে বক্তব্যটি যথার্থ।
জ্ঞানচক্ষু বা বিশেষ জ্ঞান দ্বারা ভবিষ্যতকে উপলব্ধি করতে পারার সামর্থ্যই হলো দূরদর্শিতা। দূরদর্শী নেতা সময়োপযোগী সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হন। তিনি সম্ভাব্য করণীয় পূর্বেই নির্ধারণ করে রাখতে পারেন। এতে তিনি সহজেই প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারেন।
উদ্দীপকের মি. ঢ ভবিষ্যৎ সম্পর্কে মূল্যায়ন না করেই বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে ১০০ টন পণ্য আমদানি করেন। পরবর্তীতে দেখা যায়, তিনি উক্ত পণ্য বিক্রয় করে মুনাফা অর্জনে ব্যর্থ হন। ফলে প্রতিষ্ঠানটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে বোঝা যায়, মি. ঢ ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আগাম ধারণা করতে পারেননি।
ভবিষ্যৎ সর্বদাই অনিশ্চিত। এ অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়েই একজন নেতাকে সফলতা অর্জন করতে হয়। কিন্তু মি. ঢ ভবিষ্যৎ মূল্যায়নে অতীত ও বর্তমানের বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করেন নি। ফলে তিনি ভবিষ্যতে কী পরিমাণ পণ্য কত দামে বিক্রয় হবে তা বিবেচনা না করে ১০০ টন পণ্য আমদানি করেন। পরবর্তীতে তা বিক্রয় না হওয়ায় তিনি মুনাফা অর্জনে ব্যর্থ হন । এ কারণে প্রতিষ্ঠানটি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই বলা যায়, মি. ঢ-এর দূরদর্শিতার অভাবই প্রতিষ্ঠানকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
মমমপ্রশ্ন২ একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী তার অধস্তনদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে কাজ আদায়ে বিশ্বাসী। সব সিদ্ধান্ত তিনি নিজেই নেন। আবার অধস্তনদের কাছ থেকে শর্তহীন আনুগত্য প্রত্যাশা করেন। কিন্তু কর্মীরা তার নেতৃত্বকে ভালোভাবে নেয় না। তারা মানসিক কষ্ট নিয়ে কাজ করতে থাকে। এক পর্যায়ে কর্মীরা দুই-একজন করে চাকরি ছেড়ে দিতে থাকে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি সংকটাবস্থায়। [ঢা. বো., কু. বো. ১৭]
অ ক. নির্দেশনা কী? ১
অ খ. পরামর্শমূলক নির্দেশনা অনেকটা গণতান্ত্রিক কেন? ২
অ গ. উদ্দীপকে প্রধান নির্বাহীর নেতৃত্ব ডগলাস মারে ম্যাকগ্রেগরের কোন তত্ত¡ সংশ্লিষ্ট? ব্যাখ্যা করো। ৩
অ ঘ. ‘স্বৈরাচারী নির্দেশনা উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে’Ñ বিশ্লেষণ করো। ৪
২ নং প্রশ্নের উত্তর অ
ক লক্ষ্য অর্জনে অধস্তনদের আদেশ, উপদেশ ও পরামর্শ প্রদান এবং তত্ত¡াবধান কাজকে নির্দেশনা বলে।
খ কোনো কাজের নির্দেশ দেওয়ার পূর্বে যারা তা বাস্তবায়ন করবে তাদের সাথে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করাকে পরামর্শমূলক নির্দেশনা বলে।
গণতান্ত্রিক নেতৃত্বে নেতা সংখ্যাগরিষ্ঠ কর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নে সচেষ্ট থাকেন। এক্ষেত্রে কর্মীদের মতামতকে ইতিবাচক হিসেবে গ্রহণ করা হয়। পরামর্শমূলক নির্দেশনায়ও যারা নির্দেশ পালনের সাথে জড়িত কর্তৃপক্ষ তাদের সাথে আলাপ-আলোচনা করেন এবং গঠনমূলক মতামতকে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। এজন্যই বলা হয় পরামর্শমূলক নির্দেশনা অনেকটা গণতান্ত্রিক নেতৃত্বের মতো।
গ উদ্দীপকের প্রধান নির্বাহীর নেতৃত্ব ডগলাস মারে ম্যাকগ্রেগরের ঢ তত্ত¡ সংশ্লিষ্ট।
ঢ তত্তে¡ মনে করা হয় কর্মীরা কাজকে অপছন্দ করে ও সুযোগ পেলেই কাজে ফাঁকি দেয়। এজন্য এ তত্তে¡ কঠোর নিয়ন্ত্রণ, ভয়ভীতি ও শাস্তি প্রদানের মাধ্যমে তাদেরকে দিয়ে কাজ করানোকে গুরুত্ব দেওয়া হয়।
উদ্দীপকে দেখা যায়, একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী তার অধস্তন কর্মীদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে কাজ আদায় করেন। তিনি প্রতিষ্ঠানের যেকোনো সিদ্ধান্ত একাই গ্রহণ করেন। কর্মীদের ভুল-ভ্রান্তির জন্য শাস্তি প্রদান করেন। এছাড়া তিনি কর্মীদের কাছ থেকে শর্তহীন আনুগত্য প্রত্যাশা করেন। এসব বৈশিষ্ট্য ঢ তত্তে¡র সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের নির্বাহীর নেতৃত্বটি ডগলাস মারে ম্যাকগ্রেগরের ঢ তত্ত¡ সংশ্লিষ্ট।

ডগলাস মারে ম্যাকগ্রেগর (উড়ঁমষধং গঁৎৎধু গপএৎবমড়ৎ) ‘ঞযব ঐঁসধহ ঝরফব ড়ভ ঊহঃবৎঢ়ৎরুব’ নামক গ্রন্থে কর্মীর মনোভাব সম্পর্কে দুই ধরনের তত্তে¡র উলে­খ করেন, যা ঢ ও ণ তত্ত¡ নামে পরিচিত।
ঢ তত্তে¡ (নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি) মনে করা হয়Ñ
কর্মীরা কাজকে অপছন্দ করে ও সুযোগ পেলেই কাজে ফাঁকি দেয়। এজন্য কঠোর নিয়ন্ত্রণ, ভয়ভীতি ও শাস্তির মাধ্যমে তাদেরকে দিয়ে কাজ করাতে হবে।
কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণে কর্মীদেরকে মতামত প্রদানের সুযোগ দেওয়া যাবে না।
ণ তত্তে¡ (ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি) মনে করা হয়Ñ
কর্মীরা কাজকে পছন্দ করে এবং তারা স্বপরিচালিত ও স্বনিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে।
উপযুক্ত পরিবেশ পেলে তারা দায়িত্ব গ্রহণ, সমস্যা সমাধানে সহযোগিতা প্রদান ও সিদ্ধান্ত গ্রহণেও যোগ্যতার প্রমাণ রাখে।
ঘ ‘স্বৈরাচারী নির্দেশনা উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে’Ñ বক্তব্যটি যৌক্তিক।
স্বৈরাচারী নির্দেশনায় নেতা সব ক্ষমতা নিজের কাছে কেন্দ্রীভ‚ত রাখেন। তিনি চাপ সৃষ্টি করে কর্মীদের কাছ থেকে কাজ আদায় করেন। এ নেতৃত্বে নেতা নিজে যা ভালো মনে করেন তা-ই করেন। এক্ষেত্রে ঊর্ধ্বতন নির্দেশ দানের ক্ষেত্রে অধস্তনদের মতামত বা চিন্তা-ভাবনাকে কোনো বিবেচনায় আনেন না।
উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মীদের কাছ থেকে কাজ আদায়ে চাপ সৃষ্টি করেন। তিনি সব বিষয়ে নিজের সিদ্ধান্তকেই প্রাধান্য দেন। যারা নির্দেশনা বাস্তবায়ন করবে তিনি তাদের উপেক্ষা করেন। এভাবে প্রধান নির্বাহী স্বৈরাচারী নির্দেশনা প্রদান করেন।
উক্ত স্বৈরাচারী নির্দেশনা কর্মীরা ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করে না। তাদের মতামতকে মূল্যায়ন না করায় তারা কাজে নিরুৎসাহিত হয়। তারা প্রতিষ্ঠানে কাজ করার মতো যথোপযুক্ত প্রেষণাও পায় না। ফলে প্রতিষ্ঠানকে তারা আপন ভাবতে পারে না। এজন্য দুই-একজন কর্মী প্রতিষ্ঠান ছেড়ে চলে যায়, যা প্রতিষ্ঠানকে সংকটে ফেলে দেয়। তাই বলা যায়, স্বৈরাচারী নির্দেশনা উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।

মমমপ্রশ্ন৩ জনাব সাব্বির অইঈ সিমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজের উৎপাদন ব্যবস্থাপক। কর্মীদের কাজ তিনি সময় ও মান অনুযায়ী নির্দিষ্ট করে দেন এবং এর ভিত্তিতে কাজ হচ্ছে কিনা তা তদারকি করেন। তবে কর্মীদের কাছ থেকে বেশি কাজ আদায়কেই তিনি গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন। তিনি কর্মীদের কোনো সুযোগ-সুবিধা দেন না। জনাব সাব্বির কর্মীদের চাইতে প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনকেই বেশি প্রাধান্য দেন। কর্মীরা এ অবস্থার উত্তরণ চায়। [রা. বো. ১৭]
অ ক. নির্দেশনা কী? ১
অ খ. একজন নেতার ঝুঁকি গ্রহণ ক্ষমতা বলতে কী বোঝায়? ২
অ গ. উদ্দীপকে উলি­খিত প্রতিষ্ঠানটিতে জনাব সাব্বির কোন ধরনের নেতৃত্ব অনুসরণ করেছেন? ব্যাখ্যা করো। ৩
অ ঘ. বর্তমান পরিস্থিতি উত্তরণের জন্য কোন ধরনের নেতৃত্ব উপযোগী হবে বলে তুমি মনে করো? যুক্তি দাও। ৪
৩ নং প্রশ্নের উত্তর অ
ক লক্ষ্য অর্জনে অধস্তনদের আদেশ, উপদেশ ও পরামর্শ প্রদান এবং তত্ত¡াবধানমূলক কাজকে নির্দেশনা বলে।
খ নেতার ঝুঁকি নেওয়ার সামর্থ্যকে তার ঝুঁকি গ্রহণ ক্ষমতা বলা হয়।
নেতাকে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে বিভিন্ন ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে হয়। এ সিদ্ধান্ত ইতিবাচক ফলাফল না দিলে নেতা ঝুঁকিতে পড়তে পারেন। এ জন্য নেতাকে অনেক চিন্তা-ভাবনা করে ঝুঁকি গ্রহণ করতে হয়। এমনকি অধীনস্থদের ব্যর্থতার দায়ভারও নেতাকেই বহন করতে হয়। নেতার ঝুঁকি গ্রহণের ক্ষমতার ওপরই সংগঠনের সফলতা ও ব্যর্থতা নির্ভর করে।
গ উদ্দীপকের জনাব সাব্বির কর্মকেন্দ্রিক নেতৃত্ব অনুসরণ করছেন।
কর্মকেন্দ্রিক নেতৃত্বে নেতা কর্মীর চেয়ে তার কাজকে বেশি প্রাধান্য দেন। এক্ষেত্রে নেতা মনে করেন কাজ সম্পাদনই মূল বিষয়। এজন্য তিনি কর্মীদের ওপর অতিরিক্ত কাজ চাপিয়ে দেন।
উদ্দীপকের জনাব সাব্বির অইঈ সিমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজের উৎপাদন ব্যবস্থাপক। তিনি কর্মীদের কাজের সময় ও মান নির্দিষ্ট করে দেন। এর ভিত্তিতে কর্মীরা কাজ করছে কিনা, তা তদারকি করেন। কর্মীদের ভালো-মন্দ বিষয় তিনি বিবেচনা করেন না। তিনি কর্মীদের উৎপাদন ক্ষমতাকেই বেশি প্রাধান্য দেন, তবে এজন্য কর্মীদের সুযোগ-সুবিধা প্রদান করেন না। এসব বৈশিষ্ট্য কর্মকেন্দ্রিক নেতৃত্বের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তাই বলা যায়, জনাব সাব্বির প্রতিষ্ঠানে কর্মকেন্দ্রিক নেতৃত্ব প্রদান করছেন।
ঘ উদ্দীপকের বর্তমান পরিস্থিতি উত্তরণের জন্য কর্মীকেন্দ্রিক নেতৃত্ব উপযোগী হবে বলে আমি মনে করি।
কর্মীকেন্দ্রিক নেতৃত্বে নেতা কাজের পাশাপাশি কর্মীদের মানসিক অবস্থা বিবেচনা করেন। নেতা সহানুভ‚তির সাথে কর্মীদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেন। এক্ষেত্রে নেতা কাজের জন্য কর্মীদের যথোপযুক্ত সুযোগ-সুবিধা প্রদান করেন। ফলে কর্মীরা প্রতিষ্ঠানের প্রতি অনুগত থাকে।
উদ্দীপকের জনাব সাব্বির অইঈ সিমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজের উৎপাদন ব্যবস্থাপক। তিনি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মীদের চেয়ে উৎপাদনকেই বেশি প্রাধান্য দেন। তিনি কর্মীদের কোনো সুযোগ-সুবিধা দেন না। কর্মীরা এ অবস্থার উত্তরণ চায়।
বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য প্রতিষ্ঠানে কর্মীকেন্দ্রিক নেতৃত্ব প্রয়োগ করা যায়। এরূপ নেতৃত্বে নেতা কর্মীদের ভালো-মন্দের বিষয়টি বিবেচনা করেন। নেতা কর্মীদের ওপর সহানুভ‚তির হাত বাড়িয়ে দিলে তারা প্রতিষ্ঠানের প্রতি অনুগত থাকবে। কর্মীরা তখন সঠিকভাবে নেতার নির্দেশ পালনে সচেষ্ট থাকবে। ফলে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জন সহজ হবে। এতে প্রতিষ্ঠান ও কর্মী উভয়ই লাভবান হবে। তাই আমি মনে করি, বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মীকেন্দ্রিক নেতৃত্ব প্রয়োগ করা উচিত।

মমমপ্রশ্ন৪ মি. নাজমুল হাসান একটি রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি শিল্প প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সাথে সবসময় কুশল বিনিময় করেন। তিনি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কেবল আদেশ-নির্দেশই প্রদান করেন না, সময় সময়ে পরামর্শ এবং প্রেষণাও দিয়ে থাকেন। তিনি আদেশ নির্দেশের পূর্বে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে অধস্তনদের মূল্যায়ন করেন। এতে অধস্তনরাও তার ওপর বেশ সন্তুষ্ট ও তারা সকল কাজে হাসান সাহবেকে সহযোগিতা করেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তাকে একক সিদ্ধান্তও নিতে হয়। ফলে প্রতিষ্ঠানটি একটি সফল প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। [দি. বো. ১৭]
অ ক. সংগঠন চার্ট কী? ১
অ খ. ইতিবাচক নেতৃত্ব কখন ব্যবহার করা হয়? ২
অ গ. উদ্দীপকে উলি­খিত মি. নাজমুল হাসান তার প্রতিষ্ঠানে কোন ধরনের নির্দেশনা অনুসরণ করেছেন? ব্যাখ্যা করো। ৩
অ ঘ. ব্যবস্থাপনা পরিচালকের একক সিদ্ধান্তের বিষয়টি কোন ধরনের নেতৃত্ব? উদ্দীপকের আলোকে বিশ্লেষণ করো। ৪
৪ নং প্রশ্নের উত্তর অ
ক প্রতিষ্ঠানের কার্যাবলিকে বিভিন্ন বিভাগ ও উপবিভাগে বিভক্ত করে প্রত্যেকের দায়িত্ব ও কর্তৃত্ব নির্ধারণের মাধ্যমে পারস্পরিক সম্পর্ককে চিত্রের সাহায্যে উপস্থাপন করাকে সংগঠন চার্ট বা সংগঠন চিত্র বলে।
খ কর্মীরা যখন স্বতঃস্ফ‚র্তভাবেই নেতার নির্দেশনা মেনে চলেন তখন ইতিবাচক নেতৃত্ব ব্যবহার করা হয়।
এরূপ নেতৃত্বে কর্মীদের উৎসাহ ও উদ্দীপনা সৃষ্টির মাধ্যমে কাজে মনোনিবেশ করা হয়। এক্ষেত্রে কর্মীদের কাজের প্রশংসা করা হয় এবং স্বীকৃতিস্বরূপ তাদের আর্থিক বা অনার্থিক সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা হয়। এরূপ নেতৃত্ব অধীনস্থদের মধ্যে সুদূরপ্রসারী ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
গ উদ্দীপকের মি. নাজমুল হাসান তার প্রতিষ্ঠানে পিতৃসুলভ নির্দেশনা অনুসরণ করছেন।
পিতৃসুলভ নির্দেশনার ক্ষেত্রে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা অধস্তনের ওপর অতিমাত্রায় কর্তৃত্বশালী হলেও কাজ আদায়ের ক্ষেত্রে øেহপূর্ণ ও আন্তরিক ব্যবহার করেন। ফলে অধস্তনরা ঊর্ধ্বতনের প্রতি সন্তুষ্ট থাকেন।
উদ্দীপকে মি. নাজমুল হাসান একটি রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি শিল্প প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সাথে সবসময় কুশল বিনিময় করেন। তিনি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কেবল আদেশ-নির্দেশই প্রদান করেন না, সময়ে সময়ে পরামর্শ ও প্রেষণাও দিয়ে থাকেন। তিনি আদেশ নির্দেশের পূর্বে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে অধস্তনদের মূল্যায়ন করেন। এসব বৈশিষ্ট্যের সাথে পিতৃসুলভ নির্দেশনার মিল পাওয়া যায়। সুতরাং, মি. নাজমুল হাসান প্রতিষ্ঠানে পিতৃসুলভ নির্দেশনা অনুসরণ করছেন।
ঘ ব্যবস্থাপনা পরিচালকের একক সিদ্ধান্তের বিষয়টি পিতৃসুলভ নেতৃত্ব।
পিতৃসুলভ নেতৃত্বে নেতা কর্মীদের সাথে পিতার মতো আচরণ করে আস্থাশীল সম্পর্ক তৈরি করেন। নেতা সর্বদা অধস্তনদের প্রতি সদয় থাকেন। এরূপ নেতা অধঃস্তনদের অভাব-অভিযোগের প্রতি মনোনিবেশ করেন।
উদ্দীপকে মি. নাজমুল হাসান একটি রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি কর্মীদের আদেশ নির্দেশ প্রদানের পূর্বে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে তাদের মূল্যায়ন করেন। এতে অধস্তনরা তার ওপর বেশ সন্তুষ্ট থাকেন এবং সব কাজে তারা হাসান সাহেবকে সহযোগিতা করেন। তবে কিছু ক্ষেত্রে তাকে একক সিদ্ধান্তও হয়, যা পিতৃসুলভ নেতৃত্বের স্বরূপ।
পিতৃসুলভ নেতৃত্বে নেতা অধস্তনদের প্রতি অতিমাত্রায় কর্তৃত্বশালী হলেও কাজ আদায়ে পিতা-পুত্রের ন্যায় আচরণ করেন। এ নেতৃত্বে নেতা একক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেও কর্মীদের প্রতি সদয় আচরণ করেন এবং তাদের অভাব অভিযোগ শোনেন। উদ্দীপকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক এরূপ নেতৃত্ব পদ্ধতি অনুসরণ করেন। ফলে কর্মীরা কাজের প্রতি আনুগত্য ও কঠোর পরিশ্রমী হয়। এতে প্রতিষ্ঠানটি সফল প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত লাভ করে। তাই বলা যায়, হাসান সাহেবের একক সিদ্ধান্তের বিষয়টি পিতৃসুলভ নেতৃত্ব।

মমমপ্রশ্ন৫ একটি প্রতিষ্ঠানের জেনারেল ম্যানেজার মি. আশরাফ বিভাগীয় প্রধানদের নিয়ে মাঝে মধ্যেই সভা করেন। তিনি প্রত্যেক বিভাগের সুবিধা-অসুবিধা শোনেন এবং করণীয় নির্ধারণ করে দেন। প্রতিষ্ঠানটির বিক্রয় ব্যবস্থাপকের সিদ্ধান্ত হলো এভাবে সভা না করে অধস্তনদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দিয়ে চাপ দিলে কাজ ভালো হবে। প্রথমদিকে তার কৌশল কিছুটা কাজে আসলেও পরে বিক্রয় কমেছে। [দি. বো. ১৭]
অ ক. শিক্ষণ কী? ১
অ খ. সমন্বয় কেন প্রয়োজন? ২
অ গ. মি. আশরাফ প্রদত্ত নেতৃত্বের ধরন ব্যাখ্যা করো। ৩
অ ঘ. বিক্রয় ব্যবস্থাপককে ভালো করতে হলে নতুন নির্দেশনা পদ্ধতি গ্রহণ করতে হবে? তোমার মতামত দাও। ৪
৫ নং প্রশ্নের উত্তর অ
ক প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত কর্মীদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে শিক্ষাদান কার্যক্রমকে শিক্ষণ বলে ।
খ সমন্বয় হলো প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের মধ্যে দলীয় প্রচেষ্টা, ঐক্য ও শৃঙ্খলা বিধানের প্রক্রিয়া।
প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তি, বিভাগের কাজের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ কর্মপ্রচেষ্টা জোরদার হলে কাজে ভারসাম্য সৃষ্টি হয়। সমন্বয় প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক কাজে গতিশীলতা বাড়ায়। ফলে মূল লক্ষ্য অর্জন সহজ হয়। এজন্যই প্রতিষ্ঠানে সমন্বয় অত্যন্ত প্রয়োজন।
গ উদ্দীপকের মি. আশরাফ গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব প্রদান করেন।
এ নেতৃত্বে নেতা নিজের কাছে সব ক্ষমতা কেন্দ্রীভ‚ত না রেখে অধস্তনদের সাথে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে কাজ পরিচালনা করেন। এরূপ নেতৃত্ব কর্মীদের মনে স্বতঃস্ফ‚র্ততা নিয়ে আসে। ফলে প্রতিষ্ঠানের কাজে গতিশীলতা আসে।
উদ্দীপকের জেনারেল ম্যানেজার মি. আশরাফ বিভাগীয় প্রধানদের নিয়ে মাঝে মধ্যেই সভা করেন। তিনি প্রত্যেক বিভাগের কর্মীদের সুবিধা-অসুবিধা শোনেন এবং করণীয় নির্ধারণ করে দেন। এতে কর্মীরা নিজেদের মতামত দিতে পারে বলে কাজের প্রতি তাদের আগ্রহ বাড়ে। যেকোনো কাজ তারা স্বতঃস্ফ‚র্তভাবে করার চেষ্টা করে। এসব বৈশিষ্ট্য গণতান্ত্রিক নেতৃত্বের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। সুতরাং, মি. আশরাফ গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব অনুসরণ করেন।
ঘ বিক্রয় ব্যবস্থাপককে ভালো করতে হলে স্বৈরতান্ত্রিক নির্দেশনার পরিবর্তে পরামর্শমূলক নির্দেশনা পদ্ধতি গ্রহণ করতে হবে।
স্বৈরতান্ত্রিক নির্দেশনায় নেতা সব ক্ষমতা নিজের কাছে কেন্দ্রীভ‚ত করে রাখেন। কাজ আদায়ের জন্য তিনি কর্মীদের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন। অন্যদিকে পরামর্শমূলক নির্দেশনায় নেতা অধস্তনদের সাথে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে কাজের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। এতে কর্মীরা নেতার প্রতি অনুগত থাকে। ফলে প্রতিষ্ঠানের কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা সহজ হয়।
উদ্দীপকের বিক্রয় ব্যবস্থাপক অধস্তনদের বিক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেন। এরপর তা বাস্তবায়নের জন্য কর্মীদের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন। এতে কর্মীরা মনোযোগ সহকারে কাজ করতে পারে না। এ ব্যবস্থায় কর্মীরা চাকরি হারানোর ভয়ে থাকে; তখন তাদের চাকরি ছাড়ার প্রবনতা বেড়ে যায়। ফলে প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় কমে যায়।
এরূপ পরিস্থিতিতে বিক্রয় ব্যবস্থাপককে ভালো করতে হলে পরামর্শমূলক নির্দেশনা প্রয়োগ করতে হবে। কর্মীদের সাথে আলোচনা করে বিক্রয় লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দিতে হবে, তা হলেই ঐ নির্দেশ বাস্তবায়নে তারা মনোযোগী হবে। কর্মীদের মতামতকে মূল্যায়ন করা হলে প্রতিষ্ঠানের প্রতি তাদের কাজের আগ্রহ বেড়ে যাবে। ফলে প্রতিষ্ঠান সহজে লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে। তাই বিক্রয় ব্যবস্থাপককে প্রতিষ্ঠানের জন্য পরামর্শমূলক নির্দেশনা প্রয়োগ করাই বেশি যথোপযুক্ত হবে।

মমমপ্রশ্ন৬ আশিক রসুলপুরে ১০ জন শ্রমিক নিয়ে একটি বেকারি শুরু করে। তার আÍবিশ্বাস, দূরদর্শিতা এবং কর্মীদের সাথে উত্তম আচরণের ফলে ব্যবসায়ে সফলতা আসে। তিনি সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে কর্মীদের অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়ায় প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনশীলতা ও পণ্যের গুণগত মান বৃদ্ধি পেয়েছে এবং তার বেকারিতে উৎপাদিত পণ্যের বাজার আশপাশের এলাকাতে সম্প্রসারিত হচ্ছে। [চ. বো. ১৭]
অ ক. স্বৈরতান্ত্রিক নেতৃত্ব কী? ১
অ খ. একজন নেতাকে দূরদর্শী হতে হয় কেন? ব্যাখ্যা করো। ২
অ গ. উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানে কোন ধরনের নেতৃত্ব বিদ্যমান? ব্যাখ্যা করো। ৩
অ ঘ. নেতৃত্বের সাফল্যের জন্য উদ্দীপকে উলি­খিত গুণাবলিই কি যথেষ্ট বলে তুমি মনে করো? তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও। ৪
৬ নং প্রশ্নের উত্তর অ
ক সিদ্ধান্ত গ্রহণে যখন অধস্তনদের মতামতকে গ্রাহ্য না করে নেতা এককভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন, তখন তাকে স্বৈরতান্ত্রিক নেতৃত্ব বলে।
খ ভবিষ্যৎ সম্পর্কে ধারণা করার ক্ষমতা বা কল্পনাশক্তি থাকাই হলো নেতার দূরদর্শিতা।
ভবিষ্যৎ অনুমান করতে পারলে একজন নেতা সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। এক্ষেত্রে নেতা সম্ভাব্য করণীয় আগে থেকেই নির্ধারণ করে রাখতে পারেন। ফলে তিনি সহজেই প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারেন। এজন্য একজন নেতাকে দূরদর্শিতার অধিকারী হতে হয়।
গ উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানে গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব বিদ্যমান।
গণতান্ত্রিক নেতৃত্বে নেতা নিজের কাছে সব ক্ষমতা কেন্দ্রীভ‚ত না রেখে অধস্তনদের সাথে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে কার্য পরিচালনা করেন। এরূপ নেতৃত্ব কর্মীদের মনে স্বতঃস্ফ‚র্ততা বজায় রাখে।
উদ্দীপকে আশিক রসুলপুরে ১০ জন শ্রমিক নিয়ে একটি বেকারি শুরু করেন। তিনি তার প্রতিষ্ঠানের যেকোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে কর্মীদের অংশগ্রহণের সুযোগ দেন। কর্মীদের মতামত নিয়েই তিনি চ‚ড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। এসব বৈশিষ্ট্য গণতান্ত্রিক নেতৃত্বের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানে গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব বিদ্যমান।
ঘ নেতৃত্বের সাফল্যের জন্য উদ্দীপকে উলি­খিত (আÍবিশ্বাস, দূরদর্শিতা ও উত্তম আচরণ) গুণাবলিই যথেষ্ট নয় বলে আমি মনে করি।
কোনো দল বা গোষ্ঠীকে একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যপানে এগিয়ে নেওয়ার কৌশলকে নেতৃত্ব বলে। যেকোনো প্রতিষ্ঠানের সঠিক কর্ম সফলতা লাভের জন্য নেতৃত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একজন আদর্শ নেতা তার নেতৃত্ব প্রদানের মাধ্যমে কাজে সফলতা অর্জন করেন। যেকোনো পরিস্থিতিতে নেতা নির্ভীক বা ভয়হীন থেকে লক্ষ্যপানে এগিয়ে যান।
উদ্দীপকে আশিক রসুলপুরে ১০ জন শ্রমিক নিয়ে একটি বেকারি শুরু করেন। তার নেতৃত্বের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হয়। একজন নেতা হিসেবে তার মধ্যে রয়েছে আÍবিশ্বাস, দূরদর্শিতা আর কর্মীদের সাথে ভালো ব্যবহার করার গুণ।
কিন্তু একজন আদর্শ নেতার মধ্যে শুধু এসব গুণ থাকা যথেষ্ট নয়। একজন আদর্শ নেতার সঠিক নেতৃত্বের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান এগিয়ে চলে, প্রতিষ্ঠানে সফলতা আসে। তাই একজন নেতার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের গুণ থাকা প্রয়োজন। উদ্দীপকে আশিকের মধ্যে শুধু আÍবিশ্বাস, দূরদর্শিতা এবং কর্মীদের সাথে উত্তর আচরণের গুণ রয়েছে, যা প্রতিষ্ঠানের জন্য যথেষ্ট নয়। আমি মনে করি তার মধ্যে আরও গুণ থাকা প্রয়োজন। যেমন: সাহস, ধৈর্য, ঝুঁকি গ্রহণের মানসিকতা, অধস্তন সম্পর্কে জ্ঞান, ন্যায়পরায়ণতা, শিক্ষা ইত্যাদি। সুতরাং নেতৃত্বের সাফল্যের জন্য উদ্দীপকে উলি­খিত গুণাবলির পাশাপাশি এসব গুণও যথেষ্ট প্রয়োজনীয়।

মমমপ্রশ্ন৭ জনাব রশীদ ও জনাব ইমন যথাক্রমে ডরিন লি. ও আলিফ লি.-এর স্বত্বাধিকারী। জনাব রশীদের উদাসীনতার সুযোগে ডরিন লি.-এর ব্যবস্থাপক ও কর্মকর্তাগণ নিজেদের খেয়াল-খুশিমতো কাজ পরিচালনা করেন। ফলে উক্ত প্রতিষ্ঠানটির সাফল্য দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। পক্ষান্তরে, জনাব ইমন তার প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক ও অন্যান্য কর্মকর্তাদেরকে সাথে নিয়ে এবং তাদের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করায় আলিফ লি.-এর সাফল্য দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। [চ. বো. ১৭]
অ ক. গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব কী? ১
অ খ. নির্দেশনাকে প্রশাসনের হৃৎপিণ্ড বলা হয় কেন? ২
অ গ. ডরিন লি.-এ কোন ধরনের নেতৃত্ব বিদ্যমান? ব্যাখ্যা করো। ৩
অ ঘ. ‘পরামর্শমূলক নির্দেশনাই আলিফ লি.-এর সফলতার কারণ’Ñ উদ্দীপকের আলোকে তোমার যুক্তি দাও। ৪
৭ নং প্রশ্নের উত্তর অ
ক যে নেতৃত্ব ব্যবস্থায় নেতা অধস্তনদের সাথে আলাপ-আলোচনা ও পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও কাজ পরিচালনা করেন, তাকে গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব বলে।
খ লক্ষ্য অর্জনে অধস্তনদের আদেশ, উপদেশ ও পরামর্শ প্রদান এবং তত্ত¡াবধানমূলক কাজকে নির্দেশনা বলে।
হৃৎপিণ্ড মানুষের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সচল রাখতে সাহায্য করে। এটি কাজ না করলে মানুষ অচল হয়ে পড়ে। ঠিক তেমনিভাবে একটি প্রতিষ্ঠানের প্রশাসন যেসব পরিকল্পনা, নিয়ম-নীতি প্রণয়ন করে সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য কর্মীদের নির্দেশনা প্রদান করা প্রয়োজন। নির্দেশনা প্রদান করা না হলে প্রশাসনের কার্যক্রম ব্যাহত হয়। এজন্যই নির্দেশনাকে প্রশাসনের হৃৎপিণ্ড বলা হয়।
গ উদ্দীপকের ডরিন লি. এ লাগামহীন নেতৃত্ব বিদ্যমান।
লাগামহীন নেতৃত্বে নেতা কমীদের ওপর দায়িত্ব দিয়ে নিজে কর্মবিমুখ থাকেন। নেতা কমীদের সুনির্দিষ্টভাবে আদেশ-নির্দেশ দেন না। এক্ষেত্রে কর্মীরা নিজেদের খেয়াল-খুশিমতো কাজ করেন।
উদ্দীপকের জনাব রশীদ ডরিন লি.-এর একজন স্বত্বাধিকারী। তিনি প্রতিষ্ঠানের কাজে সবসময় উদাসীন থাকেন। এ সুযোগে তার প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক ও কর্মকর্তাগণ নিজেদের খেয়াল-খুশিমতো প্রতিষ্ঠানের কাজ পরিচালনা করেন। উক্ত প্রতিষ্ঠানের অধস্তনরা অবাধ স্বাধীনতা ভোগ করেন। এসব বৈশিষ্ট্য লাগামহীন নেতৃত্বের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তাই বলা যায়, ডরিন লি. এ লাগামহীন নেতৃত্ব অনুসরণ করা হয়।
ঘ ‘পরামর্শমূলক নির্দেশনাই আলিফ লি.-এর সফলতার কারণ’ Ñউদ্দীপকের আলোকে বক্তব্যটি যৌক্তিক।
এ পদ্ধতিতে নেতা নির্দেশনার বিষয়বস্তু নিয়ে অধস্তনদের সাথে আলাপ-আলোচনা করেন এবং তাদের পরামর্শ গ্রহণের চেষ্টা করেন। এক্ষেত্রে ঊর্ধ্বতন ও অধস্তনদের মধ্যে সুসম্পর্ক লক্ষ করা যায়। ফলে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনে সবাই স্বতঃস্ফ‚র্তভাবে কাজ করেন।
উদ্দীপকের জনাব ইমন ‘আলিফ লি’.-এর একজন স্বত্বাধিকারী। তিনি তার প্রতিষ্ঠানের যেকোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে কর্মীদের সাথে আলাপ-আলোচনা করেন। অতঃপর তিনি কর্মীদের জন্য করণীয় নির্ধারণ করে দেন।
আলিফ লি.-এ পরামর্শমূলক নির্দেশনা প্রদান করায় কর্মীরা তাদের করণীয় সম্পর্কে আগে থেকেই জানতে পারেন। সিদ্ধান্ত গ্রহণে নিজেদের মতামত দিতে পেরে কাজের প্রতি কর্মীদের উৎসাহ বেড়ে যায়। ফলে প্রতিষ্ঠানের সফলতা দিন দিন বৃদ্ধি পায়। তাই বলা যায়, পরামর্শমূলক নির্দেশনাই আলিফ লি.-এর সফলতার অন্যতম কারণ।

মমমপ্রশ্ন৮ প্রাইম কোম্পানি লি.-এর কর্মচারীরা তাদের মধ্যে সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ জনাব মোস্তাফিজকে কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সভাপতি হিসেবে মনোনীত করে। প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব ইকবাল কর্মীদের ভালো-মন্দের গুরুত্ব না দিয়ে শুধু প্রতিষ্ঠানের কাজকর্ম ঠিকমতো পরিচালনা করা হচ্ছে কিনা তা তত্ত¡াবধান করেন। যেকোনো ভাবে কাজ আদায় করাটাই তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। [সি. বো. ১৭]
অ ক. নেতা কে? ১
অ খ. ‘নিদের্শনা সর্বদা নিæগামী’Ñ ব্যাখ্যা করো। ২
অ গ. উদ্দীপকে জনাব মোস্তাফিজকে আনুষ্ঠানিকতার ভিত্তিতে কোন ধরনের নেতা বলা যায়? ব্যাখ্যা করো। ৩
অ ঘ. উদ্দীপকের আলোকে অত্র প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নেতৃত্বের ধরন কর্মীবান্ধব ও আধুনিক নয়Ñ তুমি কি এ বক্তব্যের সাথে একমত? বিশ্লেষণ করো। ৪
৮ নং প্রশ্নের উত্তর অ
ক যিনি প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্য অর্জনের উদ্দেশ্যে অধীনস্থদের প্রভাবিত করে তাদের সর্বাধিক সামর্থ্যকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করেন তিনিই নেতা।
খ লক্ষ্য অর্জনে অধস্তনদের আদেশ দান, উপদেশ ও পরামর্শ প্রদান এবং তত্ত¡াবধান কার্যকে নির্দেশনা বলে।
নির্দেশনা সবসময় ঊর্ধ্বতনদের নিকট থেকে নিæস্তরে কর্মরত কর্মীদের নিকট প্রবাহিত হয়। নির্দেশনার মাধ্যমেই কর্মীরা কোন কাজ, কীভাবে, কখন সম্পাদন করবে সে সম্পর্কে ঊর্ধ্বতনের নিকট থেকে ধারণা পায়। কিন্তু নিæস্তরের কর্মীরা কখনই ঊর্ধ্বতন কর্মীদের নির্দেশনা প্রদান করতে পারেন না। অধীনস্থরা শুধু ঊর্ধ্বতনের আদেশ পালন করতে বাধ্য থাকেন। তাই বলা হয়, নির্দেশনা সর্বদাই নিচের দিকে প্রবাহিত হয়।
গ উদ্দীপকে জনাব মোস্তাফিজকে অনানুষ্ঠানিক নেতা বলা যায়।
অনানুষ্ঠানিক নেতৃত্ব প্রাতিষ্ঠানিক কোনো নিয়ম-নীতির ওপর ভিত্তি না করে একসাথে কাজ করতে গিয়ে গড়ে ওঠে। এ নেতৃত্বের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের যেকোনো সমস্যা অনানুষ্ঠানিকভাবে সম্পন্ন করা যায়, যা প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের মধ্যে কাজে গতিশীলতা আনে।
উদ্দীপকে প্রাইম কোম্পানি লি.-এর কর্মচারীরা তাদের মধ্যে সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ জনাব মোস্তাফিজকে কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সভাপতি হিসেবে মনোনীত করে, যা প্রতিষ্ঠানের নিয়ম-নীতি মেনে করা হয়নি। উক্ত ব্যক্তি সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন প্রতিষ্ঠানের অনানুষ্ঠানিক সম্পর্কের ভিত্তিতে। এ নেতৃত্ব দ্বারা প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ সমস্যা এবং যেকোনো কাজে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হয়, যা অনানুষ্ঠানিক নেতৃত্বের স্বরূপ। তাই বলা যায়, প্রাইম কোম্পানি লি.-এ জনাব মোস্তাফিজ একজন অনানুষ্ঠানিক নেতা হিসেবে কাজ করছে।
ঘ উদ্দীপকের আলোকে অত্র প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নেতৃত্বের ধরন হলো কর্মকেন্দ্রিক, যা কর্মীবান্ধব ও আধুনিক নয়- আমি এ বক্তব্যের সাথে একমত পোষণ করি।
কর্মকেন্দ্রিক নেতৃত্বের মাধ্যমে কর্মীদের নিকট থেকে বেশি কাজ আদায়কেই নেতা প্রাধান্য দেন। এরূপ নেতৃত্ব কর্মীদের কাম্য নয়।
উদ্দীপকে প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব ইকবাল কর্মীদের ভালো-মন্দের গুরুত্ব না দিয়ে শুধু প্রতিষ্ঠানের কাজকর্ম ঠিকমতো পরিচালনা করা হচ্ছে কিনা, তা তত্ত¡াবধান করেন। যেকোনোভাবে কাজ আদায় করাটাই তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। যে কারণে জনাব ইকবাল অনেক সময় অধিক কর্তৃত্ব প্রয়োগ বা ভয়-ভীতি প্রদর্শন করেও কাজ আদায়ের চেষ্টা করেন। এক্ষেত্রে তার মনোভাব কর্ম কেন্দ্রিক।
জনাব ইকবাল প্রতিষ্ঠানে যে নেতৃত্ব প্রদান করেন তাতে কর্মীরা কাজের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠে না। এতে প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম গতিহীন হয়ে পড়ে। এ ধরনের নেতৃত্বের ফলে কর্মীদের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করে। তাই বলা যায়, জনাব ইকবালের এ কর্মকেন্দ্রিক নেতৃত্ব তার প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন কাজ ও উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করে থাকে। এরূপ নেতৃত্ব কর্মীবান্ধব ও আধুনিক নয়।

মমমপ্রশ্ন৯ জনাব জাহিন একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি নিজে প্রতিষ্ঠানে খুব একটা সময় দেন না বরং কর্মীদের ওপর দায়িত্ব দিয়ে নিশ্চিন্তে থাকতে চান। ফলে প্রতিষ্ঠানটি মারাÍক আর্থিক সংকটে পড়ে যায়। এ অবস্থা হতে উত্তরণে তিনি নেতৃত্বের কৌশল পরিবর্তন করে কর্মীদের সাথে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে কাজ পরিচালনা করতে চান। [য. বো. ১৭]
অ ক. নেতৃত্ব কী? ১
অ খ. গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব উত্তম কেন? ২
অ গ. জনাব জাহিন প্রতিষ্ঠানে কী ধরনের নেতৃত্ব অনুসরণ করছেন? ব্যাখ্যা করো। ৩
অ ঘ. প্রতিষ্ঠানের আর্থিক সংকট নিরসনে জনাব জাহিন কর্তৃক সিদ্ধান্ত কতটুকু যথার্থ বলে তুমি মনে করো? অভিমত দাও। ৪
৯ নং প্রশ্নের উত্তর অ
ক অধীনস্থদের প্রভাবিত করে তাদের সর্বাধিক সামর্থ্যকে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনে কাজে লাগানোর কৌশলকে নেতৃত্ব বলে।
খ যে নেতৃত্বে নেতা অধস্তনদের সাথে আলাপ-আলোচনা, পরামর্শ করে কার্য পরিচালনা করেন, তাকে গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব বলে।
এক্ষেত্রে নেতা সব ক্ষমতা নিজের হাতে কেন্দ্রীভ‚ত না রেখে প্রয়োজনীয় কর্তৃত্ব অধীনস্থদের নিকট অর্পণ করেন। তাছাড়া সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে অধীনস্থদের সঙ্গে পরামর্শ করেন। যার কারণে নেতার প্রতি তাদের ইতিবাচক ধারণা সৃষ্টি হয়। ফলে এরূপ নেতৃত্বের প্রতি অধীনস্থরা সন্তুষ্ট থাকেন। এতে কর্মীদের কাজের প্রতি মনোবল বৃদ্ধি পায় এবং তারা সর্বোচ্চ সামর্থ্য দিয়ে লক্ষ্য অর্জনের চেষ্টা করেন। এজন্যই বলা হয়, গণতান্ত্রিক নেতৃত্বই উত্তম।
গ উদ্দীপকে জনাব জাহিন প্রতিষ্ঠানে মুক্ত বা লাগামহীন নেতৃত্ব অনুসরণ করছেন।
মুক্ত বা লাগামহীন নেতৃত্বে নেতা কর্মীদের ওপর দায়িত্ব দিয়ে নিশ্চিত থাকেন। এরূপ নেতা নিজে কাজ করতে পছন্দ করেন না। কর্মীদের ওপরও সুনির্দিষ্ট আদেশ দেন না। কর্মীরা নিজেদের ইচ্ছা অনুযায়ী কাজ করেন।
উদ্দীপকের জনাব জাহিন তার প্রতিষ্ঠানে খুব একটা সময় দেন না। বরং কর্মীদের ওপর দায়িত্ব দিয়ে নিশ্চিন্ত থাকতে চান। অর্থাৎ প্রতিষ্ঠানের কাজ বা লক্ষ্য বাস্তবায়নে জনাব জাহিনের ভ‚মিকা নেই। ফলে কর্মীরা তার প্রতিষ্ঠানে ইচ্ছেমতো কাজ করেন। এতে প্রতিষ্ঠান ক্ষতির সম্মুখীন হয়, যা মুক্ত বা লাগামহীন নেতৃত্বের প্রতিফলন। সুতরাং বলা যায়, জনাব জাহিন প্রতিষ্ঠানে মুক্ত বা লাগামহীন নেতৃত্ব অনুসরণ করছেন।
ঘ উদ্দীপকে প্রতিষ্ঠানের আর্থিক সংকট নিরসনে জনাব জাহিন কর্তৃক গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব অনুসরণ অত্যন্ত যথার্থ বলে আমি মনে করি।
গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব ব্যবস্থায় নেতা সব ক্ষমতা নিজের হাতে কেন্দ্রীভ‚ত না রেখে প্রয়োজনীয় কর্তৃত্ব অধীনস্থদের নিকট অর্পণ করেন।
উদ্দীপকের জনাব জাহিন প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করলেও কর্মীদের ওপর সব দায়িত্ব দিয়ে নিশ্চিন্ত থাকেন এবং তিনি নিজে প্রতিষ্ঠানে সময় দেন না। ফলে প্রতিষ্ঠান মারাÍক আর্থিক সংকটে পড়েছে। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের আর্থিক সংকট নিরসনের মাধ্যমে লাভজনক করতে জনাব জাহিনের নেতৃত্বের ধরন পরিবর্তন করে গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব প্রদান করতে হবে।
নতুন গৃহীত নেতৃত্বে কর্মীরা মতামত প্রদানের সুযোগ পাওয়ায় নেতার প্রতি অনুগত থাকবে এবং কাজের প্রতি মনোযোগী হবে। ফলে প্রতিষ্ঠানে কর্মীদের কাজের মান বৃদ্ধি পাবে। কর্মীদের কাজের মান বৃদ্ধি পেলে প্রতিষ্ঠানও লাভজনক হবে। তাই জনাব জাহিনের করণীয় হলো গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব পদ্ধতি অনুসরণ, যা প্রতিষ্ঠানের জন্য অত্যন্ত যথার্থ হবে।

মমমপ্রশ্ন১০ শরিফ স্টাইল লি. একটি উৎপাদনমুখী প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানে প্রায় ১,০০০ কর্মী কাজ করে। প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক মনে করেন কর্তৃপক্ষের অধিক সহানুভ‚তিশীলতার সুবাদে কর্মীরা অলস হয়ে পড়েছে এবং কর্মীরা কাজ এড়িয়ে চলায় প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে। তাই তিনি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে কর্মীদের থেকে কাজ আদায় করতে চান এবং কোনো পরিকল্পনা প্রণয়নে কর্মীদের অংশগ্রহণের সুযোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। [ব. বো. ১৭]
ক. নেতা কাকে বলে? ১
খ. পরামর্শমূলক নির্দেশনা বলতে কী বোঝ? ২
গ. ক্ষমতা প্রয়োগের ধরন বিচারে শরিফ স্টাইল লি.-এ কোন ধরনের নেতৃত্ব বিদ্যমান আছে? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. উলি­খিত প্রতিষ্ঠানে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণের যৌক্তিকতা বিশ্লেষণ করো। ৪
১০ নং প্রশ্নের উত্তর
ক যিনি প্রাতি®¤ানিক লক্ষ্য অর্জনের উদ্দেশ্যে অধীনস্থদের প্রভাবিত করে তাদের সর্বাধিক সামর্থ্যকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করেন, তিনিই নেতা।
খ প্রতিষ্ঠানে নির্দেশনা দেওয়ার পূর্বে যারা নির্দেশনা বাস্তবায়ন করবে তাদের সাথে পরামর্শ করে নির্দেশনার বিষয়বস্তু ঠিক করার প্রক্রিয়াকে পরামর্শমূলক নির্দেশনা বলে।
এ ধরনের নির্দেশনা কর্মীরা আনন্দের সাথে গ্রহণ করে। ফলে তাদের কর্মে উৎসাহ-উদ্দীপনা বৃদ্ধি পায়। তাছাড়া পরামর্শমূলক নির্দেশনা কর্মীদের সাথে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে তৈরি করা হয় বলে তা অধিক কার্যকর ও বাস্তবসম্মত হয়। তাই এ ধরনের নির্দেশনার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করাও সহজ হয়।
গ ক্ষমতা প্রয়োগের ধরন বিচারে উদ্দীপকের শরিফ স্টাইল লি.-এ মুক্ত বা লাগামহীন নেতৃত্ব বিদ্যমান।
মুক্ত বা লাগামহীন নেতৃত্বে নেতা কর্মীদের দায়িত্ব দিয়ে নিশ্চিন্ত থাকেন এবং কর্মীরা ইচ্ছা অনুযায়ী কাজ করে। এক্ষেত্রে নেতা নিজে কাজ করতে পছন্দ করেন না। আবার কর্মীদেরকে সুনির্দিষ্ট আদেশও দেন না।
উদ্দীপকের শরিফ স্টাইল লি. একটি উৎপাদনমুখী প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানে প্রায় ১,০০০ কর্মী কাজ করে। প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক মনে করেন কর্তৃপক্ষের অধিক সহানুভুতিশীলতার সুবাদে কর্মীরা অলস হয়ে পড়েছে । কর্মীরা কাজ এড়িয়ে চলায় প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে। এ কাজগুলো লাগামহীন নেতৃত্বের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। তাই বলা যায়, শরিফ স্টাইল লি.-এ মুক্ত বা লাগামহীন নেতৃত্ব বিদ্যমান।
ঘ উদ্দীপকে উলি­খিত প্রতিষ্ঠানে পরবর্তী পদক্ষেপে যে নেতৃত্ব গ্রহণ করা হয়েছে তা হলো স্বৈরতান্ত্রিক নেতৃত্ব। এটি প্রতিষ্ঠানের বর্তমান পরিস্থিতিতে যৌক্তিক বলে আমি মনে করি।
স্বৈরতান্ত্রিক নেতৃত্বে নেতা সব ক্ষমতা নিজের কাছে রাখেন এবং ইচ্ছামতো এককভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। এ নেতৃত্বে নেতা যা ভালো মনে করেন তা-ই করেন । তিনি কাজের জন্য কারো নিকট জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকেন না।
উদ্দীপকে প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক মনে করেন কর্তৃপক্ষের অধিক সহানুভুতিশীলতার সুবাদে কর্মীরা অলস হয়ে পড়েছে। কর্মীরা কাজ এড়িয়ে চলায় প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে। তাই তিনি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে কর্মীদের কাছ থেকে কাজ আদায় করতে চান। তাছাড়া কোনো পরিকল্পনা প্রণয়নে কর্মীদের অংশগ্রহণের সুযোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। উক্ত সিদ্ধান্তটি স্বৈরতান্ত্রিক নেতৃত্বেরই প্রতিফলন।
প্রতিষ্ঠানটি প্রথম দিকে যে নেতৃত্ব অনুসরণ করেছে তাতে কর্মীদের ভিতর অলস ও অবহেলার প্রবণতা দেখা যায়। সেজন্য ব্যবস্থাপক পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠানের কাজ ভালোভাবে সম্পন্ন করার জন্য স্বৈরতান্ত্রিক নেতৃত্ব অনুসরণ করতে চান। এর ফলে কর্মীরা নেতার নির্দেশে কাজ করতে বাধ্য থাকবে। কাজের চাপ ও শাস্তির ভয়ে তারা দ্রুত কাজ সম্পন্ন করবে। প্রতিষ্ঠানে নেতার কর্তৃত্বও বজায় থাকবে। এ নেতৃত্ব কর্মীরা অপছন্দ করলেও মাঝে মাঝে এটি প্রতিষ্ঠানের জন্য অনেক সাফল্য নিয়ে আসে। সুতরাং বলা যায়, উক্ত প্রতিষ্ঠানে সাময়িকভাবে স্বৈরতান্ত্রিক নেতৃত্ব গ্রহণ করাই বেশি যুক্তিযুক্ত হবে।

মমমপ্রশ্ন১১ ক্রয় ব্যবস্থাপক জনাব সাকিব প্রাতিষ্ঠানিক কাজে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সংশ্লিষ্ট কর্মীদের মতামত গ্রহণ এবং প্রয়োজনীয় কর্তৃত্ব অধস্তনদের কাছে হস্তান্তর করেন। পক্ষান্তরে অর্থ বিভাগের ব্যবস্থাপক জনাব রিপন কারও সাথে পরামর্শ না করে নিজের মতো করে কাজ করেন। অধস্তনদের প্রয়োজনাতিরিক্ত আদেশ প্রদান, ভয়-ভীতি প্রদর্শন এবং অহেতুক তাদের কাজে হস্তক্ষেপ করেন। [ঢা. বো. ১৬]
অ ক. দায়িত্ব কী? ১
অ খ. কর্মী নির্বাচন বলতে কী বোঝায়? ব্যাখ্যা করো। ২
ই গ. জনাব রিপনের কোন ধরনের মনোভাব নেতৃত্ব বিকাশে সমস্যা সৃষ্টি করবে? ব্যাখ্যা করো। ৩
অ ঘ. জনাব সাকিব ও জনাব রিপনের নেতৃত্বের ধরনের তুলনামূলক বিশ্লেষণ করো। ৪
১১ নং প্রশ্নের উত্তর অ
ক সন্তোষজনকভাবে কোনো কাজ সম্পাদন করার বাধ্যবাধকতা বা কর্তব্যকে দায়িত্ব বলে।
খ চাকরিপ্রার্থীদের মধ্য থেকে প্রয়োজনীয় সংখ্যক যোগ্য কর্মী বাছাইয়ের কাজকে কর্মী নির্বাচন বলে।
কর্মী নির্বাচন প্রক্রিয়ায় সম্ভাব্য চাকরিপ্রার্থীদের আবেদনপত্র গ্রহণ, বাছাই, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। প্রয়োজনে কর্মীদের যোগ্যতা, বুদ্ধিমত্তা পরীক্ষাও গ্রহণ করা হয়। এসব পরীক্ষার মাধ্যমে উপযুক্ত কর্মীকে বাছাই করে অন্য চাকরিপ্রার্থীদের বাদ দেওয়া হয়। এভাবে যোগ্য প্রার্থী নির্বাচন করা হয়।
গ উদ্দীপকে জনাব রিপনের স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাব নেতৃত্ব বিকাশে সমস্যা সৃষ্টি করবে বলে আমি মনে করি।
নেতার নির্দেশ দানের পদ্ধতিই নেতৃত্ব। নেতৃত্ব সহজে বিকশিত করতে নেতার ইতিবাচক মনোভাব থাকতে হয়। স্বৈরতান্ত্রিক নেতৃত্বে নেতার অতিরিক্ত ক্ষমতা প্রদর্শনের মনোভাব নেতৃত্বকে বাধাগ্রস্ত করে।
উদ্দীপকে জনাব রিপন অর্থ বিভাগের ব্যবস্থাপক। তার মধ্যে ক্ষমতা প্রদর্শনের মানসিকতা রয়েছে। তিনি অধস্তনদের প্রয়োজনাতিরিক্ত নির্দেশ দান করেন। তিনি ভয়-ভীতির মাধ্যমে কাজ আদায় করেন। প্রয়োজন ছাড়াই তিনি অধস্তনদের কাজে হস্তক্ষেপ করেন। তিনি বিভাগীয় প্রধান হিসেবে তার অধীনস্থ কর্মীদেরকে সবসময় জোরজবরদস্তি করেন। এতে কর্মীদের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে। কেউ কেউ বিদ্রোহ করতে পারে। এ ধরনের ক্ষমতা প্রদর্শনের মনোভাব জনাব রিপনকে আদর্শ নেতা হতে বাধাগ্রস্থ করবে।
ঘ উদ্দীপকের জনাব সাকিব গণতান্ত্রিক এবং জনাব রিপন স্বৈরতান্ত্রিক নেতৃত্ব অনুসরণ করেন।
কর্মীদের নির্দেশদানের মাধ্যমে লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হলো নেতৃত্ব। নেতৃত্ব স্থান, কাল, পাত্রভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে। নেতৃত্বের অন্যতম দুটি ধরন হলো গণতান্ত্রিক ও স্বৈরতান্ত্রিক নেতৃত্ব।
উদ্দীপকে সাকিব সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে কর্মীদের মতামত গ্রহণ করেন। সবচেয়ে বেশি কর্মী যে বিষয়ে মতামত প্রদান করেন তিনি সেই বিষয়টি গ্রহণ করেন। তিনি ক্ষমতা নিজের কাছে কেন্দ্রীভ‚ত না রেখে কর্মীদের মাঝেও হস্তান্তর করেন। ফলে কর্মীরাও সন্তুষ্ট থাকে। অন্যদিকে জনাব রিপন এককভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। তিনি গৃহীত সিদ্ধান্ত কর্মীদের ওপর চাপিয়ে দেন এবং জোর করে কাজ আদায় করেন।
জনাব সাকিবের নেতৃত্ব একটি উৎকৃষ্ট নেতৃত্ব। এতে সিদ্ধান্তের মান ভালো হয় এবং সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা যায়। কিন্তু জনাব রিপনের নেতৃত্বে কর্মীদের কোনো ভ‚মিকা থাকে না। রিপনই সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। তাই বলা যায়, জনাব সাকিব ও জনাব রিপনের নেতৃত্বের ধরন সম্পূর্ন বিপরীতমুখী।

মমমপ্রশ্ন১২ মি. লিখন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রধান। তিনি প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের জন্য কর্মীদের সবরকমের সহযোগিতা করেন। এমনকি তাদের অভাব-অভিযোগ মনোযোগ সহকারে শোনেন এবং এর উপযুক্ত সমাধান করেন। ফলে কর্মীরাও তার কর্মকাণ্ডে বেশ খুশি এবং প্রতিষ্ঠানের জন্য সর্বোচ্চ সামর্থ্য দিয়ে কাজ করে। সর্বোপরি আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব, তী² বুদ্ধিমত্তা, সততা এবং দক্ষতার কারণে মি. লিখনের নেতৃত্বে তার প্রতিষ্ঠানের প্রভ‚ত অগ্রগতি হয়েছে। [রা. বো. ১৬]
ক. নেতৃত্ব কী? ১
খ. ‘গণতান্ত্রিক নেতৃত্বই উত্তম’ Ñ কেন? ২
গ. উদ্দীপকে মি. লিখনের কর্মকাণ্ডে কোন ধরনের নেতৃত্বের প্রকাশ ঘটেছে? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. উদ্দীপকে বর্ণিত প্রতিষ্ঠানটিতে একজন নেতার ভ‚মিকার সপক্ষে তোমার মতামত দাও। ৪
১২ নং প্রশ্নের উত্তর
ক অধীনস্থদের প্রভাবিত করে তাদের সর্বাধিক সামর্থ্যকে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনে কাজে লাগানোর কৌশলকে নেতৃত্ব বলে।
খ যে নেতৃত্বে নেতা অধস্তনদের সাথে আলাপ-আলোচনা, পরামর্শ করে কার্য পরিচালনা করেন তাকে গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব বলে।
এক্ষেত্রে নেতা সব ক্ষমতা নিজের হাতে কেন্দ্রীভ‚ত না রেখে প্রয়োজনীয় কর্তৃত্ব অধীনস্থদের নিকট অর্পণ করেন। তাছাড়া সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে অধীনস্থদের সঙ্গে সলা-পরামর্শ করেন। যার কারণে নেতার প্রতি কর্মীদের ইতিবাচক ধারণা সৃষ্টি হয়। ফলে এরূপ নেতৃত্বের প্রতি অধীনস্থরা সন্তুষ্ট থাকেন। এতে কর্মীদের কাজের প্রতি মনোবল বৃদ্ধি পায় এবং তারা সর্বোচ্চ সামর্থ্য দিয়ে লক্ষ্য অর্জনের চেষ্টা করেন। এজন্যই বলা হয়, গণতান্ত্রিক নেতৃত্বই উত্তম।
গ উদ্দীপকে মি. লিখনের কর্মকাণ্ডে পিতৃসুলভ নেতৃত্বের প্রকাশ ঘটেছে।
পিতৃসুলভ নেতৃত্বে নেতা অধস্তনদের সাথে সদয় ব্যবহার করেন এবং শ্রদ্ধাবোধ জাগ্রত করে কাজ আদায়ের চেষ্টা করেন। নেতা এক্ষেত্রে কর্মীদের অভাব অভিযোগের প্রতি মনোনিবেশ করেন। øেহ ও মমতা প্রদানের মাধ্যমে কাজ আদায় করেন।
উদ্দীপকে মি. লিখন প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের জন্য কর্মীদের সবরকম সহযোগিতা করেন। কর্মীদের অভাব অভিযোগ মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং এর উপযুক্ত সমাধান দেন। যার ফলে কর্মীদের মনে কাজ করার আগ্রহ সৃষ্টি হয়।কর্মীরাও মি. লিখনের প্রতি সন্তুষ্ট থাকে। মি. লিখন পিতার ন্যায় কর্মীদের প্রতি সদয় ও তী² বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে কার্য সমাধান করেন। বৈশিষ্ট্যানুযায়ী যা পিতৃসুলভ নেতৃত্বের অন্তর্গত। তাই বলা যায়, মি. লিখন পিতৃসুলভ নেতৃত্বের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করছেন।
ঘ উদ্দীপকে বর্ণিত প্রতিষ্ঠানটির অগ্রগতিতে একজন নেতা গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করছেন।
নেতৃত্ব হলো অধীনস্থদেরকে লক্ষ্যাভিমুখে এগিয়ে নেওয়ার একটা প্রচেষ্টা। একটি প্রতিষ্ঠানের গতিশীল নেতৃত্বের বিষয়টি নির্ভর করে একজন আদর্শ নেতার ওপর। একজন নেতা তার ব্যক্তিত্ব, দক্ষতা, বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য অর্জন করেন।
উদ্দীপকে মি. লিখন প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের জন্য কর্মীদের সবরকমের সহযোগিতা করেন। এতে কর্মীরা যেমন উদ্দীপ্ত হন, তেমনি কাজে মনোযোগীও হন। আবার মি. লিখন আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব, তী² বুদ্ধিমত্তা, সততা ও দক্ষতার সাথে কাজ সম্পাদন করেন। যার ফলে অতি সহজে এবং স্বল্পসময়ে কাজ সম্পন্ন হয়।
মি. লিখন তার মনস্তাত্তি¡ক জ্ঞান ও শক্তি সামর্থ্যরে মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন। ফলে দক্ষ নেতৃত্বের মাধ্যমে কাজের অগ্রগতি বৃদ্ধি পায়। একই সাথে আদর্শ নেতৃত্বের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানকে লক্ষ্যের দিকে পরিচালিত করেন। তাই বলা যায়, মি. লিখন তার দক্ষতা, সৃজনশীলতা ও সততার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করায় কাজের অগ্রগতি সাধিত হয়েছে।

মমমপ্রশ্ন১৩ বরেন্দ্র ইন্ডাস্ট্রিজ লি.-এর প্রোডাকশন ডিরেক্টর সানজিদা তাবাস্সুম প্রশাসক হিসেবে তার কর্মীদের কাছে এক অদ্ভুত চরিত্র। ভুলের কারণে তিনি তাদের বিন্দুমাত্র ক্ষমা করেন না। ভয়-ভীতি, বেতন কাটা, সাসপেন্ড থেকে শুরু করে কর্মীদের ছাঁটাই পর্যন্ত করেন তিনি। এজন্য কর্মীরা ভয় পেলেও শ্রদ্ধাও করেন। কারণ প্রত্যেক কর্মীকে তিনি ব্যক্তিগতভাবে চেনেন, জানেন, খোঁজ-খবর রাখেন, বিপদে-আপদে তাদের পাশে দাঁড়ান। সাহায্য-সহযোগিতা করেন। কঠোরতা ও কোমলতার তিনি এক অদ্ভুত সংমিশ্রণ। [দি. বো. ১৬]
ক. নির্দেশনা কী? ১
খ. “ব্যবস্থাপনা সর্বজনীন”Ñ ব্যাখ্যা করো। ২
গ. নেতৃত্বের বিচারে সানজিদা তাবাস্সুম কোন ধরনের নেতা? বিশ্লেষণ করো। ৩
ঘ. সানজিদা তাবাস্সুমের মধ্যে নেতৃত্বের কোন কোন গুণাবলির বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে? উদ্দীপকের আলোকে মূল্যায়ন করো। ৪
১৩ নং প্রশ্নের উত্তর
ক লক্ষ্য অর্জনে অধস্তনদের আদেশ, উপদেশ ও পরামর্শ প্রদান এবং তত্ত¡াবধান কার্যকে নির্দেশনা বলে।
খ ব্যবস্থাপনার সর্বজনীনতা বলতে সর্বত্র, সব ক্ষেত্রে, সকলের দ্বারা স্বীকৃত ব্যবস্থাপনা জ্ঞানের আবশ্যকতা ও প্রয়োগ যোগ্যতাকে বোঝায়।
পরিবার, রাষ্ট্র এবং ব্যবসায় সংগঠনের সব ক্ষেত্রে ব্যবস্থাপনার কার্যাবলি (পরিকল্পনা প্রণয়ন, সংগঠিতকরণ, নির্দেশনা, প্রেষণা ও নিয়ন্ত্রণ) প্রয়োগ করা হয়। স্থানীয় পরিবেশ-পরিস্থিতি, সামাজিক রীতি-নীতি ইত্যাদি কারণে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি ভিন্ন হতে পারে। তবে ব্যবস্থাপনার কার্যাবলি প্রয়োগের ক্ষেত্রে তেমন কোনো পার্থক্য পরিলক্ষিত হয় না। তাই ব্যবস্থাপনাকে সর্বজনীন বলা হয়।
গ নেতৃত্বের বিচারে উদ্দীপকের সানজিদা তাবাস্সুম একজন পিতৃসুলভ নেতা।
পিতৃসুলভ নেতা অধস্তনদের ওপর অতিমাত্রায় কর্তৃত্বশালী হলেও অধস্তনদের সাথে সদয় ব্যবহার করেন। কর্মীদের মধ্যে শ্রদ্ধাবোধ জাগ্রত করে কাজ আদায়ের চেষ্টা করেন। এ ধরনের নেতৃত্বের প্রতি কর্মীরা সবসময় সন্তুষ্ট থাকে এবং কাজের প্রতি আগ্রহী হয়।
উদ্দীপকের বরেন্দ্র ইন্ডাস্ট্রিজ লি.-এর প্রোডাকশন ডিরেক্টর সানজিদা তাবাস্সুম প্রশাসক হিসেবে কঠোরতা ও কোমলতার এক অদ্ভ“ত সংমিশ্রণ ঘটিয়েছেন। তিনি আইন-কানুন, নিয়ম-শৃঙ্খলায় ব্যাঘাত ঘটলে কর্মীদের ন্যূনতম ছাড় দেন না। ভয়ভীতি দেখান, বেতন কাটেন, সাসপেন্ড-এর মতো কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। কিন্তু কর্মীরা ভয় পেলেও তাকে শ্রদ্ধা করেন। কারণ তিনি প্রত্যেক কর্মীকে ব্যক্তিগতভাবে চিনেন, খোঁজখবর রাখেন, বিপদে-আপদে পাশে দাঁড়ান, সাহায্য-সহযোগিতা করেন। এভাবে সানজিদা তাবাস্সুম তার কর্মীদের নিকট অভিভাবকের ভ‚মিকায় অবতীর্ণ হন। সুতরাং, সানজিদা তাবাস্সুমের কার্যাবলি পিতৃসুলভ নেতৃত্বের অন্তর্গত।
ঘ উদ্দীপকে সানজিদা তাবাস্সুম নেতৃত্বের মধ্যে দৃঢ়তা, প্রভাবিত করার ক্ষমতা, সহানুভ‚তিশীল প্রভৃতি গুণের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।
প্রতিষ্ঠানের গতিশীল নেতৃত্বের বিষয়টি নির্ভর করে আদর্শ নেতার ওপর। একজন আদর্শ বা সফল নেতা হতে হলে একজন ব্যক্তিকে স্বতন্ত্রধর্মী গুণের অধিকারী হতে হয়।
সানদিজা তাবাস্সুম প্রশাসক হিসেবে কর্মীদের কাছে এক অদ্ভ“ত চরিত্র। ভুলের কারণে তিনি বিন্দুমাত্র ক্ষমা করেন না। কিন্তু অধস্তনরা ভয় পেলেও তাকে শ্রদ্ধা করেন। কারণ তিনি সবার খোঁজ-খবর রাখেন, বিপদে-আপদে সাহায্য-সহযোগিতা করেন।
সানজিদা তাবাস্সুম কর্মীদের ভুলের কারণে ক্ষমা না করে দায়িত্বের প্রতি দৃঢ়তার পরিচয় দিয়েছেন। আবার কর্মীদের প্রভাবিত করার মাধ্যমে শ্রদ্ধাও অর্জন করেছেন। কর্মীদের খোঁজ-খবর রাখা, বিপদে-আপদে এগিয়ে আসা, সাহায্য-সহযোগিতার মাধ্যমে তিনি তাদের প্রতি সহানুভ‚তিশীল আচরণ করেছেন।
মমমপ্রশ্ন১৪ জনাব আসাদ ও জনাব আশরাফ দুইটি প্রতিষ্ঠানের সাধারণ ব্যবস্থাপক। জনাব আসাদ সব সিদ্ধান্ত একাই গ্রহণ করেন এবং কঠোর শাসনের মাধ্যমে কর্মীদের কাজ করতে বাধ্য করেন। এতে কর্মীদের মনোবল ও কার্যদক্ষতা হ্রাস পায়। পরিণামে প্রতিষ্ঠান আশানুরূপ সাফল্য অর্জন করতে পারে না। অন্যদিকে জনাব আশরাফ পরিকল্পনা প্রণয়ন ও নির্দেশ প্রদানের পূর্বে কর্মীদের সাথে আলাপ-আলোচনা করেন। এতে কর্মীরা সন্তুষ্ট থাকে। তাদের মনোবল ও কার্যদক্ষতাও বেড়ে যায়। ফলে জনাব আশরাফ প্রতিষ্ঠানিক লক্ষ্য অর্জনে সফল হন। [কু. বো. ১৬]
অ ক. আনুষ্ঠানিক নেতৃত্ব কী? ১
ই খ. যোগাযোগ কীভাবে ব্যবস্থাপনার দক্ষতা বাড়াতে পারে? ২
অ গ. উদ্দীপকে উলি­খিত জনাব আশরাফের নির্দেশনার ধরন কী? ব্যাখ্যা করো। ৩
অ ঘ. জনাব আসাদের নেতৃত্বের ধরনটি তুমি কি সমর্থন করো? ধরন উলে­খপূর্বক যুক্তিসহ ব্যাখ্যা করো। ৪
১৪ নং প্রশ্নের উত্তর অ
ক যে নেতৃত্বে প্রাতিষ্ঠানিক নিয়ম-নীতি অনুসারে অধস্তনদের পরিচালিত করা হয় তাকে আনুষ্ঠানিক নেতৃত্ব বলে।
খ প্রতিষ্ঠানের ভিতর ও বাইরের বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে ব্যবস্থাপক কর্তৃক তথ্য, সংবাদ ও ভাবের বিনিময়ের মাধ্যমে কার্যকর ও ফলপ্রসূ যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলাকে তার যোগাযোগ দক্ষতা বলে।
এটির দ্বারা উচ্চ স্তর ও নিæ স্তরের কর্মীদের সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটে। এর ফলে ব্যবস্থাপক কার্যক্ষেত্রে সহজেই কার্যকর ভ‚মিকা রাখতে পারেন। সুষ্ঠু ও কার্যকর যোগাযোগ দক্ষতার দ্বারা সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জন সহজ হয়। আর এটি একটি বিশেষ দক্ষতা, যা একজন ব্যবস্থাপকের প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে সবসময় প্রয়োজন হয়।
গ উদ্দীপকের জনাব আশরাফের নির্দেশনার ধরনটি হলো পরামর্শমূলক নির্দেশনা।
পরামর্শমূলক নির্দেশনায় অধস্তনদের সাথে পরামর্শ করে তার ভিত্তিতে নির্দেশনার বিষয়বস্তু ঠিক করা হয় । অংশগ্রহণমূলক ব্যবস্থাপনার যে ধারণা আধুনিককালে গড়ে ওঠেছে তার একটা অপরিহার্য উপাদান হলো পরামর্শমূলক নির্দেশনা।
জনাব আশরাফ পরিকল্পনা প্রণয়ন ও নির্দেশ প্রদানের পূর্বে কর্মীদের সাথে আলাপ-আলোচনা করেন। এতে কর্মীরা সন্তুষ্ট থাকে। তাদের মনোবল ও কর্মদক্ষতাও বেড়ে যায়। ফলে জনাব আশরাফ প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্য অর্জনে সফল হন। এসব বৈশিষ্ট্য পরামর্শমূলক নির্দেশনার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। সুতরাং মি. আশরাফ নিঃসন্দেহে পরামর্শমূলক নির্দেশনা পদ্ধতি অনুসরণ করেন।
ঘ উদ্দীপকের জনাব আসাদের নেতৃত্বের ধরন হলো স্বৈরতান্ত্রিক নেতৃত্ব, যা যুক্তিসঙ্গতভাবে সমর্থনযোগ্য নয়।
এ নেতৃত্বে নেতা অধস্তনদের সাথে কোনো পরামর্শ করেন না এবং কঠোর শাসনের মাধ্যমে কাজ করতে বাধ্য করেন। এক্ষেত্রে নেতা সব ক্ষমতা নিজের কাছে কুক্ষিগত করে রাখেন এবং নিজ ইচ্ছামতো সিদ্ধান্ত প্রদান করেন।
উদ্দীপকে জনাব আসাদ একটি প্রতিষ্ঠানের সাধারণ ব্যবস্থাপক। তিনি সব সিদ্ধান্ত একাই গ্রহণ করেন এবং কঠোর শাসনের মাধ্যমে কর্মীদের কাজ করতে বাধ্য করেন। এ ধরনের স্বৈরতান্ত্রিক নেতৃত্বে কর্মীদের মনোবল ও কার্যদক্ষতা হ্রাস পায়।
জনাব আসাদের অনুসৃত স্বৈরাচারী বা স্বৈরতান্ত্রিক নেতৃত্ব কখনোই প্রতিষ্ঠানের জন্য কল্যাণকর হবে না। এক্ষেত্রে কর্মীরা সর্বদাই ভয়ভীতির মধ্যে থাকে। ফলে তারা আন্তরিকতার সাথে সুষ্ঠুভাবে কাজ করতে পারে না। তাই প্রতিষ্ঠানের সফলতার জন্য জনাব আসাদের অনুসৃত স্বৈরতান্ত্রিক নেতৃত্ব মোটেও সমর্থনযোগ্য নয়।
মমমপ্রশ্ন১৫ ফাহিম এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব অরূপ এককভাবে প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। অধীনস্থদের মতামত আমলে নেন না এবং জোরপূর্বক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেন। ফার্মটির মুনাফাও নিম্নমুখী। এরূপ পরিস্থিতিতে ফাহিম এন্টারপ্রাইজের কর্মীরা চাকরি ত্যাগ করে পার্শ্ববর্তী এনাম এন্টারপ্রাইজে যোগদানের কথা ভাবছে যেখানে সিদ্ধান্ত গ্রহণে কর্মীদের মতামত ও অংশগ্রহণকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। ফলে প্রতিষ্ঠানটির উন্নয়ন ও মুনাফা বৃদ্ধি পাচ্ছে। [চ. বো. ১৬]
অ ক. নেতৃত্ব কী? ১
অ খ. একজন নেতার দূরদর্শিতা থাকতে হয় কেন? ২
অ গ. ফাহিম এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কর্মীদের ওপর কোন ধরনের নেতৃত্ব প্রয়োগ করে থাকেন? ব্যাখ্যা করো। ৩
অ ঘ. এনাম এন্টারপ্রাইজের সিদ্ধান্ত গ্রহণে কর্মীদের মতামতের গুরুত্ব দেয়ায় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ও মুনাফা বৃদ্ধি পেয়েছেÑ মূল্যায়ন করো। ৪
১৫ নং প্রশ্নের উত্তর অ
ক অধীনস্থদের প্রভাবিত করে তাদের সর্বাধিক সামর্থ্যকে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনে কাজে লাগানোর কৌশলকে নেতৃত্ব বলে।
মখ ভবিষ্যৎ সম্পর্কে ধারণা করার ক্ষমতা বা কল্পনাশক্তি থাকাই হলো নেতার দূরদর্শিতা।
ভবিষ্যৎ অনুমান করতে পারলে একজন নেতা সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। এক্ষেত্রে নেতা সম্ভাব্য করণীয় আগে থেকেই নির্ধারণ করে রাখতে পারেন। ফলে তিনি সহজেই প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারেন। এজন্য একজন নেতাকে দূরদর্শিতার অধিকারী হতে হয়।
গ উদ্দীপকের ফাহিম এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কর্মীদের ওপর স্বৈরতান্ত্রিক নেতৃত্ব প্রয়োগ করে থাকেন।
এ নেতৃত্ব ব্যবস্থায় নেতা সকল ক্ষমতা নিজের কাছে কুক্ষিগত করে রাখেন এবং নিজের ইচ্ছেমতো এককভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন তা-ই স্বৈরতান্ত্রিক নেতৃত্ব। এক্ষেত্রে নেতা কর্মীদেরকে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও শাস্তি প্রদানের মাধ্যমে তাদের থেকে কাজ আদায়ের চেষ্টা করেন।
ফাহিম এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব অরূপ এককভাবে প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। অধীনস্থদের মতামত তিনি গ্রহণ করেন না। তিনি জোরপূর্বক অধীনস্থদের কাছ থেকে কাজ আদায় করেন। ভয়ভীতি ও শাস্তি প্রদান করে অধীনস্থদের লক্ষ্যের দিকে ধাবিত করেন। সুতরাং ফাহিম এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কার্যাবলিতে স্বৈরতান্ত্রিক নেতৃত্বের বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান থাকায় তিনি স্বৈরতান্ত্রিক নেতৃত্ব প্রয়োগ করে থাকেন।
ঘ উদ্দীপকের এনাম এন্টারপ্রাইজের সিদ্ধান্ত গ্রহণে গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব প্রয়োগ করায় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ও মুনাফা বৃদ্ধি পেয়েছে।
এ নেতৃত্ব ব্যবস্থায় নেতা সব ক্ষমতা নিজের হাতে কেন্দ্রীভ‚ত না রেখে প্রয়োজনীয় কর্তৃত্ব অধীনস্থদের নিকট অর্পণ করেন তা-ই গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব। এক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণে কর্মীদের মতামত ও পরামর্শের গুরুত্ব দেওয়া হয়। ফলে তারা সন্তুষ্ট থাকে ও কাজের মনোবল বৃদ্ধি পায়।
এনাম এন্টারপ্রাইজে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে কর্মীদের মতামত ও অংশগ্রহণকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠানে তারা সন্তুষ্টির সাথে কাজ করতে পারে ও কাজের প্রতি তাদের আগ্রহ বৃদ্ধি পায়, যা গণতান্ত্রিক নেতৃত্বের বহিঃপ্রকাশ।
উদ্দীপক এনাম এন্টারপ্রাইজে গণতান্ত্রিক নেতৃত্বের ফলে তাদের কাজে স্বতঃস্ফ‚র্ত অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পাবে। কেননা তারা নিজেরাই পরামর্শের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। তারা প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনে সর্বাÍক প্রচেষ্টা চালায়। ফলে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্যার্জন ও সমৃদ্ধি দিন দিন বৃদ্ধি পায়। এ থেকে বোঝা যায়, এনাম এন্টারপ্রাইজের সিদ্ধান্ত গ্রহণে কর্মীদের মতামতের গুরুত্ব দেওয়ায় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ও মুনাফা বৃদ্ধি পেয়েছে।
মমমপ্রশ্ন১৬ মি. জহির একটি বৃহদায়তন কোম্পানির উৎপাদন ব্যবস্থাপক। তিনি কর্মীদের নির্দিষ্ট সময়ের সব সময়ই কাজ বেশি করতে বাধ্য করেন। সেজন্য কর্মীদের কোনো সুযোগ-সুবিধা দেন না। কর্মীদের ভালো-মন্দ বিবেচনা না করে উৎপাদন বৃদ্ধির ওপরই গুরুত্ব দেন। কর্মীরা এ অবস্থা থেকে উত্তরণ চায়। [সি. বো. ১৬]
অ ক. নেতৃত্ব কী? ১
অ খ. কর্মীকেন্দ্রিক নেতৃত্বের ব্যাখ্যা দাও। ২
অ গ. উদ্দীপকে মি. জহির কোন ধরনের নেতৃত্ব অনুসরণ করেছেন? ব্যাখ্যা করো। ৩
অ ঘ. অবস্থা উত্তরণের জন্য কোন ধরনের নেতৃত্ব উপযোগী বলে তুমি মনে করো? ৪
১৬ নং প্রশ্নের উত্তর অ
ক অধীনস্থদের প্রভাবিত করে তাদের সর্বাধিক সামর্থ্যকে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনে কাজে লাগানোর কৌশলকে নেতৃত্ব বলে।
মখ উৎপাদন বৃদ্ধিতে কর্মীদের ভালো-মন্দ বিশেষ বিবেচনায় নিয়ে যে নেতৃত্ব কার্যক্রম পরিচালিত হয় তাকে কর্মীকেন্দ্রিক নেতৃত্ব বলে।
এরূপ নেতৃত্ব ধারণায় নেতা প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্যার্জনে কর্মীদের নিকট থেকে উত্তম সহায়তা লাভের ওপর অধিক গুরুত্ব প্রদান করে। কর্মকেন্দ্রিক নেতৃত্ব ধারণা অপেক্ষা এরূপ ধারণা আধুনিক বলে বিবেচিত হয়ে থাকে।
গ উদ্দীপকের মি. জহির কর্মকেন্দ্রিক নেতৃত্ব অনুসরণ করেছেন।
এ নেতৃত্বে নেতা কর্মীর চেয়ে কাজকে বেশি প্রাধান্য দেন তা-ই কর্মকেন্দ্রিক নেতৃত্ব। এ নেতৃত্ব ব্যবস্থায় কর্মীদের কাছ থেকে কাজ আদায়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় এজন্য নেতা সব সময় কর্মীদের কাজে ব্যস্ত রেখে সর্বোচ্চ মাত্রায় কার্যসম্পাদনের চেষ্টা চালায়।
মি. জহির একটি বৃহদায়তন কোম্পানির একজন উৎপাদন ব্যবস্থাপক। তিনি কর্মীদের নির্দিষ্ট সময়ের চেয়ে কাজ বেশি করাতে বাধ্য করেন। তিনি কর্মীদের ভালো-মন্দ, সুযোগ-সুবিধা বিবেচনা করেন না। তিনি শুধু প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব দেন, বৈশিষ্ট্যানুযায়ী যা কর্মকেন্দ্রিক নেতৃত্বের সাথে মিলে যায়। সুতরাং মি. জহিরের কার্যাবলি দ্বারা এটা প্রতীয়মান তিনি কর্মকেন্দ্রিক নেতৃত্ব অনুসরণ করেছেন।
ঘ উদ্দীপকে অবস্থা উত্তরণের জন্য কর্মীকেন্দ্রিক নেতৃত্ব ব্যবস্থা উপযোগী।
যে নেতৃত্ব ব্যবস্থায় নেতা কাজের পাশাপাশি কর্মীদের মানসিক দিকটি সর্বপ্রথম বিবেচনা করেন এবং সহানুভ‚তির সাথে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেন তা-ই কর্মীকেন্দ্রিক নেতৃত্ব। এ ধরনের নেতৃত্বে কর্মের চেয়ে কর্মীকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়।
উৎপাদন ব্যবস্থাপক মি. জহির নির্দিষ্ট সময়ের চেয়ে বেশি কাজ করাতে বাধ্য করেন। তিনি উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কর্মীদের সুযোগ-সুবিধা বিবেচনা করেন না। মি. জহিরের নেতৃত্ব ব্যবস্থায় কাজ আদায় হলেও মাঝে মধ্যে কর্মীদের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হবে।
মি. জহিরের ব্যবসায়ে কর্মকেন্দ্রিক নেতৃত্বের চাইতে কর্মীকেন্দ্রিক নেতৃত্ব বেশি উপযোগ হবে। কেননা এতে নেতা কর্মীদের ভালো-মন্দ বিবেচনায় এনে সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধির প্রচেষ্টা চালান। মি. জহির যদি কর্মীকেন্দ্রিক নেতৃত্ব অনুসরণ করেন তবে কর্মীরা মনোবল নিয়ে সন্তুষ্টির সাথে কাজ করবে, যা উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। সুতরাং উদ্দীপকের উক্ত অবস্থা উত্তরণের জন্য কর্মীকেন্দ্রিক নেতৃত্ব তুলনামূলকভাবে উপযোগী।

 

Leave a Reply